স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, হেফাজতের কাঁধে ভরকরেই জামাত বিএনপি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব চালিয়েছে। যা ১৯৭১ সনে স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানিদের কাঁধে ভর করে সাধারন মানুষের বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছিল জামাত।
বুধবার (৩১ মার্চ) দুপুর ১২ টায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা পরিদর্শন করতে এসে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে হানিফ এসব কথা বলেন।
আওয়ামীলীগের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি। প্রতিনিধি দলের অন্যান্যরা হলেন – কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান।
মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি আরো বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের যে সকল সরকারি বেসরকারি স্থাপনায় ও আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বাড়িঘরে যে হামলা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে তা পুরোপুরি পরিকল্পিত হামলা। এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে এসব হামলায় যারাই জড়িত আছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনা পরিদর্শন করেছি, ও স্থানীয় জনসাধারনের সাথে কথা বলেছি বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে সরকার আমলে নিয়েছে। আমরা আমাদের দলীয় সভানেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রতিবেদন জমা দেব।
পুলিশ, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও জেলা প্রশাসন সহিংসতার সময় কেন নিরব ভূমিকায় ছিলেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, সেটাও আমরা খুঁজে বের করবো। কেন তারা জনগনের জানমাল রক্ষায় ও সরকারি স্থাপনা রক্ষায় এগিয়ে আসেনি। তাদের স্বস্ব দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। সর্বোপরি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহিংসতায় জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, প্রেসক্লাব সহ আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে ও আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করাও আশ্বাস দেন হানিফ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বেসরকারি দপ্তরে ও আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগ নেতাদের বাড়িঘরে হামলা অগ্নিসংযোগ ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনার বর্ণনা করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন। আওয়ামীলীগ নেতারা সহিংসতার ঘটনায় জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসন সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করে তাদের বিচার দাবি করেন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসতার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চান।
এদিকে আওয়ামীলীগ প্রতিনিধি দল ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব ও সাংবাদিকদের উপর হামলা ও ভাংচুর ঘটনা পরিদর্শনে আসলে প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন প্রতিনিধি দলকে জানান, বিগত সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যেসব আন্দোলন হয়েছে কোন আন্দোলনেই সাংবাদিক বা প্রেসক্লাবের উপর কোন হামলা হয়নি। কিন্তু স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে আসার প্রতিবাদে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও হেফাজতের টানা তিনদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তরে হামলা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের হাত থেকে সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবও রক্ষা পায়নি। প্রেসক্লাবে হেফাজতের তাণ্ডবে প্রায় এক ঘন্টা সংবাদকর্মীরা অবরুদ্ধ ছিলো। এসময় জেলার ডিসি এসপি ও আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত কাউকেই এগিয়ে আসতে দেখিনি। এমনকি তাদেরকে কল করে সহযোগিতা চেয়েও সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের সনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনার জন্যও প্রতিনিধি দলের কাছে অনুরোধ জানান সাংবাদিক এ নেতা।
স্থানীয় সাংসদের রাজনৈতিক উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহিদ খান লাভলু, কেন্দ্রীয় আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মঈনউদ্দীন মঈন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহ সম্পাদক আলামিনুল হক আলামিন, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভুইয়া, জেলায় কর্মরত স্থানীয় ও জাতীয় প্রিন্ট ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply