শামিম ইশতিয়াক, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
সিলভার কার্প একটি বিদেশি কার্প জাতীয় মাছ। দেশে প্রচুর পরিমাণে চাষ হলেও মাছটিতে কাঁটা বেশি থাকায় অনেকেই এ মাছ খেতে চান না। ফলে উৎপাদন বেশি হলেও চাহিদা কম থাকায় চাষিরা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন।
ভোক্তার অসুবিধাগুলো দূর করে বা প্যাকেট খুলেই খাওয়ার উপযোগী করে, মূল্য সংযোজন করতে পারলে চাষিরা লাভবান হবেন।
এ জন্য সব মানুষের কাছে সহজে কম মূল্যে আমিষ পৌঁছে দেয়া লক্ষ্যে ইলিশের পর এবার সিলভার কার্পের নুডুলস তৈরি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের একদল গবেষক।
গবেষক দলের প্রধান ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাতেমা হক শিখা। দলের অন্য সদস্যরা হলেন- সহযোগী গবেষক অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন, মাস্টার্সের শিক্ষার্থী লাবিবা ফারজানা পল্লবি এবং শামছুননাহার সীমা।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অর্থায়নে এবং বাকৃবি রিসার্চ সিস্টেমের তত্ত্বাবধানে দুই বছর গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
প্রধান গবেষক ড. ফাতেমা হক শিখা বলেন, মাছটিকে কাঁটামুক্ত ও স্বাদ অক্ষুণ্ন রেখে বিকল্প উপায়ে ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর জন্যই নুডুলসটি উদ্ভাবন করা হয়েছে।
তিনি জানান, সিলভার কার্পের নুডুলস তৈরির জন্য প্রথমে সিলভার কার্প মাছ থেকে মাংস সংগ্রহ করা হয়। এরপর একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাংস থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি ও চর্বি বের করে কিমা তেরি করা হয়।
নুডুলসটিকে বাজারজাত করার বিষয়ে এই গবেষক বলেন, বিভিন্ন নুডুলস বাজারজাতকরণ কোম্পানি আমার সঙ্গে কথা বলেছে। নুডুলসটি শিগগিরই বাজারে আনার চেষ্টা করছি।
নুডুলসয়ের গুণগত মান সম্পর্কে ড. ফাতেমা হক শিখা বলেন, প্রতি ১০০ গ্রাম নুডুলসে আমিষের পরিমাণ ২৩ দশমিক ৮০ শতাংশ, লিপিডের পরিমাণ ৮ দশমিক ৬ শতাংশ, শর্করার পরিমাণ ৫৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, অ্যাশ ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং পানির পরিমাণ ৯ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। এ ছাড়া ১০০ গ্রাম নুডুলস থেকে মোট ৩৯৪ দশমিক ৭৬ ক্যালরি পরিমাণ শক্তি পাওয়া যাবে।
পরীক্ষা করে দেখা গেছে, নুডুলসটি প্রায় এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা সম্ভব।
চলতি বছরের ৯ এপ্রিল পাঙ্গাসের শুকনো আচার ও পাউডার উদ্ভাবন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মৎস্য প্রযুক্তিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম নওশাদ আলম ও তার গবেষক দল।
এর আগে ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর ইলিশের স্যুপ ও নুডলস উদ্ভাবনের কথা জানান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম নওশাদ আলম ও তার দল। দীর্ঘ দেড় বছরের গবেষণায় তরা ওই সাফল্য অর্জন করেছিলেন।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply