ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
‘পা দিয়ে দাগ টেনে সেই দাগের ভেতর কোন সাংবাদিক এলাও না’ বলে বেফাঁস মন্তব্য করেছেন আখাউড়া উপজেলার নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার রেইনা।
বৃহস্পতিবার (৩ মে) ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাস বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের নির্মাণাধীন আখাউড়া -আগরতলা রেলপথ পরিদর্শনে আসলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগরে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি এ বিরূপ মন্তব্য করেন।
এদিকে এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন উপস্থিত সাংবাদিকদের অনুরোধে ভারতীয় হাইকমিশনের বক্তব্য নেয়ার অনুমতি দেন।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার রেইনার এমন বেফাঁস মন্তব্যের প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের সংবাদ কর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
তাৎক্ষণিক উপস্থিত সংবাদ কর্মীরা সৌজন্যতাবোধ থেকে ইউএনও’র মন্তব্যের কোন প্রতিক্রিয়া না করলেও পরে বিষয়টি নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইলেট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের অন্যতম সংগঠন ‘ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (ইমজা) এবং আখাউড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
এ ঘটনায় অনেক সিনিয়র সাংবাদিকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দেন।
জানা যায়, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের নির্মাণাধীন আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ পরিদর্শনে আসেন ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাস। পরিদর্শনের সংবাদ সংগ্রহের জন্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়া থেকে বেশ ক’জন সিনিয়র সাংবাদিক উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগরে যান। এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁনের অনুমতি নিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকরা ভারতীয় হাইকমিশনের বক্তব্য নেয়ার জন্য যেতে চাইলে মাটিতে ‘পা দিয়ে দাগ টেনে ওই দাগের ভেতর কোন সাংবাদিকের এলাও না’ বলে মন্তব্য করেন তাহমিনা আক্তার রেইনা। এসময় তিনি পুলিশকে নির্দেশ করেন যেন কোন সাংবাদিক ওই দাগের ভেতর প্রবেশ করতে না পারে। যদিও পেশাগত দায়িত্বের কারণে এসময় সাংবাদিকরা কোনো প্রতি উত্তর করেননি।
এ ঘটনায় ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করে উপস্থিত সাংবাদিক নেতারা বলেন, ইউএনও-এর এ ধরনের আচরণ শিষ্টাচার বহির্ভূত হয়েছে। অবশ্য ঘটনার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ‘ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (ইমজা)’র সভাপতি এবং এটিএন নিউজ ও এটিএন বাংলার পূর্বাঞ্চলীয় ব্যুরো চীফ পীযুষ কান্তি আচার্য ও ফজলে রাব্বি নামে এক সাংবাদিকের ফেসবুকের পোস্টে করা মন্তব্য হুবহু নিম্নে তুলে ধরা হলো, ‘দু:খিত নতুন ইউএনও কে অভিনন্দন জানাতে পারলাম না।
তিনি আজ দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কয়েকজন সাংবাদিকের সাথে চরম অসদাচরণ করছেন। যা অনাকাঙ্খিত। তার শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। তিনি হয়তো জানেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রী নিয়েই সাংবাদিকতা করি। অহংকার পতনের মূল। তাই ইউএনও মহোদয়ের শুভ বুদ্ধির কামনা করছি’। ইউএনও’ এমন বেফাঁস মন্তব্যের প্রতিবাদে জেলা ও উপজেলার সাংবাদিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও নিন্দা জ্ঞাপন শুরু হয়।
আখাউড়া উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তর ও ডেইলি অবজারভার আখাউড়া এবং পূর্বপশ্চিম ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি মহিউদ্দিন মিশু বলেন, যেখানে সংবাদমাধ্যমকে সহযোগীতা করার কথা তা না করে তিনি সেখানে উল্টো ক্ষেপে গিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করলেন।
জেলা প্রশাসনের নিকট ইউএনও’র এমন মন্তব্যের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান সাংবাদিক নেতারা।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply