সংবাদ শিরোনাম
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরকে সম্প্রসারিত করে পরিকল্পিত নগরায়ন করা হবে: গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরী এমপি কমলগঞ্জে শমশেরনগরে রেলপথ ঘেষে জমে উঠে অবৈধ পশুর হাট; দুর্ঘটনার আশঙ্কা নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নের লক্ষ্যে বাংলালিংক ও হুয়াওয়ের চুক্তি ডেঙ্গু ঠেকাতে সোমবার থেকে মাঠে নামছে ডিএনসিসি অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে আটকে পড়া ১৩ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন শেষ হলো সাহিত্য একাডেমির ৭ দিনব্যাপী “বৈশাখী উৎসব।। সচিব খলিল আহমদকে বৈশাখী উৎসব সম্মাননা প্রদান সরাইলে উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বিএনপির প্রার্থী তপু লস্কর নবীনগরে তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষে একজন নিহত ও আহত-৩।। আটক-৪ কমলগঞ্জে নিরাপদ সড়ক চাই’র আইডি কার্ড বিতরণ ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত সাহিত্য একাডেমির বৈশাখী উৎসবের ৫ম দিনে নির্বাচিত গ্রন্থের প্রকাশনা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত

মা থাকার ঐশ্বর্যে সম্পদে সৌভাগ্যবান; আল আমীন শাহীন

মা থাকার ঐশ্বর্যে সম্পদে সৌভাগ্যবান; আল আমীন শাহীন

মায়ের অফুরন্ত ঋণ কোন সন্তানই কখনও পরিশোধ করতে পারে না, অপরিশোধিত ঋণ কাঁধে নিয়ে সন্তানরা একসময় পিতা মাতা হয়। সেই সন্তান পিতা মাতা হওয়ার পরেই বুঝতে পারে পিতা মাতা কি এবং সন্তানের জন্য সারাজীবন কত কি করেছেন। ঠিক তেমনি আমিও সন্তানের পিতা হওয়ার পর আঁচ করেছি , বুঝতে পেরেছি আমার জন্য আমার পিতা মাতা সারাজীবন কত কি করেছেন। এসব ভাবতে গিয়ে বিনিময়ে কি করেছি , কি করা উচিত , তাতে লজ্জিত ও পরাজিত হয়েছি বারবার।
১৯৮৭ সালে বাবাকে হারিয়েছি , বাবা শব্দটির যে আবেগ মনে তা অব্যক্ত । বাবা শূন্যতায় মনে হাহাকার আর্তনাদ ,কাউকে বলা যায় না বুঝানো যায় না।
বাবার কথা এখানে আর বলছি না।
আমার জীবনে মা এখনো আছেন। মা থাকার ঐশ্বর্যে সম্পদে আমি সৌভাগ্যবান , আদর সোহাগের এ ধন ভান্ডার আর মায়ের আঁচলের পরশে প্রশান্তি পাই। নিজেকে শ্রেষ্ঠ ধনী মনে করি।
ছোটবেলার সেই দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে বাবার আঙ্গুল ধরে , মায়ের কোলে চড়ে মঞ্চে উঠেছি। তৎকালীন সময়ে “বেগম” পত্রিকার গ্রাহক এবং পাঠক ছিলেন আমার মা । সেই বেগম পত্রিকা থেকে গল্প কবিতা কৌতুক শুনাতেন মা এবং তা শিখিয়ে আমাকে মঞ্চে তুলেছেন । স্কাউটিং জীবনের শুরু হয় তখন থেকেই। প্যারেড পিটিতে আঙ্গুল ধরে দাঁড় করিয়েছেন বাবা। স্কুল কলেজের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অনেক পুরস্কার পেয়েছি। নাটকে আবৃত্তিতে মা প্রধান দর্শক শ্রোতা। এ সব বিষয়ে পুরস্কার পেতাম, পুরস্কার নেয়ার সময় দেখতাম, মা হাততালি দিচ্ছেন আশে পাশে তাকাতেন এবং মায়ের গর্ব ভরা চোখে দেখতাম আনন্দাশ্রু, মুখে দেখতাম হাসিতে বিজয়া। এ জয় যেন আমার মায়ের। আমার অর্জিত বিভিন্ন পুরস্কার সনদগুলোতে যত্ন করে মা হাত বুলাতেন, পরে ধুলো জমলে মা চোখের জল ভিজিয়ে আর কম্পিত ঠোটে জয়ের হাসি হেসে , সে গুলো সাজিয়ে গুছিয়ে সংরক্ষিত রাখতেন এবং রাখেন আজো।
আমার মা কখনো মঞ্চে উঠেন নি। এবার উঠলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলো অভিভাবক সংবর্ধনার আয়োজন করেছে। আয়োজকরা ফোনে আমাকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠক হিসেবে অতিথি থাকার আবদার করলো। প্রায় ৩০ টি সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীদের শতাধিক মা বাবা সংবর্ধিত হবেন। আমি রাজি হলাম। ভাবলাম এ সুয়োগে এ অনুষ্ঠানে আমার মাকে সংযুক্ত করবো।
পহেলা অক্টোবর ২০২২ , মাহেন্দ্রক্ষণ। অতিথি হিসেবে আমি মঞ্চে। উপস্থাপক সোহেল রানা ও নুসরাত জাহান জেরিন ঘোষনা দিলেন আমার মায়ের নাম। এই ঘোষণা শুনে আমার মন শরীরে অন্য রকম দোলা কম্পন। আনন্দে চোখে জল, ঠোটে কম্পিত হাসি। ধীর পায়ে মা আমার মঞ্চে উঠছেন, অন্যদিকে নয়, মা আমার তাকিয়ে আছেন শুধু আমার দিকে। তুমুল করতালি অথচ কোন শব্দই আমি শুনছি না। মনে শুধু প্রতিধ্বনী মা শুধু মা আর মা।

ছেলেকে মেডেল পরিয়ে দিচ্ছেন রত্নগর্ভা মা।


প্রধান অতিথি বিশেষ অতিথিবৃন্দ মায়ের হাতে তুলে দিলেন সংবর্ধনার স্মারক ক্রেস্ট। অন্যদিকে নয় মা তখনও তাকিয়ে আছেন শুধু আমার দিকে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠক হিসেবে মা আমার গলায় মেডেল পড়াবেন ঘোষণা হলো । আমি বল­লাম এ মেডেল আমার নয়, এটা প্রাপ্য আমার মায়ের। শুধু আমিই নই , প্রতিটি সন্তানের মায়ের প্রাপ্য এ পুরস্কার , কেননা বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ আত্মত্যাগী স্বেচ্ছাসেবী হচ্ছেন মা।
সন্তানের উৎপত্তি থেকে গর্ভে লালন, নিজের জীবন ঝুঁকিতে সন্তান প্রসব, এবং সারাজীবন নানা ত্যাগে মায়ের যে স্বেচ্ছসেবা শ্রম তা তা কেউ দেয় না, দিতে পারে না।
মাকে শুধু বল­লাম, তোমার কাছে ঋণী মা। আমার জন্য দোয়া করো।
মা গলা থেকে মেডেলটি আমার গলায় পড়িয়ে দিলেন, আর বলে­ন , আমার যা সবই তোর।
সত্যিই মা থাকার ঐশ্বর্যে সম্পদে আমি সৌভাগ্যবান।
লেখকঃ আল আমিন শাহীন
সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি- ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব।

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com