কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে প্রেমের সম্পর্কে বাড়িতে এনে বিয়ে করার দুই মাস সংসারের পর অত্যাচার করে ঘরদরজা বন্ধ করে পলাতক রযেছেন ফারজানা বেগম নামে এক নববধূর স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা। এতে করে ঘরের বারান্দায় ও উঠােনে দিন কাটছে নববধূর। ঘটনাটি উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের কান্দিগাঁও গ্রামে।
স্থানীয়দের অভিযোগে বুধবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কান্দিগাঁও গ্রামের কামরুজ্জামানের বাড়ির দু’টি ঘর তালাবদ্ধ। পশ্চিম ঘরের বারান্দায় ব্যাগের মধ্যে কাপড় চোপড় নিয়ে হতাশাগ্রস্ত নববধূ ফরাজানা বেগম। প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে আজাদুর রহমান (২৫) ও একই গ্রামের আহমদ আলীর কন্যা ফারজানা বেগম (১৯) কে ২০ জুলাই রাতে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। তারপর রাতেই দু’পক্ষের পঞ্চায়েত মিলে তাদের বিয়ে হলেও কাবিন সম্পন্ন হয়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গত ২০ জুলাই রাতে দু’পক্ষের উপস্থিতিতে তাদেরকে বিয়ে পড়ানো হয়। গত তিনদিন ধরে বাড়ির বারান্দায় মেয়েটি একা থাকার কারণে পার্শ্ববর্তী বাড়িতে আপাতত থাকার জন্য ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
এদিকে নববধু ফারজানা বেগম বলেন, দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কের পর গত ২০ জুলাই রাতে আজাদুর রহমান আজাদ আমাকে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। তারপর দুই পক্ষের পঞ্চায়েত মিলে আমাদের বিয়ে পড়ান। কিছুদিন যাওয়ার পর থেকেই আমার স্বামী চুল টেনে এবং স্বামীর বড় ভাই ও ভাইয়ের বৌ আমাকে নির্যাতন শুরু করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। তিনদিন ধরে তারা আমাকে ঘর থেকে বের করে দরজা-জানালা বন্ধ করে বাড়ির সবাই চলে যায়। আমি অসহায় হয়ে ঘরের বারান্দায় ও উঠােনে দিন কাটাই।
আজাদুর রহমানের মামাতো ভাই সালাহ্উদ্দীন ও কান্দিগাঁও গ্রামের পঞ্চায়েত নেতা মো. হান্নান বলেন, আজাদ মেয়েটিকে তার বাড়িতে আনার পর হাফেজ খোরশেদ আলী তাদের বিয়ে পড়িয়ে দেন। তবে বর্তমানে মেয়েটির উপর তারা অমানবিক আচরন শুরু করেছে। এখন মেয়েটি যেভাবে আছে তা খুবই ঝুঁকির মধ্যে।
অভিযোগ এর বিষয়ে জানতে চেয়ে আজাদুর রহমানকে পাওয়া না গেলেও আদমপুর বাজারে তার বড় ভাই নূর রহমান বলেন, মেয়েটা নিজে ইচ্ছে করে বাড়িতে আসে। তারপর মেয়েকে আমার ভাইয়ের সাথে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনদিন ধরে আমার ভাই নিখোঁজ রয়েছে।
এ ব্যাপারে আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন বলেন, বিষয়টি আপনারা সরেজমিনে গিয়ে বাস্তবতা বুঝে আসেন।কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সিফাত উদ্দীন বলেন, বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply