সংবাদ শিরোনাম
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরকে সম্প্রসারিত করে পরিকল্পিত নগরায়ন করা হবে: গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরী এমপি কমলগঞ্জে শমশেরনগরে রেলপথ ঘেষে জমে উঠে অবৈধ পশুর হাট; দুর্ঘটনার আশঙ্কা নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নের লক্ষ্যে বাংলালিংক ও হুয়াওয়ের চুক্তি ডেঙ্গু ঠেকাতে সোমবার থেকে মাঠে নামছে ডিএনসিসি অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে আটকে পড়া ১৩ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন শেষ হলো সাহিত্য একাডেমির ৭ দিনব্যাপী “বৈশাখী উৎসব।। সচিব খলিল আহমদকে বৈশাখী উৎসব সম্মাননা প্রদান সরাইলে উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বিএনপির প্রার্থী তপু লস্কর নবীনগরে তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষে একজন নিহত ও আহত-৩।। আটক-৪ কমলগঞ্জে নিরাপদ সড়ক চাই’র আইডি কার্ড বিতরণ ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত সাহিত্য একাডেমির বৈশাখী উৎসবের ৫ম দিনে নির্বাচিত গ্রন্থের প্রকাশনা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত

ঈদের দিনে রাফিয়াদের তৃপ্তি।। ধনী-গরীব ভেদাভেদহীন মানুষের ভীর; আল আমীন শাহীন

ঈদের দিনে রাফিয়াদের তৃপ্তি।। ধনী-গরীব ভেদাভেদহীন মানুষের ভীর; আল আমীন শাহীন

রাফিয়া খাতুন, পয়ষট্টি বছর বয়স। ঈদুল আযহার দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেল স্টেশনে দেখা। হাতে প্লাস্টিকের বস্তায় কাঁচা মাংস। অপেক্ষা করছেন ট্রেনের। হঠাৎ চোখে চোখ পড়ল। খুশীর ঝিলিক চোখে মুখে। এগিয়ে গেলাম কাছে, কিছু বলবেন। উত্তরে বল্লেন , দোয়া করি বাবা, তোমাদের। বল্লাম, কেন ? খুলে বল্লেন, তাঁর ঈদের পুরো দিনের ঘটনা। ঈদের পূর্ব রাতে ট্রেনে চড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এসেছেন। প্রতিবছর আসেন। কোরবানীর পশু জবাইয়ের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি ঘুরে এক দুই টুকরা করে মাংস সংগ্রহ করেন। এতে ১০/১২ কেজি মাংস সংগ্রহ হয়। এবারও তেমনি হয়েছে। আগে সংগ্রহ করা মাংস বিক্রি করে দিতেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে ঈদের দিন বিকালে মাংসের বাজার বসে। রাফিয়া বেগমের মতো এমন অনেকে তাদের সংগ্রহ করা মাংস এ বাজারে বিক্রি করেন। নিম্ন আয়ের মানুষ যারা, পশু কোরবানী দিতে সামর্থবান নয়, তেমন অনেকেই এ বাজারের ক্রেতা। রাফিয়া বেগম এবার দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বল্লেন , একসময় তার স্বামী সংসার সবই ছিল, নিজেরাই কোরবানী দিতেন। এখন সামর্থ নেই। তিনি বল্লেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাংস চাওয়া লজ্জার, কিন্তু কোরবানীর মাংসের প্রতি অন্য রকম আগ্রহ। তিনি বলেন, আগের মতো অনেকে মাংস দিতে চায় না। গেট বন্ধ করে রাখে , ফিরিয়ে দেয়, বাড়ি কোথায় জিজ্ঞেস করে, চেনা হলে দেয় ,নতুবা ধমক দিয়ে অনেকে বিদায় করে দেয়। মাংস জোগার করতে গিয়ে নানা মশলাযুক্ত রান্নার গন্ধ পাই, ঠিক দুপুরে খাবার সময় এ গন্ধ লোভ সৃষ্টি করে। কিন্তু মানুষ অনেকে তো খালি মাংসই দিতে চায়না, রান্না করা খাবার দূরের কথা। এবার একটু হাসি দিয়ে বলেন, যাই হোক, রেল স্টেশনে এসে এই যে রান্না করা মাংস খাওয়ার সুযোগ পাই, সেটা বড় সৌভাগ্যের ,বড় তৃপ্তির।পরে রাফিয়া মাংসের পুটলি দেখিয়ে বল্ল , আগে মাংসগুলো গন্ধ হয়ে যেত ,এখন সেদ্ধ করে দেয়ার জন্য মাংস নষ্ট হয়না। সব মিলিয়ে রাফিয়ার চোখে মুখে প্রশান্তির ছাপ। শেষে বল্লেন, দুহাত তুলে আল্লাহর কাছে দোয়া করি যারা এই আয়োজন করেছে। হঠাৎ ট্রেনের হুইসেল, মাংসের পুটলি হাতে চলে গেলেন রাফিয়া বেগম। এমন একজন দুজন রাফিয়া নয় অনেকের মাঝেই এই খুশী সৃষ্টি করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার “জীবন জীবনের জন্য” সংগঠন। গত ১২ বৎসর যাবৎ তারা ঈদুল আযহার দিনে “ঈদের খাবার হয় যেন সবার” এই শ্লোগানে দরিদ্র জনগোষ্টীর জন্য লঙ্গরখানা চালু করেছে। পরিকল্পনাকারী দক্ষিণ মৌড়াইল গ্রামের আয়কর উপদেষ্টা কাজী তারেক মাহমুদ। তার বন্ধু ও পরিচিত জনদের সমন্বয়ে রেল স্টেশনে দরিদ্র মানুষের জন্য ঈদের দিনে শব্জি খিচুরী মাংস রান্না করা হয়। ১২/ ১৩ ডেকসিতে এই রান্না হয়। এছাড়া দুটি ডেকছিতে হলুদ লবণ মিশ্রিত সেদ্ধ পানি থাকে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে সংগ্রহ করা মাংস দড়ি বেধে নাম লিখে সেদ্ধ করে দেয়া হয়। এতে মাংস নষ্ট হয়না। এসব কাজে সহায়তা করে , যারা উপকার ভোগী তারাই। কয়েক হাজার মানুষ ঈদের দিন দুপুর থেকে রাত ২ টা আড়াইটা পর্যন্ত এ লঙ্গর খানায় ভীর করে। কাজী তারেকের বন্ধ্থরা সহ এলাকার স্বেচ্ছাসেবীরা এখানে মানুষের সেবা করতে স্বেচ্ছাশ্রম দেন, নানাভাবে সহযোগিতা করেন। অনেক গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এই আয়োজন উৎসাহ ভরে দেখতে আসেন। স্টেশনের দক্ষিণ দিকে বৌ-বাজার জমজমাট হয় ধনী দরিদ্র ভেদাভেদহীন মানুষের ভীরে।
লেখকঃ আল আমিন শাহীন
সম্পাদক- নতুন মাত্রা।

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com