স্টাফ রিপোর্টার, সময়নিউজবিডি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বটবৃক্ষ মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাবেক উপমন্ত্রী জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সফল সাধারন সম্পাদক বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না-লিল্লাহ —রাজিউন)।
রবিবার (২৭ অক্টোবর) সকাল পৌনে ৯টায় তিনি মারা যান।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
মরহুমের নামাজে জানাজা আগামীকাল সোমবার বাদ জোহর জেলা ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
মরহুমের পরিবার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি অসুস্থতায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার ইউনাইটেড হসপিটালের আইসিওতে রাখা হয়। পরে গত বুধবার তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে চিকিৎসকের ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেন। আজ রবিবার সকালে তিনি পুনরায় অসুস্থতাবোধ করলে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর প্রিয় হুমায়ুন কবির এর মৃত্যুর সংবাদ মূহুর্তেই ছড়িয়ে পুরে সর্বত্র। শোকাহত ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী জড়ো হচ্ছে প্রিয় নেতার পাইকপাড়াস্থ বাসভবনে।
প্রিয় এই মানুষটির মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তাকে দেখতে আসেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী বিএনপি নেতা আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট হারুন অর রশীদ, জেলা প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তা, পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সহ সর্বস্তরের মানুষ। শোকে কাতর মানুষের মুখে মুখে একটাই কথা হুমায়ুন কবিরের মতো নেতা এই মাটিতে আর জন্ম হবে না। তাঁর মৃত্যুতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আকাশ থেকে আরেকটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের বিদায় হলো। যে নক্ষত্রের আলোয় আলোকিত ছিলো পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
উল্লেখ্য, আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ছাত্রজীবনে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করেন, তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগের মনোনয়ন না পেয়ে জয়বাংলা পরিষদ নামে একটি প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নেন এবং নির্বাচনে তিনি ভিপি নির্বাচিত হন ও তাঁর পুরো প্যানেলই নির্বাচনে জয়ী জন। পরবর্তীতে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সর্বকনিষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসেবে বিপুল পরিমাণ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। সর্বজন শ্রদ্ধেয় এই মানুষটি প্রধান সেনাপতির ভূমিকায় আলেমওলামের নেতৃত্বে এই শহর থেকে পতিতালয় উচ্ছেদ করা হয়।
আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির এরশাদ সরকার আমলে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর জন্য আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামত। অসংখ্য দাঙ্গাহাঙ্গামার সুষ্ঠু সমাধান করা বিশিষ্ট এই শালিসকারক এর দরজা ছিলো জনগনের জন্য ২৪ ঘন্টা খোলা। তিনি ছিলেন সামাজিক সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সর্বদলীয় নেতার আসনে।
অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবিরের দক্ষ নেতৃত্বের গুণে ভারতে বাবরি মসজিদ ভাংচুরের ঘটনায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্মানিত আলেমওলামাদের সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply