সংবাদ শিরোনাম
মোবাইল আসক্তি ঠেকাতে ও ক্যাম্পাসের পরিবেশ রক্ষায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ও মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ বিজয়নগরে জালনোট তৈরির সরঞ্জামসহ তিনজন আটক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত ছেলের কবরে বেড়া দিতে গিয়ে মারা গেলেন বাবা।। এলাকায় শোকের ছায়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শিক্ষা সপ্তাহ’র উদ্বোধন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরকে সম্প্রসারিত করে পরিকল্পিত নগরায়ন করা হবে: গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরী এমপি কমলগঞ্জে শমশেরনগরে রেলপথ ঘেষে জমে উঠে অবৈধ পশুর হাট; দুর্ঘটনার আশঙ্কা নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নের লক্ষ্যে বাংলালিংক ও হুয়াওয়ের চুক্তি ডেঙ্গু ঠেকাতে সোমবার থেকে মাঠে নামছে ডিএনসিসি অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে আটকে পড়া ১৩ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছেন শেষ হলো সাহিত্য একাডেমির ৭ দিনব্যাপী “বৈশাখী উৎসব।। সচিব খলিল আহমদকে বৈশাখী উৎসব সম্মাননা প্রদান

এক পা নেই, তবুও নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই প্রতিবন্ধী ফারজানা 

এক পা নেই, তবুও নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই প্রতিবন্ধী ফারজানা 

বিশেষ প্রতিবেদক//সময়নিউজবিডি
নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই প্রতিবন্ধী ফারজানা। প্রতিবন্ধীকতাকে হার মানিয়ে জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে চাই ফারজানা। যার জন্মগতভাবেই এক পা নেই। তারপরও ৮ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ফারজানার প্রবল আস্থা নিয়ে জীবন সংগ্রামে জয়ী হতে স্বপ্ন দেখছেন। তার নিষ্পলক চোখে নিজে এগিয়ে নেওয়ার অদম্য উচ্ছাস।
হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী ফারজানা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের গাজিরকান্দি গ্রামের বাছির মিয়ার মেয়ে। ২ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে ফারজানা তৃতীয়। সে গাজিরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত ৫ বছর আগে তার বাবা বাছির মিয়া মারা যান। তিনি মাছ ধরার কাজ করতেন। আর মাছ বিক্রি করেই সংসার চালাতেন বাছির মিয়া।

এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছেন প্রতিবন্ধী ফারজানা।

জন্মগতভাবে এক পা হারানো ফারজানা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে স্কুলে যায়। তার দু’হাতের আঙ্গুল গুলোও অপরিপূর্ণ। হতদরিদ্র পরিবারের পিতৃহারা মেয়েটি অনেক কষ্টে চালিয়ে যাচ্ছেন লেখাপড়া। প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে জীবনযুদ্ধে নিজেকে এগিয়ে নিচ্ছেন। স্বপ্ন দেখছেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে। কিন্তু পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতাই এখন তার বড় বাঁধা। তারপরও জীবন যুদ্ধ টিকিয়ে রেখেছেন ফারজানা।
প্রতিবন্ধী ফারজানার মা মোসাঃ বীনা বেগম জানান, ২০১৪ ইং সনে জন্ম হয় ফারজানার। জন্মগতভাবেই তার এক পা নেই। তবুও ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি তার আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। তার আগ্রহ দেখেই প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি করা হয়। ফারজানার বড় ভাই রাকিবও একই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। সে জন্য দুজনে এক সাথেই দু’জনে স্কুলে আসা যাওয়া করেন। অনেক কষ্ট করে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে আধ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে স্কুলে যেতে হয়। তবে যেদিন রাকিব স্কুলে যায় সেদিনই ফারজানা স্কুলে যায়। রাকিব না গেলে সেও স্কুলে যেতে পারে না। তারপরও প্রথম শ্রেণীতে ফারজানা ভালো রেজাল্ট করেছেন।
বীনা বেগম আরো জানান, খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে স্কুলে আসা যাওয়া করে শারীরিকভাবে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছেন ফারজানা। একটি কৃত্রিম পা প্রতিস্থাপন করতে পারলে মেয়েটির কষ্ট কম হতো। কিন্তু অভাবের কারনে কৃত্রিম পা সংযোজন করাও সম্ভব না। যদি কোন সুহৃদয়বান ব্যক্তি সহায়তা করেন তাহলেই অন্যসব ছেলে মেয়েদের মতো স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারতো।

মা বীনা বেগমের কোলে প্রতিবন্ধী ফারজানা।

এ ব্যাপারে গাজিরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হেলাল উদ্দিন এ প্রতিবেদককে জানান, ক্লাসের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের চেয়ে ফারজানার পড়াশোনার প্রতি গভীর মনোযোগ রয়েছে। প্রথম শ্রেণীতে ফলাফলও ভালো করেছে। তার আগ্রহ দেখেই আমরা তার উপর বিশেষ খেয়াল রাখি। তিনি বলেন ফারজানার হতদরিদ্র পরিবারের পাশে যদি কোন সামর্থ্যবান ব্যক্তি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে তার জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়া সম্ভব।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশিষ্ট সমাজকর্মী সুমন রায় ব্যক্তিগতভাবে একটি স্কুল ব্যাগ ও আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। তিনি তার ফেসবুক আইডিতে এ সংক্রান্ত একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেন। এতে তিনি লিখেন একটি কৃত্রিম পা সংযোজন করতে নিজের সাধ্যানুযায়ী সাহায্য করারও আস্বস্ত করেন ফারজানার মাকে।

প্রতিবন্ধী ফারজানাকে স্কুল ব্যাগ উপহার দিচ্ছেন সমাজকর্মী সুমন রায়।

নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একরামুল ছিদ্দিক জানান, ফারজানার স্কুলের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করা যায় কিনা সেটি দেখছি।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com