সংবাদ শিরোনাম
দীর্ঘদিন পর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্বে আসছে পরিবর্তন ; কারা আসছেন শীর্ষ পদে

দীর্ঘদিন পর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্বে আসছে পরিবর্তন ; কারা আসছেন শীর্ষ পদে

সময়নিউজবিডি ডেস্ক রিপোর্ট

বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্বের দীর্ঘসময় ধরে লেগে থাকা জট খুলছে। সাত বছর পর আসন্ন সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব পাচ্ছে সংগঠনটি। এবারের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। অবৈধ ক্যাসিনো ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হওয়ার পর আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতাদের নাম আসায় বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে নতুন ও নিবেদিত নেতাদের সামনে আনতে যুবলীগের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আরও তিনটি সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। এরই মধ্যে ক্যাসিনোকাণ্ডে নাম আসায় যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর মতোই স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মোঃ আবু কাওসার কে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথকেও আগামী কমিটিতে রাখা হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতেই আগামী ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর আগে ১১ ও ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সংগঠনটির গুরুত্বপূর্ণ দুই শাখা ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন। নেতৃত্বের পালাবদল ঘিরে পদ প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ চলছে পুরোদমে।
এদিকে আসন্ন সম্মেলনে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যে সকল নতুন মুখ আসবে এটি প্রায় নিশ্চিত। মোল্লা আবু কাওছারকে অব্যাহতি দেওয়ায় নতুন সভাপতি পাচ্ছে সংগঠনটি, । কারণ পঙ্কজ দেবনাথ দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর ধরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্বে রয়েছেন। বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে তীব্র কোন্দলে জড়িয়েছেন তিনি। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের অনেকেই পঙ্কজের ওপর বিরক্ত। ফলে স্বেচ্ছাসেবক লীগে তাকে আর না রাখার বিষয়টি অনেকটাই চুড়ান্ত।

সংগঠনটির তৃতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি আছে—এমন সৎ ও দলের দুঃসময়ে মাঠে থাকা নেতাদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হবে। নেতাদের নানা অপকর্মে ভাবমূর্তির সংকটে পড়া সংগঠনকে সঠিক ধারায় ফিরিয়ে সত্যিকার অর্থেই ‘স্বেচ্ছাসেবক’ লীগ গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে নেতৃত্বে দৌড়ে এগিয়ে থাকছেন ক্লিন ইমেজের নেতারা।

এ বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, ইমেজ নষ্ট, এমন কেউ নেতৃত্বে আসতে পারবে না। যারা নেতৃত্বে আসবে, তাদের অবশ্যই সৎ, অভিজ্ঞ এবং সাংগঠনিক হতে হবে।

সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী ছাত্রলীগের নেতারা ছাত্রজীবন শেষ করার পরের ধাপে মূলত আওয়ামী যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। কিন্তু এই দুটি সংগঠনে দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় ছাত্রলীগের অনেক পরীক্ষিত নেতা এসব সংগঠনে ঢুকতে পারেননি। অল্প কিছু নেতা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন উপকমিটির সদস্য হলেও বাকি অনেকেরই পরিচয় এখনও কেবল সাবেক ছাত্রনেতা। ফলে এবারের সম্মেলনে শীর্ষ পদ ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবক লীগের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে ছাত্রলীগের পরীক্ষিত নেতারাই জায়গা পেতে যাচ্ছেন।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় ও ঢাকার দুই শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে লড়াইয়ে অন্তত এক ডজনেরও বেশি নেতা রয়েছেন বলে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।

কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন সাচ্চু, সহ সভাপতি মতিউর রহমান মতি, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ,সহ-সভাপতি মঈন উদ্দীন মঈন  স্বেচ্ছা সেবকলীগের পানি সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান হেলাল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেনও কেন্দ্রীয় পদের লড়াইয়ে আছেন।

এছাড়া বর্তমান চার সাংগঠনিক সম্পাদক ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল হাসান জুয়েল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সোহেল রানা টিপু এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ শাকিব বাদশা, আব্দুল আলীম বেপারী রয়েছেন কেন্দ্রীয় শীর্ষ পদের লড়াইয়ে।

১৯৯৭ সালের তৎকালীন সংসদ সদস্য মকবুল হোসেনকে আহ্বায়ক করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রথম কমিটি হয়। পরে ২০০২ সালে প্রথম কাউন্সিলে সভাপতি নির্বাচিত হন বাহাউদ্দিন নাছিম, সাধারণ সম্পাদক হন পঙ্কজ দেব নাথ। সর্বশেষ ২০১২ সালে মোল্লা মো. আবু কাওছারকে সভাপতি এবং পঙ্কজ দেবনাথকে সাধারণ সম্পাদক করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি হয়েছিল। মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও ওই কমিটিই দায়িত্ব পালন করে চলছিল।

কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগরের উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন। ঢাকার দুই শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে লড়াইয়ে অন্তত এক ডজনেরও বেশি নেতা রয়েছেন বলে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০০৬ সালের ৩১ মে। উত্তরের সভাপতি নির্বাচিত হন মোবাশ্বের চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হন ফরিদুর রহমান খান। দক্ষিণের সভাপতি নির্বাচিত হন দেবাশীষ বিশ্বাস। সাধারণ সম্পাদক হন আরিফুর রহমান টিটু।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতৃত্বের লড়াইয়ে এগিয়ে রয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর ফারুক। বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারিক সাঈদ ও আবুল কালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সবেক সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান রানা!

ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান কমিটির সহসভাপতি গোলাম রাব্বানী ও শফিকুল ইসলাম, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ফরিদুর রহমান ইরান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফরোজ হাবীব ও হাবিবুর রহমান পান্না, সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, প্রচার সম্পাদক দুলাল হোসেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইসহাক মিয়া, মোহাম্মদপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক বাবু ও তিতুমীর কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক এজিএস আমজাদ হোসেন।


ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর। 

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com