সময়নিউজবিডি টোয়েন্টিফোর রিপোর্ট
গাজীপুরের টঙ্গীতে দুই শিশুকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তাদের মা সালেহা বেগম-এমনটাই জানিয়েছে পুলিশ। নিহত দুই ভাই-বোন হলেন মালিহা আক্তার (৬) ও মো. আবদুল্লাহ (৪)। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার সন্ধ্যায় টঙ্গীর আরিচপুর জামাইবাজার এলাকার সেতু ভিলা নামের একটি আটতলা ভবনের তৃতীয় তলায়। ওই ফ্ল্যাট থেকেই পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে। একইসঙ্গে উদ্ধার করা হয় রক্তমাখা একটি বঁটি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার জাহিদ হাসান শনিবার সকালে জানান, শুক্রবার মধ্যরাতে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সালেহা বেগম নিজেই সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করেন। তবে কী কারণে তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, তা এখনো পরিষ্কার নয়। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। নিহত শিশুদের বাবা আবদুল বাতেন মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তাতুয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পরিবার নিয়ে টঙ্গীর সেতু ভিলায় ভাড়া থাকতেন।
পুলিশ জানায়, ফ্ল্যাটে বসানো সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার সময় ওই বাসায় সালেহা বেগম ছাড়া আর কেউ যাতায়াত করেননি। ঘটনার পর তিনি নিজেই পাশের বাড়ি থেকে দুই দেবরকে ডেকে আনেন। তাঁর কথাবার্তা অসংলগ্ন হওয়ায় সন্দেহ তৈরি হয় এবং সন্ধ্যায় তাঁকে আটক করে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে মধ্যরাতে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, সালেহা বেগম মাইগ্রেনজনিত সমস্যায় ভুগতেন। তবে মানসিক কোনো জটিলতা ছিল কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শের পর বিষয়টি স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিন সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে ছিল নানার বাড়িতে। ঘটনার দিন দুপুরে শিশুদের বাবা, মা ও দাদি একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেন। এরপর মা ঘুমিয়ে পড়েন, দাদি ওপরতলায় বেড়াতে যান, আর বাবা বাইরে চলে যান। কিছু সময় পর সালেহার চিৎকারে দাদি নিচে এসে রক্তাক্ত দুই শিশুর দেহ দেখতে পান। পরে চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পুলিশ এসে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply