স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যৌতুক লোভী স্বামী ও তার পরিবারের নির্যাতনের শিকার শারমিন আক্তার (২৮) নামে এক গৃহবধূ বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরে অবশেষে ব্রাহ্মনবাড়িয়া সিনিয়র চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন নিযার্তিতা গৃহবধূ।
জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার মৃত জাকির হোসেনের মেয়ে শারমিন আক্তার । গত ২০০৯ সালের ৯ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার (বর্তমানে ব্রাহ্মনবাড়িয়া পৌর এলাকার খৈয়াসার গ্রামে) কেফায়েত উল্লাহর ছেলে মোঃ কামরুল ইসলামের সাথে ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়।
জানা যায়, প্রেম করে বিয়ে করা শারমিন বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিসহ বিভিন্ন অযুহাতে স্বামীর নিযার্তনের শিকার হয়ে আসছিলেন।এরই মধ্যে একটি কন্যা সন্তান ও ২টি ছেলে সন্তানের জন্ম হয় তার গর্ভে। ফুটফুটে সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে শত নিযার্তন সয়েও স্বামীর সংসার করে যাচ্ছিলেন শারমিন আক্তার। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস! বিয়ের পরই প্রেম রুপ নেয় বিষাদে।
বার বার যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ ও পরকিয়া প্রেমে আসক্ত মোঃ কামরুল ইসলাম তার স্ত্রী শারমিন আক্তারের উপর নিযার্তনের মাত্রা বাড়াতে থাকে। এমতাবস্থায় গত ১৬ নভেম্বর দুপুরে হঠাৎ প্রাইভেটকার কেনার জন্য ১৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন যৌতুক লোভী স্বামী কামরুল ইসলাম। শারমিন এ টাকা দিতে অস্বিকার করলে তাকে পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে মারাত্মক আহত অবস্থায় শারমীনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
এ ঘটনায় গত ১৭ নভেম্বর শারমিন আক্তার নিজে বাদী হয়ে তার স্বামী কামরুল ইসলাম (৩২) কে আসামী করে ব্রাহ্মনবাড়িয়া সিনিয়র চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারা আইনে মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, শারমিন আক্তারের বিয়ের সময় তার স্বামী কামরুল ইসলামকে নগদ তিন লক্ষ টাকা ও ১০ ভরি স্বণার্লংকার প্রদান করা হয়। বিয়ের পর যৌতুকের দাবিতে তার উপর শুরু হয় স্বামীর অমানসিক নির্যাতন। সন্তানদের সুখ-শান্তির কথা চিন্তা করে শারমীন দফায় দফায় টাকা দেন। সরকারি চাকরির কথা বলে ২০লক্ষ টাকাও দেন শারমিনের পরিবার। এভাবে অতিবাহিত হয় প্রায় ১০বছর। এরই মধ্যে শারমিন এক কন্যা ও দুটি ছেলে সন্তানে জননী হয়। তবে তার উপর নিযার্তনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়।
সর্বশেষে আসামীর পিতা কেফায়েত উল্লাহ, মা রহিমা বেগম ও বড় ভাই কাউছার মিয়ার কুপ্ররোচনায় প্রাইভেটকার কেনার জন্য শারমিনের কাছে নগত ১৫ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করেন। কিন্তু শারমিন টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ক্ষিপ্ত হয় কামরুল ও তার পরিবার। গত ১৬ নভেম্বর দুপুরে হঠাৎ যৌতুকের দাবিতে শারমিনকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় কামরুল ও তার পরিবার ।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মনবাড়িয়া সিনিয়র চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি রজ্জু হবার পর আসামী কামরুল ইসলাম আপোষ করবে মর্মে জামিন আনেন। তবে এখনও আপোষের কোন প্রকার তোয়াক্কা করছেন না কামরুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কামরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, বিষয়টি আপোষ হয়ে গেছে। মনমালিন্য ও ভুল বুঝাবুঝির কারনে এমন হয়েছে।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply