স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানিতে চাকুরী করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মোনায়েম খান নামের এক ঔষধ কোম্পানির কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। মোনায়েম খান আল-মদিনা ফার্মাসিউটিক্যালসের হেড অব অপারেশন পদে কর্মরত আছেন। তার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নন্দনপুর বিসিকে একমাত্র ওষুধ কোম্পানি ম্যাডরেক্স লাইফ সাইন্স লিমিটেডের টাকার হিসেব না দিয়ে চাকুরী ছেড়ে চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি এই কোম্পানিতে চাকুরী ছেড়ে দেওয়ার পর প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা গড়মিল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
ম্যাডরেক্স লাইফ সাইন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, ইতোমধ্যে এ বিষয়ে মোনায়েম খানকে ৩ বার চিঠি পাঠানো হয়েছে। তিনি কোম্পানির হিসাব না দিয়ে চাকুরী ছেড়ে চলে যান। সর্বশেষ যে চিঠি পাঠিয়েছে তা আগামী ফেব্রুয়ারী মাসে মেয়াদ শেষ হলে মোনায়েম খানের বিরুদ্ধে আমরা আইনী পদক্ষেপ নিবো।
এছাড়াও মোনায়েম খান একুশে ফার্মার এমডি থাকাকালিন সময় কোম্পানির শেয়ার দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন জন থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৭ সালে শরিয়তপুরের জাকির হোসেনের কাছ থেকে একুশে ফার্মার শেয়ার দিবে বলে ৩ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। একই বছর যশোর চুয়াডাঙ্গার মো. আসাদুজ্জামানের কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে একুশে ফার্মার শেয়ার দিবে বলে পালিয়ে যায় মোনায়েম খান। ওই টাকার চিন্তা করতে করতে অবশেষে আসাদুজ্জামান মৃত্যুবরণ করেন।
এছাড়া কক্সবাজারের শোয়েব নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে একুশে ফার্মার শেয়ার দেওয়ার কথা বলে লক্ষাধিক টাকা নিয়েছেন। একাধিকবার এসব টাকার জন্য মোনায়েম খানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি টাকা নিয়ে ছয়নয় করছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এমএসটি ফার্মা অ্যান্ড হেলথকেয়ারসহ বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় মোনায়েম খানের বিরুদ্ধে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জাকির হোসেন বলেন, একুশে ফার্মা ঔষধ কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার করবে বলে আমার কাছ থেকে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা নেন মোনায়েম খান। পরে এই বিষয়ে কিছুই করেননি। তিনি আমার টাকা ফেরত দিতেও টালবাহানা করছেন। তবে আমার কাছে ২ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা তাকে দেওয়ার প্রমাণ আছে।
কক্সবাজারের শোয়েব বলেন, মোনায়েম খান একুশে ফার্মার শেয়ার হোল্ডার করবে বলে আমার কাছ থেকেও ধাপেধাপে এক লক্ষ ৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। কোম্পানির কোন খবর নেই, এই টাকা ফেরত দিচ্ছেন না তিনি।
আল-মদিনা ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বলেন, আমাকে মোনায়েম খানের কাছে টাকা পাওয়ার বিষয়ে প্রায় প্রতিদিন কেউ না কেউ কল দিচ্ছেন। আমি বলেছি ঢাকায় এসে আমার সাথে তাদেরকে দেখা করতে।
মোনায়েম খানের বিরুদ্ধে আল-মদিনা ফার্মাসিউটিক্যালসে হেড অব অপারেশন এর দায়িত্বে থাকাকালীন অবস্থায়ও আরও অনেক দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এতো দুর্নীতির পর মোনায়েম খান থেমে নেই। তার বিরুদ্ধে একাধিক ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার হোল্ডার দিবে বলে অনেকের কাছ থেকে কোটি টাকা আত্নসাথের যথেষ্ট প্রমাণও মিলেছে।
আল-মদিনা ফার্মাসিউটিক্যালসের হেড অব অপারেশন মোনায়েম খান বলেন, এই বিষয়ে মুঠোফোনে আমি কোন মন্তব্য করব না। কিছু জানার থাকলে ঢাকায় আসেন।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply