স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শহরের পূর্বপাইকপাড়ায় নালিশা ভূমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীর গৌর সাহা।
অভিযোগ রয়েছে এ বিষয়ে ভূমির মালিক স্বপ্না সাহা সদর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও তিনি কোন প্রকার সহযোগিতা পাননি। বাধ্য হয়ে তিনি বুধবার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অপরদিকে বিরোধপূর্ণ ভূমিতে কীভাবে বহুতল ভবনের নকশা অনুমোদন করলো পৌর কর্তৃপক্ষ এ নিয়েও জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও ভূমি মালিক ওই নারী ও তার পরিবার প্রভাবশালী ব্যক্তির হাত থেকে নালিশা ভিটে বাড়ি রক্ষা করতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌর এলাকার পূর্ব পাইক পাড়ার বাসিন্দা গৌর চন্দ্র সাহার স্ত্রী স্বপ্না সাহার মালিকাধীন পাইকপাড়া মৌজার সি.এস ৩৬৭ দাগ, এস.এ ৫৮৩ দাগ হালে বি.এস ২১৪৩ দাগের সাড়ে ৫ শতক ভূমি নিয়ে প্রতিপক্ষ একই এলাকার মৃত যতিন্দ্র সাহার ছেলে গৌর সাহা (৪০)এর সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতে মামলা চলমান আছে ( দেঃ২৬/১৭) । এদিকে নালিশা ভূমিতে প্রতিপক্ষ গৌর সাহা ২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর জোরপূর্বক নির্মাণ কাজ করতে গেলে স্বপ্না সাহা বাধঁা প্রদান করলে তাকে প্রাণনাশের হুমকি ও ভীতি প্রদর্শন করলে তিনি পরদিন ১৪ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। একই বছরে ২৫ নভেম্বর বিজ্ঞ আদালত নালিশা ভূমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
স্বপ্না সাহা অভিযোগ করে বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও গৌরসাহা সম্পূর্ণ অন্যায় ও বে-আইনিভাবে নালিশা ভূমিতে জোরপূর্বক নির্মান কাজ অব্যাহত রখেছেন। বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে সদর থানার পুলিশকে অবহিত করলেও রহস্যজনক কারণে আদালতের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে পুলিশ কোন উদ্যোগ করেনি। তিনি বলেন, বুধবার তিনি এ ব্যাপারে পুলিশ সুপারের কার্যালয়েও অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এদিকে, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও নালিশা ভূমিতে গৌর সাহা কীভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন এই প্রশ্ন এখন এলাকাবাসীর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পূর্ব পাইকপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, বিরোধপূর্ন ভূমিতে গৌর সাহা বহুতল ভবন নির্মান কাজ করলেও এব্যাপারে পৌরসভা কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর সভার সহকারি প্রকৌশলী মোঃ কাউছার আহমেদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, মামলা চলমান থাকা অবস্থায় বিরোধপূর্ন ভূমিতে কেউ নির্মান কাজ করতে পারেনা। তিনি বলেন, খেঁাজ নিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়া হবে। নির্মান কাজে পৌরসভা থেকে কোন নকশা অনুমোদন করা হয়েছি কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফাইলপত্র না দেখে এই মুর্হুতে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবোনা।
এ ব্যাপারে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর (৪ নং ওয়ার্ড) মিজানুর রহমান আনসারী বলেন, জায়গাটি নিয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি বলেন, পৌরসভা থেকে নকশা অনুমোদন করেই গৌরসাহা ভবন নির্মান করছেন। স্বপ্না সাহা যদি আদালতের নিষেজ্ঞার কাগজপত্র দেখাতে পারেন তাহলে তার নির্মান কাজ বন্ধ করে দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এমরানুল ইসলাম বলেন, এবিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়ে থানার এস.আই আমির হামজাকে বিষয়টি দেখার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, জায়গা-সম্পত্তি নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা মোকদ্দমা চলমান। এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও উভয় বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টা করছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত গৌর সাহা বলেন, জায়গাটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আদালতে মামলা চলছে। ইতিমধ্যে তিনি আদালত থেকে তিনটি রায় পেয়েছেন। তার আইনজীবীর পরামর্শে পৌরসভা থেকে নকশা অনুমোদন করিয়ে তিনি নির্মান কাজ করছেন।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply