হাট্টিমাটিম টিম তারা মাঠে পাড়ে ডিম তাদের খাড়া দুটো শিং তারা হাট্টিমাটিম টিম। রুকনুজ্জামান খানের কবিতায় মঞ্চ কাঁপানো ও উৎসাহ উদ্দীপনার মাঝে শেষ হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের সবচেয়ে পুরাতন সংগঠন সাহিত্য একাডেমির ৭ দিনব্যাপী ৩৮তম বৈশাখী উৎসব। কালবৈশাখী ঝড় মুক্ত কখনো রোদ কখনো বৃষ্টি কখনো বা আকাশে সাত রঙের উপস্থিতি ছিল মন মাতানো। উৎসবে আগত দর্শকের শতস্ফূর্তিতে ভরে উঠে উৎসব প্রাঙ্গণ। চৈত্রের খরার সমস্ত গ্লানিকে মুছে কচি বৃষ্টির মধ্য দিয়ে যে নতুনেরও বার্তাবাহী হয়ে উঠে। শ্রমের যে কাব্য তার হাতে রচিত হয় তাকে উপযুক্ত পরিপ্রেক্ষিত ও মাত্রায় গ্রহণ করে কৃষ্ণতম মেঘের রূপালি রেখা আবিষ্কার ও তার বিস্তর আবির্ভাব ঘটেছে এই উৎসবে।
৭ বৈশাখ ও শেষ দিন (২০ এপ্রিল) শনিবার, বিকাল থেকে পরিচ্ছন্ন আকাশ ও সুন্দর আবহাওয়ায় শুরু হয় উৎসবের সূচনাপর্ব। সাহিত্য একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় সূচনাপর্বে দলীয় পরিবেশনা আবৃত্তি, নৃত্য ও গান। ছিল সৈকতের একক বাঁশরীর মন্ত্রমুগ্ধকর সুরের পরিবেশনা।
উৎসবের শেষ দিনে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শিল্প-সাহিত্য ও সঙ্গীতে বিশেষ অবদানের জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদকে সাহিত্য একাডেমির বৈশাখী উৎসব সম্মাননা প্রদানের মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক (উপসচিব) মোহাম্মদ রুহুল আমিন এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জাতি সত্ত্বার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। বিশেষ অতিথি ছিলেন এবছর বাংলা একাডেমির একুশে পদকপ্রাপ্ত বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃতি সন্তান ও সাহিত্য একাডেমির সদস্য কথাসাহিত্যিক নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হুছাইন (পিপিএম),সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, ত্রিপুরার বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অমিত ভৌমিক ও কবি আব্দল মান্নান সরকার। অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে দেন সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন এবং ফুল দিয়ে বরণ করেন সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সম্পাদক নূরুল আমিন।
সাত দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসবে ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শোভাযাত্রা, নাগরদোলা, মাটির তৈযসপত্র, শিশুদের খেলনা, খৈ, মুড়ি, মুরালিসহ নানান রকমের বাঙালিয়ানা খাবারের বাহার। ছিল বাউল গান, নাচ, গান ও আবৃত্তি। সাত দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসবে শহরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, দেশ বিদেশ থেকে আগত অতিথিবৃন্দদের উপস্থিতি উৎসবের আমেজ বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করেন সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সাহিত্য একাডেমির সহ-সভাপতি মানিকরতন শর্মা, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি পীযুষ কান্তি আচার্য। আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক পরিবেশন করেন জেলা শিল্পকলা একাডেমি, লোক সংস্কৃতি পরিষদ, সপ্তসুর সঙ্গীত নিকেতন ও সুরতাল সঙ্গীত নিকেতন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
Leave a Reply