স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাত্রী পরিবহনে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব মানছেনা ঢাকা-সিলেট,কুমিল্লা-সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা মহাসড়কের চলাচলরত যাত্রীবাহি বাসগুলো। একই অবস্থা জেলার অভ্যন্তরীন সড়কে চলাচলরত লোকাল বাসগুলোতেও। এনিয়ে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও বাধ্য হয়েই তারা ঝঁুকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক যাত্রীবাহি বাসগুলো চলাচলে মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করা হলেও পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা সরকারি নির্দেশনা মানছেন না। সুযোগ পেলেই তারা তাদের মনগড়ামতো যাত্রী পরিবহন করেন। একই অবস্থা সিএনজিচালিত অটোরিকসাগুলোতেও। যাত্রীরা দ্বিগুন ভাড়া দিয়ে বাধ্য হয়েই পরিবহনের মধ্যে গাদাগাদি করে বসতে হচ্ছে।
সদর উপজেলার সুলতানপুর এলাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-কুটি পথের লোকাল বাস দিগন্ত (কুমিল্লা ব ০৫-০০৪৭) বাসে দেখা যায় পুরো বাসেই দুই সীটে যাত্রী। বাসের হেলপার তাপস জানান, একই পরিবারের লোক হলে পাশাপাশি সিটে বসানো হয়। এর বাইরে কাউকে পাশাপাশি সিটে বসতে দেন না।
সদর উপজেলার সুলতানপুর এলাকায় একটি বাস (কুমিল্লা ট্রান্সপোর্ট, ঢাকা মেট্রো ব-১১- ১১৭৪) থেকে নেমে এক ব্যক্তিকে সারা শরীরে স্প্রে করতে দেখা যায়। ওই ব্যক্তিকে কাছে স্প্রে্র করার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাসে একজনের গা ঘেঁষে আরেক জনকে বসতে হয়েছে। অথচ ভাড়া নেয়া হয়েছে দ্বিগুন। সতর্কতা হিসেবে তিনি শরীরে স্প্রে করছেন।
হবিগঞ্জ জেলার মোঃ শামীম আহমেদ নামে এক ব্যক্তি গত শনিবার দুপুরে জানান, তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে দ্বিগুন ভাড়া দিয়ে বাসে উঠে দেখেন বাসের প্রতিটি সীটেই যাত্রী বসানো হয়েছে। নিরুপায় হয়ে তিনি ঝঁুকি নিয়েই ঢাকা যান।
সদর উপজেলার সুলতানপুর এলাকায় বিআরটিসি বাস (১১- ৫৫২০) থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে নামেন চঁাদপুর জেলার হাজিগঞ্জ উপজেলার মোঃ
ফয়জুল্লাহ। তঁার গন্তব্য আখাউড়া উপজেলার আজমপুর। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি অভিমুখী ওই বাসে তিনি পরিবার নিয়ে উঠেন চঁাদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থেকে। জনপ্রতি প্রায় দ্বিগুন ৬০০ টাকা ভাড়ায় উঠলেও বাসে স্বাস্থ্যবিধির বলাই ছিলো না। সব সিটেই পাশাপাশি করে লোক বসানো হয়।
এছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের সুলতানপুর ছাড়াও পৌর এলাকার ভাদুঘর, কাউতলী, পৈরতলা, বিশ্বরোড মোড়ে সরজমিনে ঘুরে বাসে যাত্রী পরিবহনের নৈরাজ্য লক্ষ্য করা গেছে।
ঢাকা-সিলেট, কুমিল্লা-সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা ছাড়াও জেলার আভ্যন্তরীন বাসগুলোতেও স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতি দুই সিটে এক যাত্রী বসানোর কথা বলে দেড় থেকে দ্বিগুন ভাড়া আদায় করা হলেও বাসের প্রতিটি সীটেই যাত্রী বসানো হয়। যাত্রীরা প্রতিবাদ করে এর কোনো সুরাহা পায় না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ঢাকাগামী, সোহাগ, তিশা, রয়েল কোচ ইকোনো, উত্তরা, তিতাসসহ বেশ কিছু পরিবহনের বাস বিশ্বরোড মোড়ে যাত্রাবিরতি দেয়। সংশ্লিষ্ট কাউন্টার থেকে ঢাকার যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া রাখা হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। কিন্তু বাড়তি ভাড়া দিয়েও যাত্রীরা ঠাসাঠাসি করে ঢাকায় যায়। বাসের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-ঢাকা পথের ইকোনো পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো ব ১১-৫৫৮৩) বাসে উঠে দেখা যায়, সামনে থেকে প্রায় শেষের সারি পর্যন্ত যাত্রী প্রায় পরিপূর্ণ। দুইজনের সিটে দুইজন করেই বসানো আছে। যাত্রীদের অনেকেই এ নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করলেও প্রতিবাদ করা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেন।
ঢাকা-সিলেট-সুনামগঞ্জ পথের নিউ লাইন বাসের (ঢাকা মেট্রো ব ১৫-০২৮৯) চালক মোঃ আলমগীর জানান, ‘যাত্রীরা দেড়গুণ ভাড়ায় উঠতে চায় না। তাই ভাড়া কম নিয়ে নিয়মের বেশি যাত্রী উঠাতে হয়। এছাড়া একই পরিবারের লোক হলে পাশাপাশি বসতে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মোঃ হানিফ মিয়া বলেন, সরকারিভাবে আমাদেরকে ভাড়া বৃদ্ধি ও যাত্রীর পরিবহনের বিষয়ে যে নিয়ম করে দেয়া হয়েছে সেটা মেনে বাস চলাচল করছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ বড়–য়া বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহন নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ি ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে কাজ করছে। এ বিষয়ে অভিযান আরো জোরদার করা হবে।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Excellent! 5 Stars.