বিশেষ প্রতিবেদক//সময়নিউজবিডি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে মোঃ ইয়াসিন (৪৫) নামে এক পিয়নের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় শহর জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ঘটনা জানাজানির পর থেকে অভিযুক্ত ইয়াসিন পলাতক রয়েছে।
গত প্রায় তিনদিন যাবত ইয়াছিন মিয়া (৪৫) নামের ওই পিয়নকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
অভিযুক্ত পিয়ন ইয়াছিন পলাতক হওয়ার পর অফিসের বিপুল অংকের টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত সাব রেজিস্ট্রি অফিসে আনাগোনা চলে। আর অভিযোগ উঠেছে সরকারি অর্থ লোপাটের সঙ্গে রেজিস্ট্রি অফিসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও অফিস সহায়করাও জড়িত থাকার।
সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের একাধিক সূত্রে জানা যায়, জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মরিচাকান্দির আতুয়াকান্দির হাজী মোহন মিয়ার ছেলে নাসিরনগর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের অধিনে পিয়ন হিসেবে কর্মরত আছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে তাকে ডেপুটেশনে রাখা হয়েছে। প্রায় সময় তাকে দিয়ে অফিসের নকল ফি, তল্লাশী ফি, রেজিস্ট্রেশন ফিসহ ইত্যাদি চালানের টাকা বিভিন্ন সময় জমা দিতে সোনালী ব্যাংকে প্রধান শাখায় পাঠায়। গত ২৬ নভেম্বর তাকে দিয়ে তিনটি চালানের প্রায় এক লক্ষ টাকা পাঠানো হয় ব্যাংকে। কিন্তু সে টাকা গুলো রেজিস্ট্রি অফিসের নির্দিষ্ট কোডে জমা না দিয়ে রশিদে ভুয়া সীল মেরে জমা দেয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেজিস্ট্রি অফিসের অধীনে টাকা কম জমা হওয়ার বিষয়টি নজরে আসে ঢাকা আইজিআর অফিসের। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেজিস্ট্রি অফিসকে বিষয়টি অবগত করলে সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দায়িত্ব প্রাপ্তরা ইয়াছিনকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে যাওয়ার পথে সে পালিয়ে যায়। কিন্তু বলা হচ্ছে, ইয়াছিন এর আগেই পালিয়ে গেছে। তার মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে বন্ধ পাওয়া যায়।
জেলা রেজিস্ট্রি অফিসের আগামী কিছুদিনের মধ্যে অডিট থাকায় রেজিস্ট্রি অফিস কর্তৃপক্ষ আশংকা প্রকাশ করে যে, অদ্যবধি ইয়াছিন মিয়া যেসব টাকা ব্যাংকে পর্যায়ক্রমে জমা দিয়েছে সেইসব জমাকৃত টাকার রিসিটগুলো যাচাই বাচাই করে দেখা প্রয়োজন। তবে কি পরিমান টাকা আত্মসাৎ করেছে তা এখনই বলা যাচ্ছেনা।
বিষয়টি জেনে অডিট কর্মকর্তা মিতেন্দ্র নাথ শিকদারের নেতৃত্বে একটি অডিট টিম আসে ঘটনা তদন্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে। তারা অডিট চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন একটি সূত্র।
এদিকে পিয়ন ইয়াছিনকে খুঁজে তার পিতা হাজি মোহন মিয়া ও ইয়াছিনের তিন স্ত্রীর মধ্যে দুই স্ত্রীকে খবর দিয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী শাহরুল সহ আরও কয়েকজন। তাদেরকে বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সাব রেজিস্ট্রারের কক্ষে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
অপর একটি সূত্র জানান, ঘটনার পর পিয়ন ইয়াছিনের ক্রয় করা তার দুই স্ত্রীর নামে রেজিস্ট্রিকৃত দুটি বাড়ি সাব রেজিস্ট্রি অফিসের মোহরার আব্দুল্লাহ ও দলিল লেখক সমিতির এক নেতার নামে পাওয়ার অব এটর্নি করা হয়েছে।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply