সংবাদ শিরোনাম
কমলগঞ্জে শমশেরনগরে রেলপথ ঘেষে জমে উঠে অবৈধ পশুর হাট; দুর্ঘটনার আশঙ্কা নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নের লক্ষ্যে বাংলালিংক ও হুয়াওয়ের চুক্তি ডেঙ্গু ঠেকাতে সোমবার থেকে মাঠে নামছে ডিএনসিসি অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে আটকে পড়া ১৩ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন শেষ হলো সাহিত্য একাডেমির ৭ দিনব্যাপী “বৈশাখী উৎসব।। সচিব খলিল আহমদকে বৈশাখী উৎসব সম্মাননা প্রদান সরাইলে উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন বিএনপির প্রার্থী তপু লস্কর নবীনগরে তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষে একজন নিহত ও আহত-৩।। আটক-৪ কমলগঞ্জে নিরাপদ সড়ক চাই’র আইডি কার্ড বিতরণ ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত সাহিত্য একাডেমির বৈশাখী উৎসবের ৫ম দিনে নির্বাচিত গ্রন্থের প্রকাশনা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত সাহিত্য একাডেমির বৈশাখী উৎসবের চতুর্থ দিনে মুজিবনগর দিবস পালন

বিজয়নগরে হাট-বাজার ইজারার ৩০ লাখ টাকা ইউএনও মেহের নিগারের সি.এ’র পকেটে

বিজয়নগরে হাট-বাজার ইজারার ৩০ লাখ টাকা ইউএনও মেহের নিগারের সি.এ’র পকেটে

স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি    

দরপত্র আহবান করা হলেও প্রক্রিয়া বাদ দিয়েই হয়েছে হাট-বাজার ইজারা। ইজারাদারেরা মূল্য পরিশোধও করেছেন, অথচ টাকা জমা হয়নি সরকারি কোষাগারে! লাখ লাখ টাকাই গেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কনফিডেন্সিয়াল এ্যাসিসট্যান্টের (সি.এ) পকেটে! সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী- হাট-বাজার ইজারা হবে, সেই টাকা সরকারের বিভিন্ন খাতে যাবার কথা থাকলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় হয়েছে এর ব্যতিক্রম।
হাট-বাজার ইজারার দরপত্র আহবান করেও ‘ওপরের নির্দেশের কথা বলে দরপত্র প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে আগের ইজারাদারকেই দেয়া হয়েছে বরাদ্দ। ইজারাদাররা মূল্য পরিশোধ করলেও সেই লাখ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহের নিগারের সিএ কামরুল ইসলামের পকেটে যাওয়ায় দেয়া হয়নি ইজারার কোনো বৈধতা। 
সম্প্রতি ইউএনও মেহের নিগার এবং তার সি.এ কামরুল ইসলাম এই উপজেলা থেকে বদলী হবার পরই বেড়িয়ে আসতে থাকে তাদের এসব অনিয়ম। এ ছাড়াও ইউএনও মেহের নিগারের নাম ভাঙ্গিয়ে সি.এ. কামরুল ইসলাম উপজেলার জলমহল ইজারা দেওয়ার সময়ও ইজারাদারদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন।         
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাছিমা মুকাই আলী দু’টি বাজার ইজারার ২৫/৩০ লাখ টাকা সিএ কামরুলের পকেটে থাকার বিষয়টি এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন।      

এদিকে সরকারি হাট-বাজারসমূহের ব্যবস্থাপনা, ইজারা পদ্ধতি এবং এ থেকে প্রাপ্ত আয় বন্টন সম্পর্কিত নীতিমালাতে বলা হয়েছে, হাট-বাজারের ইজারা বাংলা সনের ভিত্তিতে (বৈশাখ-চৈত্র)এক বছরের জন্যে প্রদান করতে হবে। কোন বছরের যাবতীয় ইজারা কার্য্যক্রম পূর্ববর্তী বছরে ২০ চৈত্র’র মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে এবং ওই বছরের মাঘ মাস থেকে ইজারা প্রদান কার্যক্রম শুরু করতে হবে। কিন্তু বিজয়নগরে ঠিক সময়ে কোনটাই হয়নি। ১৪২৭ বাংলা সনের হাট-বাজার ইজারার জন্যে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয় ১৪২৬ সনের ৮ চৈত্রে (২২ মার্চ, ২০২০ইং)। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞপ্তি প্রচার করলেও রহস্যজনক কারণে দরপত্র সিডিউল বিক্রি বন্ধ রাখা হয়। পূর্বের ইজারাদারদের কাছ থেকে পূর্বমূল্য অনুসারে তাদের থেকে ইজারার সম্পূর্ণ টাকাও নেয়া হয়। 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিজয়নগর উপজেলায় মোট ১৮টি সরকারি হাট-বাজার রয়েছে। এসব হাট-বাজারের মধ্যে উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের সিঙ্গারবিল তহ বাজার দুই লাখ পাঁচ হাজার ১০০ টাকা, মেরাশানী বাজার তিন লাখ সাত হাজার ৫০০ টাকা, পাহাড়পুর ইউনিয়নের আউলিয়াবাজার দুই লাখ ২৫ হাজার ৭০০ টাকা, পাহাড়পুর বাজার ৩১ হাজার ৩০০ টাকা, মুকন্দপুর বাজার ১৯শ’ টাকা, চম্পকনগর ইউনিয়নের নূরপুর গরুর বাজার দুই লাখ ৮২হাজার ১০০ টাকা, নূরপুর তহ বাজার ৭১ হাজার ২০০ টাকা, হরষপুর ইউনিয়নের হরষপুর খেয়াঘাট বাজার ১০ হাজার ৮০০ টাকা, হরষপুর তহ বাজার এক লাখ ৫৫ হাজার ৭০০ টাকা, হরষপুর গরুর বাজার ২০ লাখ তিন হাজার ৫০০ টাকা, চান্দুরা ইউনিয়নের চান্দুরা গরুর বাজার এক লাখ ২২ হাজার ৭০০ টাকা, চান্দুরা তহ বাজার ৯৩ হাজার ৩০০ টাকা, আমতলী বাজার ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা, বুধন্তী ইউনিয়নের সাতবর্গ তহ বাজার ১৬ হাজার ৭০০ টাকা, ইসলামপুর তহ বাজার দুই হাজার ৮০০ টাকা, সাতবর্গ (খাতাবাড়ি) গরুর বাজার ৯৪ হাজার ৬০০ টাকা, ইছাপুরা ইউনিয়নের আড়িয়ল বাজার ১১ হাজার ৪৬৩ টাকা এবং বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর রানওয়ে বাজারের পূর্ব মূল্য দুই হাজার ৯০০ টাকা দরপত্রে দেখানো হয়। দরপত্র সিডিউল বিক্রি না করায় সরকার বাড়তি মূল্য পাওয়া থেকেও বঞ্চিত হয়। পূর্বের দর অনুসারে বাজারগুলোর মোট ইজারা মূল্য প্রায় ৩৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা হলেও ইজারাদারদের কাছ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহের নিগারের সি.এ কামরুল ইসলাম ৪০/৪২ লাখ টাকা আদায় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

এ বিষয়ে হরষপুর গরুর বাজারের ইজারাদার মো. আজিজ খন্দকার জানান, ইজারা মূল্য বাবদ ১০ লাখ টাকা তিনি সিএ কামরুলের হাতে দিয়েছেন। আরো ১০ লাখ টাকা দেবেন বলেও জানান। হরষপুর তহ বাজারের ইজারাদার মো. জুনায়েদ মিয়া বলেন, ‘এ বছর আমি বাজার ডাকতে গেলে আমাকে বলা হয় যারা সাবেক মালিক (ইজারাদার) তাদেরকে আবারো ইজারা দেয়া হবে। টেণ্ডার ছাড়াই সাবেক মূল্যে দেয়া হবে। এ ব্যাপারে আমি ক্লার্ক কামরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি আমাকে জানান, ওপরের নির্দেশেই তারা এভাবে বাজার ইজারা দিচ্ছেন।’ নুরপুর গরুর বাজার ও তহ বাজারের ইজারাদার দুলাল চৌধুরী জানান, ‘দুই বাজারের ইজারা মূল্য হিসেবে সাড়ে চার লাখ টাকা আমি ইউএনও সাহেবের সি.এ কামরুলের হাতে দিয়েছি।
এ ব্যাপারে ইউএনও’র সি.এ. কামরুল ইসলাম হাট-বাজার ইজারার টাকা তার পকেটে নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নায়েবদের কাছেই ইজারাদাররা টাকা জমা দিয়েছেন। তাছাড়া হাট-বাজার ইজারা কার্যক্রম এখনো চলমান আছে। 
বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসিমা মুকাই আলী বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহের নিগার ও তার সি.এ কামরুল ইসলাম আমাকে কিছুই জানাতো না।  তবে, চম্পকনগর বাজার ইজারার সাড়ে চার লাখ টাকা এবং হরষপুর বাজারের ২১ লাখ টাকা ইউএনও’র সি.এ. কামরুল ইসলাম নিয়েছেন বলে এখন পর্যন্ত আমি জানতে পেরেছি। 
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।    

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

One response to “বিজয়নগরে হাট-বাজার ইজারার ৩০ লাখ টাকা ইউএনও মেহের নিগারের সি.এ’র পকেটে”

  1. Muhammad Nazrul says:

    যারা তার প্রশংসা করতো তারা মূলত তার চামচা ছিল, হয়তো দশ টাকা, বিশ টাকা, বা পঞ্চাশ টাকার বিনিময়ে উলুউলু দিত।
    প্রকৃতপক্ষে তারাই এলাকার শত্রু, দশের শত্রু, দেশের শত্রু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com