এস এস সি পরীক্ষা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইডিয়াল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল ও কলেজ এর অধ্যক্ষ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সোপানুল ইসলাম বলেন, আসছে এস এস সি পরীক্ষা। সকলেরই নির্বাচনী পরীক্ষা ও ফরম ফিলাপও শেষ। ঠিক এমনি সময়ে পরীক্ষার্থীদের গুরুত্ব দিয়ে পড়াশুনা করা উচিত। এই সময়টা তাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। এই সময়টা আর মাত্র দুই মাস আছে। তারপরই তাদের এসএসি পরীক্ষা।
তিনি পরীক্ষার্থীদের অনুরোধ করে বলেন, এই মুহূর্তের সময়টা একজন পরীক্ষার্থীর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ । এখন যা এক ঘণ্টার পড়া আগে তা দুই ঘণ্টা কিংবা এর চেয়ে বেশি এক মাসের সময়ের সমান ছিলো। এই সময় যা পড়বে তা খুব দ্রুত মনে থাকবে। তাই এই সময়ের একটি মূহুর্ত যেন নষ্ট না করে। প্রতিদিন পরতে হবে। সকল শিক্ষার্থীকে একটি রুটিন মাফিক পড়তে হবে।
রুটিন করার সময় যে বিষয়টি মনোযোগ দিতে হবে সেটি হলো সারাদিনে কোন সময়টা পড়তে বেশি ভালো লাগে, কখন ঘুমুতে যায়, কখন ঘুম থেকে উঠে, তার মধ্যে সমন্বয় করে যে সময় টা পড়তে বেশি ভালো লাগে ঐ সময়টাতে একটি কঠিন সাবজেক্ট পড়ার জন্য বেছে নিবে। আবার অধিকাংশ সময় আমরা লক্ষ্য করি যে, মাগরিবের নামাজের পরে অর্থাৎ সন্ধ্যার পর পর সময়টা অনেকের কাছে পড়তে ভালো লাগে। কারণ ঐ সময়টায় ঘুম ঘুম ভাবটা থাকে না এবং ক্লান্তিও ততোটা থাকে না। তখন শিক্ষার্থী মনোযোগ দিয়ে পড়তে পারে।
এস এস সি পরীক্ষা
আবার কারো বেলায় ঘুম থেকে উঠে অর্থাৎ ফজরের নামাজের পর সৃষ্টিকর্তার নাম নিয়ে পড়াশুনা শুরু করা যেতে পারে। এবং যে পড়াটা আগের দিনে পড়া হয়েছিলো সেই পড়া গুলি আগে একটু রিভাইস দিয়ে নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের বলছি, অনেক সময় দেখো, তুমি যখন ঘুম থেকে উঠবে তখন ইচ্ছে করলেই গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করতে পারছো না। তোমার একটি মানসিক প্রস্তুতির ব্যাপার আছে।
প্রথমে একটু হাঁটাচলা করে পড়তে বসবে।এর মধ্যে আগের দিনে যে পড়াগুলো পড়েছো, সেই পড়াগুলো দিয়ে আজকের পড়াটা শুরু করলে অনেক ভালো হয়। অথবা যে পড়াগুলো শিক্ষার্থীদের কাছে সহজ মনে হয় সেই পড়াটা দিয়ে শুরু করলেও খুব তাড়াতাড়ি পড়াটা আয়ত্বে আনতে পারে। যেমন ইংরেজি কম্পোজিশন, প্যারাগ্রাফ, ডাইলগ বা স্টোরি এমনকি বাংলাও পড়া যেতে পারে। তবে দিনের কোনো একটা সময় অর্থাৎ যে সময়টা ভালো লাগে সেই সময়টাতে অবশ্যই গণিত চর্চা যেন করে নেয়। কারণ একটি প্রবাদ আছে গণিত পাশ তো এসএসসি পাশ ।
যেসকল শিক্ষার্থী দুর্বল প্রকৃতির তারা গণিতে জোড় দিতে হবে। গনিতের যে চ্যাপ্টার গুলো বুঝতে কঠিন মনে হয় দিনের কোনো একটা সময়ে যে সময়টা পরতে ভালো লাগে সেই সময়টা গণিত অনুশীলন করে নিবে। গণিতের মধ্যে জ্যামিতি, পরিমিতি ও পরিসংখ্যান খুব মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।
বিশেষ করে পরিসংখ্যান উত্তর যেহেতু বাধ্যতামূলক তাই পরিসংখ্যানে অনেক জোড় দিতে হবে। আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে, গণিত সাবজেক্টে প্রত্যেকটা অধ্যায়ের শেষে অনুশীলনী লেখা থাকে, এখন এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বেশি বেশি করে সেগুলো অনুশীলন করতে হবে। আর এখন যা-ই পড়বে তা লেখার চেষ্টা করবে। কারণ পড়ার সাথে সাথে লিখলে পড়া খুব দ্রুত মুখস্থ হয়।
এস এস সি পরীক্ষা
গ্রুপ স্টাডিও এই সময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কয়েকজন সহপাঠী মিলে গ্রুপ স্টাডি করা যেতে পারে। নিজেদের মধ্যে গ্রুপ স্টাডি করলে পড়া অনেক দ্রুত ইম্প্রোভ হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয় জানার জন্য একটি ম্যাপ সামনে রাখা খুব জরুরি। বর্তমান ইন্টারনেটের যুগ। ইন্টারনেটে যেমন ইউ টিউব, ওয়েবসাইট, ওয়েভপেইজ ইত্যাদির মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষণীয় পোস্ট দেওয়া হয় যেগুলো থেকেও অনেক জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব। এগুলো থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নোট করে নিজেকে অনেক সমৃদ্ধশালী করতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
লেখক- সোপানুল ইসলাম সোপান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট,
অধ্যক্ষ – আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাইকপাড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
Leave a Reply