সংবাদ শিরোনাম
গণতন্ত্রের পথে নারী জাগরণের পথিকৃৎ; আবুল কালাম আজাদ

গণতন্ত্রের পথে নারী জাগরণের পথিকৃৎ; আবুল কালাম আজাদ

গণতন্ত্রের পথে নারী জাগরণের অগ্রপথিকৃৎ বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তার দূরদর্শী রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজ স্থান পেয়েছে বিশ্ব দরবারে। তাই তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে হয়েছেন গণতন্ত্রের অগ্রপথিক। নারী জাগরণের অগ্রপথিকৃৎ। তার মেধা, মনন, প্রজ্ঞা ও সৃজনশীলতায় নিজেকে অনন্য মর্যাদায় অবস্থান করে নিয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) নেতৃত্বে নিজের দক্ষতার অনন্য স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ প্রত্যয় নিয়ে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষে এগিয়ে চলছেন। স্পিকার হিসেবে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী একজন আলোকবর্তিকা। তিনি যে আলো ছড়াচ্ছেন, সেই আলোর শিখা ধারণ করেই এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে কাজ করছেন। গুণী এই মানুষটির আজ ৬ অক্টোবর জন্মদিন। শুভ জন্মদিনে সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু কামনা ও জানাই নিরন্তর শুভ কামনা। আগামীর পথচলা হোক আরো সুন্দর ও মসৃণ।
জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক রীতি ও মূল্যবোধ জোরালো করার ক্ষেত্রে সংসদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শন ও সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী ও সব পর্যায়ের অংশীদাররা সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। তাই সংসদ সদস্যদের এ লক্ষ্যে জনগণের মাঝে কাজ করে যেতে হবে। স্পিকার সংসদ সদস্যদের অনুপ্রেরণা অব্যাহত রেখেই চলেছেন। দারিদ্র্য, অশিক্ষা, লিঙ্গবৈষম্য, বেকারত্ব ও স্বাস্থ্য সমস্যা নিরসন করতে না পারলে গণতন্ত্র যথাযথভাবে অর্থবহ হয় না। তাই সরকারের পাশাপাশি সংসদ সদস্যদেরকেও এসব সমস্যা নিরসনে কাজ করতে হয়। বাংলাদেশ সরকার নানামুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং উদ্যোগ গ্রহণের কারণে জনগণের গড় আয় ও আয়ু বৃদ্ধি, সর্বোপরি জীবনমানের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। সংসদ সদস্যদের মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক সংসদীয় চর্চা জোরালো করার জন্য বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নানা উদ্যোগ নেয়; এ উদ্যোগকে ত্বরান্বিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এর ফলে সংসদ সদস্যরা জনগণের জীবনমান উন্নয়নে জাতীয় পর্যায়ে ও নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের তৃণমূল পর্যায়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সিপিএ’র মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, ওয়ার্কশপ ও সেমিনারও আয়োজন করেন। বিগত সময়ে সিপিএ চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালনকালীন তিনি এসব উদ্যোগকে আরও জোরালো করেছিলেন। সিপিএ চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালনকালীন যে দক্ষতা, মনোযোগ ও নিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছেন, তা জাতি চির কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে। ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের অপসারণ, যা সংক্ষেপে ব্রেক্সিট নামে পরিচিত) কার্যকর হওয়ার পর অনেক ক্ষেত্রেই যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কের পরিবর্তন হয়েছে। ব্রেক্সিট কার্যকরে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করেছে; বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ অবগত থেকে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ও ইউরোপীয় পার্লামেন্ট উভয়ের সঙ্গেই বাংলাদেশ পার্লামেন্টের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক অব্যাহত রাখেন। এরই ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশকে প্রাণবন্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, জলবায়ু স্থিতিস্থাপক ডেল্টা এবং আঞ্চলিক জ্ঞান ও সংযোগের হাবে রূপান্তরে বাংলাদেশ সরকারের অব্যাহত প্রচেষ্টায় যুক্তরাজ্য নির্ভরযোগ্য বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে পরিণত হয়েছে।
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (Millennium Development Goals-MDGs) এমডিজি ও তৎপরবর্তী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (Sustainable Development Goals-SDGs) এসডিজি অর্জনে বাংলাদেশের সফলতা বিশে^র দরবারে ঈর্ষনীয় ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অবাক বিশ্ব বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে রয়। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ যেভাবে সফল হচ্ছে, সেখান থেকে কমনওয়েলথভুক্ত ছোট ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলো অভিজ্ঞতা গ্রহণ করছে। এখানেও স্পিকার জোরালো ভূমিকা পালন করছেন। বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর আরও জোরালো ভূমিকা নেওয়া উচিৎ তাই তিনি বিশ্ব নেতৃত্বের কাছে প্রতিনিয়ত তুলে ধরছেন।
শিরীন শারমিন স্পিকার হিসেবে যে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন তা অনুসরণযোগ্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে তার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের যুবসমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সময়োপযোগী, গুরুত্বপূর্ণ ও আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার কর্মসূচির মাধ্যমে জনবান্ধব পরিকল্পনা প্রনয়ন করছেন। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে বৈষম্য নিরসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমান সুযোগ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। তাই তো কবির ভাষায় বলতে হয়; ‘বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’ প্রয়াত বিশিষ্ট পরমানু বিজ্ঞানি ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার আদর্শ ও অনুপ্রেরণা, ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল কারিগর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় এবং প্রখ্যাত অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ পুতুলেরও স্বপ্ন বুননে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
১৯৭২ সালে বিশ্বসেরা সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। স্বাধীনতা অর্জনের পর মাত্র ১০ মাসের মাথায় বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন, সেই সংবিধানে ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘ ঘোষিত সর্বজনীন মানবাধিকারের পুরোপুরি প্রতিফলন রয়েছে। বেঁচে থাকার অধিকার, আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার, নারী-পুরুষ সমঅধিকার, শিশুদের অধিকার, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের অধিকার, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি এবং কৃষক-শ্রমিকের উন্নয়নসহ সবকিছুই সন্নিবেশিত আছে বাংলাদেশের সংবিধানে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই বাংলাদেশের সংবিধান রচিত হয়েছিল। তারই সুযোগ্যকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অনেক সংগ্রাম করেছেন। এদেশের মানুষের মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তার সংগ্রাম বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত ও সমাদৃত। বাংলাদেশ মানবাধিকার সংরক্ষণে অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশ তাই মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যূত সর্বহারা রোহিঙ্গাদেরও আশ্রয় দিয়েছে।
মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক শান্তি নীতি মেনে চলার মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীতে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করা যাবে। বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ব্যবস্থায় মানবাধিকারের ক্ষেত্রটি বৈচিত্র্যময় ও সুবিস্তৃত। মানবাধিকারের বিষয়টি বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠিত, যা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। জন্মের পর থেকেই মানুষ মানবাধিকারগুলো অর্জন করে থাকে। প্রতিটি দেশের সরকারের দায়িত্ব মানবাধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করা। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ, টেকসই সামাজিক উন্নয়ন, মানবাধিকার যেন লঙ্ঘন না হয় ইত্যাদি বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছেন। বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধ এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে অর্থায়নে এমপিদের জোরালো ভূমিকা রাখতেও অবদান রাখেন স্পিকার। বাংলাদেশ ও ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা, বিশেষ করে সংসদীয় গণতন্ত্র ও সুশাসন শক্তিশালীকরণ, এজেন্ডা ২০৩০, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের ওপর নজর দেন স্পিকার। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের বিশ্বব্যাপী অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি। কোভিড মহামারি পরবর্তী পরিস্থিতিতে সৃষ্ট নতুন চ্যালেঞ্জ ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারেও কাজ করছেন এ জননন্দিত নেত্রী।
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব আগামী দিনের নারীদের জন্য এ অনন্য অনুপ্রেরণা। সেই সঙ্গে বঙ্গমাতা নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। জাতির পিতা ছিলেন বিশ্বের শোষিত বঞ্চিত মানুষের মুক্তির অগ্রনায়ক। সদ্য স্বাধীন যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটি দেশের ভগ্নস্তুপের উপর দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের প্রেরণায় বাংলাদেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করেছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, দারিদ্র্য বিমোচন, বিদ্যুৎ, বৈদেশিক সম্পর্কসহ প্রতিটি সেক্টরে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়। মেট্রো রেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু টানেল, পদ্মা সেতুসহ বিভিন্ন মেগা উন্নয়ন প্রকল্প তারই উদাহরণ। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাদেরই নীতি আদর্শ অনুসরণ করে এগিয়ে যাচ্ছেন। সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ। সংসদকে যত বেশি গুরুত্বের জায়গায় অধিষ্ঠিত করা যাবে, গণতন্ত্র তত সুসংহত হবে। এ নীতিতে পথ চলছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও গতিশীল নেতৃত্বে গত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতির অভাবনীয় অগ্রগতি নিয়ে ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের সঙ্গেও তিনি মতবিনিময় করেন। সেসময় বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য বন্ধুত্ব জোরদারকরণে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত চার ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সংসদ সদস্য এবং একজন হাউস অব লর্ডস সদস্যের অবদানের কথাও তুলে ধরতে ভোলেননি স্পিকার।
রাজনৈতিকভাবে সচেতন হয়ে চলমান উন্নয়নের সুফলকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে যুবসমাজকে নিবেদিত হয়ে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে দেশের যুবসমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুবসমাজকে একত্রিত করে সময়োপযোগী, গুরুত্বপূর্ণ, আত্মনির্ভরশীল করে তোলার মাধ্যমে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করছেন সারাদেশে। যুবকল্যাণ ও যুব উন্নয়নে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে বৈষম্য নিরসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমান সুযোগ তৈরিতে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার সামাজিক বনায়ন, বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। তথ্য-প্রযুক্তির প্রসারের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছে। কোভিড মহামারি পরবর্তী পরিস্থিতিতে সৃষ্ট সব নতুন চ্যালেঞ্জ থেকে উত্তরণ, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে যুবসমাজকে ভূমিকা রাখতে হবে। নারী-শিশু-যুব-প্রতিবন্ধী সবাইকে উন্নয়নে অংশীদার হতে হবে। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে প্রাকৃতিক সম্পদকে সুরক্ষিত রেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ প্রত্যয় নিয়ে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সেখানেই অনুঘটকের দায়িত্ব পালন করছেন।
বর্তমান সরকার কৃষক বান্ধব সরকার। কৃষিতে পর্যাপ্ত ভর্তুকির মাধ্যমে সার, বীজ, কীটনাশকসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণ কৃষকের হাতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। মেহনতি মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন। এ জন্য তিনি দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাঁর পিতার মতই দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে দারিদ্রসীমা থেকে উত্তরণের জন্য সম্ভাব্য সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে সম্পন্ন করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় মা-বোনদের জন্য বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান করছেন। দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার আওতায় রাখার জন্য এক কোটি কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ৯ লাখ মানুষকে ঘর করে দেওয়ার কার্যক্রম চলছে। সারাদেশে ৫০০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
শিরীন শারমিন চৌধুরী- বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একজন রাজনীতিবিদ। তিনি নবম জাতীয় সংসদের স্পিকারসহ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নারী স্পিকার হিসেবে ৩০ এপ্রিল, ২০১৩ তারিখে নির্বাচিত হন। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বর্তমান ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি পুনরায় জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দশম সংসদের স্পীকার হিসেবে বিগত ২৯ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি ২৪ রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তিনি বিগত নবম সংসদেরও মাননীয় স্পীকার হিসেবে বিগত ৩০ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে শপথ গ্রহণ করেন। ইতোপূর্বে তিনি মহাজোট সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে প্রায় চার বছর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও পরবর্তীতে আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৯ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এল.এল.বি (অনার্স) এবং ১৯৯০ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এল.এল.এম ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি কমনওয়েল্থ স্কলারশিপ নিয়ে ২০০০ সালে যুক্তরাজ্যের এসেক্স ইউনিভার্সিটি থেকে ‘রাইট টু লাইফ’ অর্থাৎ মানুষের জীবনের অধিকার, মানবাধিকার ও সাংবিধানিক আইন বিষয়ে পি.এইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের একজন স্বনামধন্য আইনজীবী। তিনি জনস্বার্থ, মানবাধিকার ও সংবিধান বিষয়ক বিভিন্ন মামলা পরিচালনা করেছেন। বিগত ২০০৮-২০০৯ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনীত নানাবিধ মামলার প্যানেল আইনজীবী ছিলেন।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে মানবাধিকার বিষয়ে রিসোর্সপারসন হিসেবেও কাজ করেন। তিনি ২০০৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ল রিপোর্ট সিরিজ ‘বাংলাদেশ লিগেল ডিসিশনস্ (বিএলডি)’-এর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নারী উন্নয়ন ও মানবাধিকার বিষয়ে ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১০ সালে এশিয়া সোসাইটি- ওয়াশিংটন কর্তৃক হিউম্যানিটারিয়ান সার্ভিস এওয়ার্ড লাভ করেন। তিনি মানবাধিকার, অর্ন্তভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে একজন আর্ন্তজাতিক রিসোর্সপারসন হিসেবে বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আর্ন্তজাতিক সম্মেলন ও সভায় অংশগ্রহণ করে আসছেন। তিনি ২০১০-২০১১ সালে কমনওয়েল্থ জেন্ডার চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এর স্বামী সৈয়দ ইশতিয়াক হোসেন বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য ফার্মাসিস্ট (ফার্মাসিউটিক্যাল কনসালটেন্ট)। তিনি দুই সন্তানের জননী। জ্যেষ্ঠা কন্যা সন্তান লামিছা শিরীন হোসাইন ও কনিষ্ঠ পুত্র সন্তান ইবতেশাম রফিক হোসাইন। শিরীন শারমিন চৌধুরী ১৯৬৬ সালের ৬ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। নোয়াখালী জেলার চাটখিলের সিএসপি অফিসার ও বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব রফিকুল্লাহ চৌধুরীর কন্যা তিনি। আর মা ছিলেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য প্রফেসর নাইয়ার সুলতানা। তার নানা ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টের বিচারপতি সিকান্দার আলী।

লেখক : সিনিয়র সাব-এডিটর ‘দৈনিক সংবাদ সারাবেলা’ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ‘ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিল (ডিএসইসি)’।
[email protected].

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com