স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা কসবা উপজেলায় মাদকসহ আটক সিএনজি চালিত অটোরিকশা টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠার পর দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছেন জেলা পুলিশ ৷ গত ১১ ফেব্রুয়ারী এই ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর অভিযুক্ত কসবা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক খায়রুল ইসলাম ও সহকারী উপ-পরিদর্শক মুখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এর তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেনকে।
এ ব্যাপারে কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ দেলোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ সুপার স্যার আমাকে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। আশা করছি, ২/৩ দিনের মধ্যে ঘটনাটির তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারবো।
জানা যায়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পূর্বে উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের নোয়াগাও মোড়ে মাদক উদ্ধারে অভিযান চালায় কসবা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) খায়রুল ইসলাম ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মুখলেছুর রহমান। অভিযানকালে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা তল্লাশির জন্য আটক করেন। এসময় চালকসহ সিএনজিতে থাকা তিন যুবকের মধ্যে একজন দৌড়ে পালিয়ে যান৷ পুলিশ সিএনজি চালক বাহার মিয়া ওরফে মনা’র দেহ তল্লাশি করে আন্ডারওয়্যারের ভেতর লোকানো ১৫২ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। এই ঘটনায় বাহার মিয়া ওরফে মনা-(৩০) ও তার সাথে থাকা সোহেল মিয়া-(২২) নামের আরেক যুবককে আটক করে পুলিশ। পরে সিএনজি থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়া মোঃ হাকিমকেও (২৯) আটক করা হয়। আটককৃত ৩জনই জেলা শহরের গোকর্ণঘাট এলাকার বাসিন্দা।
এদিকে, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ইয়াবার মূল মালিক হাকিম এবং সহযোগী মনা ও সোহেল। ঘটনাস্থলে জব্দ তালিকা করার পর স্থানীয় দুইজনকে স্বাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর নিয়ে পুলিশ সিএনজিসহ ইয়াবা এবং আটক তিন মাদক ব্যবসায়ীকে থানায় নিয়ে আসেন।
এ ব্যাপারে নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, থানায় আসার পর সিএনজি চালক মনার বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। তার পরিবারের সদস্যরা গেলে মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত সিএনজিটি ছাড়িয়ে নিতে অভিযানে থাকা এএসআই মুখলেছ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরবর্তীতে রাতে ৩০ হাজার টাকা মুখলেছের হাতে দেওয়া হয়, এসময় মধ্যস্থতা করেন রাসেল নামের এক সোর্স। টাকা পাওয়ার পর মধ্যরাতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা রিকশাটি ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর দিন ৫ ফেব্রুয়ারী ১৫২ পিস ইয়াবাসহ হাকিমকে প্রধান আসামী করে সিএনজি চালক মনা ও সোহেলের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন এসআই খায়রুল ইসলাম। আদালতে আসামীদের সাথে পাঠানো হয় জব্দ তালিকা। সেই তালিকা মাদকের কথা লিখা থাকলেও সিএনজি চালিত অটো রিকশার কথা উল্লেখ নেই। জব্দ তালিকায় সাক্ষি হিসেবে মো. জাহাঙ্গীর ও সাইফুল ইসলাম নামের দুইজনের নাম এবং স্বাক্ষর রয়েছে।
এ ব্যাপারে জব্দ তালিকায় স্বাক্ষী হিসেবে থাকা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার নাম সাক্ষি হিসেবে এএসআই মুখলেছ ভাই দিয়েছে। উনি আমার পূর্ব পরিচিত। আমি বাড়িতে ফেরার সময় সেদিন তার সাথে দেখা হয়। এসময় সিএনজিসহ তিনজনকে আটক করে। তল্লাশি করে একজনের আন্ডারওয়্যারের ভেতরে ইয়াবা পাওয়া যায়। পরে সিএনজিসহ তিনজনকে তারা নিয়ে যায়। আমি স্বাক্ষী থাকতে চাইনি, মুখলেছ ভাই বলেছে সমস্যা হবে না। আমার এলাকার জাহাঙ্গীর ভাইকেও স্বাক্ষী করা হয়েছে।এ ব্যাপারে অপর স্বাক্ষী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম। পুলিশ সিএনজিসহ তিনজনকে ইয়াবাসহ আটক করেছেন।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply