এনামুল হক খোকন//সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর
নিশিতা জাহান লাভলী, পিতা- মোস্তাক উদ্দিন আহমেদ, গ্রাম- নরহা, ডাকঘর- হরিনবের, থানা -নাসিরনগর, জেলা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
পৌরতলা জে এল নং-১৬৩, হালে-৬৩, বিএস চূড়ান্ত খতিয়ান নং-১৩৯, জমির পরিমান ১৫ শতক। এই ১৫ শতক জমির মধ্যে ৬ টি দোকান ঘর ও দ্বিতীয় তলা বিশিষ্ট একটি আবাসিক ভবন রয়েছে। গত ১৮ জানুয়ারি ১৯৯৮ সালে নিশিতা জাহান লাভলীর দাদা ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এই ১৫ শতক জমি ক্রয় করেন মোঃ হান্নান পাঠানের কাছ থেকে। ২০১০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী উনার ছেলে মোস্তাক উদ্দিন আহমেদ এর নামে রেজিস্ট্রি করে দেন। এদিকে মোস্তাক উদ্দিন আহমেদ বিগত ৪ জানুয়ারি ২০২০ সালে তিনি তার বড় মেয়ে নিশিতা জাহান লাভলীকে জমিটুকু রেজিস্ট্রি করে দেন।
মোস্তাক উদ্দিনের বাড়ি থেকে পৌরতলা ২৬ কিলোমিটার দূরে। কাঁচা রাস্তা ও ধুলোবালির কারনে যাতায়াতের বিরাট সমস্যা। এছাড়াও তিনি শাহাজাহান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে ব্যস্ততার মধ্যে থাকতেন সবসময়। তাই উনার সুপরিচিত শাহানুর ইসলাম দোকানপাটের ভাড়া সংগ্রহ করে দিতেন।
এক পর্যায়ে শাহানুর ইসলাম ও তার অঙ্গ সংগঠনের লোকেরা এই জায়গা অবৈধভাবে দখল করে নেন। ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ইং তারিখে এদের ১৫/২০ জন লোক যায় নিশিতা জাহান লাভলীর বাড়িতে জমিটুকু রেজিস্ট্রি করে নেওয়ার জন্য। তাদের এ প্রস্তাব অস্বীকার করায় বিভিন্ন রকম হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়। নিশিতা জাহান লাভলী ও তার পরিবারের সবাই সাহায্যের জন্য চিৎকার করলে আশেপাশের প্রতিবেশীরা সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে। তৎক্ষনাৎ শাহানুর ইসলাম ও তার অঙ্গ সংগঠনের লোকেরা দ্রুত পালিয়ে যায়। এ ঘটনা দেখে মোস্তাক উদ্দিন আহমেদ অত্যন্ত ভয় পেয়ে যান। যে কারনে তিনি তারাতাড়ি উনার মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ আল মাহমুদ এর সাথে।
বিয়ের পর নিশিতা জাহান লাভলী এই জায়গা সম্পর্কিত বিস্তারিত সমস্যা উনার স্বামীর সাথে শেয়ার করেন। বিগত ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২ তারিখে নিশিতা জাহান লাভলী ও তার স্বামী ও কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ার সহ এসেছিলো তাদের পৌরতলার জায়গার পুরাতন দোকানপাঠ গুলো পুনঃসংস্কারের মাধ্যমে আধুনিক সুপার মার্কেটে রূপান্তরের জন্য। এসময় দূর্বৃত্তরা উনাদেরকে একটি রুমে বন্দী করে অমানবিকভাবে মারধর করে।
এ ব্যাপারে নিশিতা জাহান লাভলীর পিতা মোস্তাক উদ্দিন আহমেদ জানান, গর্ভাবস্থায় থাকা সত্বেও রেহাই পায়নি নিশিতা জাহান লাভলী। ভয়ে কেউ এদেরকে সাহায্যের জন্যও এগিয়ে আসেনি। খবর পেয়ে নিশিতা জাহান লাভলীর পিতা ও ছোট ভাই এসে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে তিতাস শিশু ও জেনারেল হাসপাতালে। উনারা এই হাসপাতালে ৫/৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকার ফলে শারীরিক সুস্থতা ফিরে পান।
এদিকে, বিগত ৬ এপ্রিল ২০২৩ ইং তারিখে দূর্বৃত্তরা আবারও আক্রমণ করে নিশিতা জাহান লাভলীর উপর উনার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করে নেওয়ার জন্য। এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আবারও মেরে অজ্ঞান করে ফেলা হয় উনাকে। এসময় প্রতিবেশীরা এসে তারাতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। এরপর থেকে নিশিতা জাহান লাভলী, তার স্বামী মোঃ আল মাহমুদ ও এক বাচ্চা সহ কোথায় আছে কেউ বলতে পারেনা।
আমাদের এক প্রতিনিধি দল নিশিতা জাহান লাভলীর পিতা-মাতা ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ির সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারি নিশিতা জাহান লাভলী ও তার স্বামী আল মাহমুদ এর উপর ঘটে যাওয়া উপরোক্ত ঘটনা ছাড়াও বিভিন্ন মিথ্যা মামলা ও প্রাননাশের হুমকি দেওয়া হয়। সে কারণে এরা কোথায় আছে পরিবারের কেউ বলতে আগ্রহী নয়। এসময় আমরা জোর দিয়ে জানতে চাইলে নিশিতা জাহান লাভলীর পিতা বলেন,আমার মেয়ে, জামাই ও নাতনীকে আপনারা কি চান ওরা মেরে ফেলুক।
১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং শাহাদাত হোসেন রনি ও তার অঙ্গ সংগঠনের লোকেরা শাহানুর ইসলাম এর দলকে বিতারিত করে নিশিতা জাহান লাভলীর জায়গা দখল করে নেয়। এবং পুরাতন সকল ব্যবসায়ীকে বিতারিত করে ঐ জায়গায় এদের দলের প্রধানের নামে ব্যানার টাঙ্গিয়ে দেয়।
নিশিতা জাহান লাভলীর পিতা আমাদের প্রতিনিধি দলকে জানায়, শাহাদাত হোসেন রনির দলের লোকেরা দফায় দফায় আমাদের বাড়িতে আসতেছে এবং আমাদেরকে নানা রকম হুমকি দিতেছে। আমার মেয়ে কোথায় আছে বলার জন্য। নিশিতা জাহান লাভলীর শ্বশুর জানান, শাহাদাত হোসেন রনির দলের লোকেরা আমার বাড়িতে আসে কয়েক দিন পরপরই আমার ছেলে ও ছেলের বউয়ের খোঁজে। এসময় তারা বিভিন্ন রকম গালাগালি ও প্রাননাশের হুমকি দিতেছে।
নিশিতা জাহান লাভলী ও তার স্বামীর উপর ঘটে যাওয়া এরকম অমানবিক অন্যায় অত্যাচার প্রায়ই বিরল। হতাশায় জর্জরিত হয়ে জীবন বাঁচাতে উনারা যেখানেই লুকিয়ে থাকুক না কেন উনারা ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক এই কামনা করি।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply