স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মধ্যপাড়ার শান্তিবাগ এলাকার আব্দুল ওহেদের প্রথম স্ত্রীর সন্তাদের বিরুদ্ধে ২য় স্ত্রী ও সন্তানদের সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সম্পদের দাবি করলে উল্টো মারধর করা হয় ৬০ বছরের বৃদ্ধা আমেনা বেগমকে। তাদের পক্ষ নিয়ে বৃদ্ধা বয়সে আমেনা বেগমকে তালাক দিয়েছে স্বামী আব্দুল ওহেদ। এই ঘটনায় বিভিন্ন সাহেব সর্দারদের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোন সমাধান পায়নি ভুক্তভোগীরা। শেষ পর্যন্ত দারস্থ হয়েছেন আদালতের।
গত ২৬ জুন ২০২১ ইং তারিখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১ আদালতে ওহেদের তালাকপ্রাপ্ত দ্বিতীয় স্ত্রী আমেনা বেগম বাদি হয়ে মামলা দায়ের করলে আদালত মামলাটি নথিভুক্ত করতে সদর মডেল থানাকে নির্দেশ দেন।
মামলার আসামী করা হয় আমেনা বেগমের স্বামী আব্দুল ওহেদ, আব্দুল ওহেদের প্রথম স্ত্রীর ছেলে ওসমান গণী, সিদ্দিকুর রহমান ও মেয়ে কুলসুম বেগমকে।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী আমেনা বেগমের বড় ছেলে মোঃ ইদ্রিস আলী জানান, বিগত ২০০৮ সালে তার ছোট ভাই রবিউল ইসলামকে পরিবারের হাল ধরতে মালয়েশিয়া পাঠানো হয়৷ সে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া প্রবাস জীবন কাটাচ্ছে। ওই সময় থেকে রবিউল যা ইনকাম করতেন তা তার আগের মায়ের ঘরের সৎভাই মোঃ ওসমান গণী ও বাবা আব্দুল ওহেদের কাছে পাঠাতেন।
এমনকি রবিউল প্রবাস থেকে জানতেন দুই পরিবারের সবাই একসাথে বসবাস করছে। কিন্তু এক পর্যায়ে জায়গা সম্পত্তি আত্মসাত করার অসৎ উদ্দেশ্যে গত ২০১৫ সালে তার মা আমেনা বেগম ও তার ছেলেদেরকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল। তার পিতা আব্দুল ওহেদ মিয়ার প্রথম সংসারের ছেলে মোঃ ওসমান গণী ও সিদ্দিকুর রহমান এবং তার দ্বিতীয় মেয়ে কুলসুম বিভিন্নভাবে তাল-বাহানা করে ওহেদ মিয়ার সম্পত্তি দখল করার চেষ্টা করেন। এ জায়গা সম্পত্তি নিয়ে তার বাবা ওহেদ মিয়ার প্রথম পক্ষ ও দ্বিতীয় পক্ষের ভাই-বোনদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। তুচ্ছ যেকোন বিষয় নিয়ে আমেনা বেগমকে মারধোর করতেন ওহেদ মিয়া, তার ছেলে ওসমান, সিদ্দিকুর রহমান ও মেয়ে কুলসুম। যে কারনে দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী আমেনা বেগম ও তার ছেলেদের বাড়ি থেকে বের হতে বাধ্য হয়।
আমেনার ছোট ছেলে হাফেজ নুরুল্লাহ কান্না চোখে বলেন, তার বড় ভাই প্রবাসী রবিউল যায়গা কেনার জন্য তার পিতা ওহেদ মিয়া ও সৎভাই ওসমান গণীকে ধাপে ধাপে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা পাঠান। এসব টাকা দিয়ে শান্তিবাগে বসতবাড়ি সংলগ্ন ও পুকুরের অংশসহ ১২ শতাংশ যায়গা ক্রয় করেন ওসমান গণী। এসব বিষয়ে রবিউল জিজ্ঞেস করলে টাকা দিয়ে কি করলেন, তখন ওসমান গণী বলেন, আমাদের ৬ ভাইয়ের জন্য কিছু যায়গা ক্রয় করেছি। আমরা সবাই একসাথে থাকবো।
কিন্তু সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তার বাবা ওহেদ মিয়াকে জিম্মি করে তাদের ৬ ভাইয়ের যত জায়গা-সম্পত্তি আছে সব ওসমান গণী ও সিদ্দিকুর রহমানের নামে রেজিস্ট্রি করে ফেলেন৷ তারা নিজেদের জায়গা বলে দাবি করেন। এ জায়গার অংশদারিত্ব কেউ না। এসব বিষয় নিয়ে যখন প্রতিবাদ শুরু করেন ও এলাকার সর্দারদেরকে জানান, তখন তাদের পিতা ওহেদ মিয়াকে ভুলবাল বুঝিয়ে সম্পত্তি কিভাবে আত্মসাত করা যায় সেই পায়তারা শুরু করেন তারা। তারা এলাকার কারও কথা শুনেন না। দ্বিতীয় পক্ষের সবাই সম্পত্তির দাবি করায় তার বাবা ওহেদ মিয়াকে বাদী করে তাদের বিরুদ্ধে মারধোর ও চুরির মিথ্যে মামলা দায়ের করেন। ইদ্রিস আলী ও হাফেজ নুরুল্লাহকে হেফাজতে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠাবে বলে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
এ বিষয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম জানান, মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে৷ তদন্ত শেষে আদালতে যথাসময়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply