স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাত্রীবেশে ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের জালে আটক হয়েছেন আন্তঃজেলা ছিনতাইকারী চক্রের তিন সদস্য।
বৃহস্পতিবার (০৫ ডিসেম্বর) রাতে কুমিল্লা সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর বাজারে বেরিকেড দিয়ে ছিনতাইকারীদের আটক করেন সদর মডেল থানা পুলিশ। এসময় ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার, ছিনতাই হওয়া টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করেন পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত ০৫/১২/২০১০৯খ্রিঃ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২২.৩০ ঘটিকায় সরাইল থানাধীন শাহবাজপুরের আজিজুর রহমান এর ছেলে নাদিম ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর হতে ব্যক্তিগত কাজ শেষে সিএনজি যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল থানাধীন বিশ্বরোড এলাকায় নামার পর শাহবাজপুর এলাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে গাড়ীর জন্য অপেক্ষাকালে হঠ্যাৎ একটি প্রাইভেটকার এসে তার সামনে থেমে সিলেটে যাওয়ার যাত্রী আছে কিনা বলিয়া ডাকতে থাকে। এ সময় ছিনতাইকারী চক্রের ০২ জন লোক এসে প্রাইভেটকারের ড্রাইভার ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য সরাইল থানাধীন নোয়াগাঁও এলাকার মৃত হোসেন মিয়ার ছেলে সুজন তার দলের ০২ জন সদস্যকে বলতে থাকে সিলেট যেতে ২০০ টাকা ভাড়া লাগবে। এ সময় ছিনাইকারী চক্রের ০২ সদস্য মোঃ আতাহার আলী ও ইশারত মন্ডল যাত্রী সেজে ড্রাইভারের সাথে দর কষাকষি করে ১৫০/- টাকায় সিলেট যেতে রাজি হওয়ার অভিনয় করে। ড্রাইভারের পাশের সিটে স্বপন নামে অপর ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য বসা থাকে। এ সময় ভিকটিম নাদিম শাহবাজপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে উক্ত গাড়ীতে করে শাহবাজপুর নামলে কত টাকা ভাড়া লাগবে জানতে চাইলে প্রথমে তারা রাজি না হওয়ার অভিনয় করে জানায় যে, তারা সিলেটগামী যাত্রী খুঁজছে। একপর্যায়ে নাদিম ৫০/- টাকা ভাড়া দেয়ার প্রস্তাব দিলে তারা রাজি হয়ে নাদিমকে গাড়ীতে তুলে ছাই কালারের প্রাইভেটকার ঢাকা মেট্রো গ-১৩-০৯৩৪ নাম্বারধারী ছাই কালারের প্রাইভেটকারটি বাড়িউড়া পৌঁছার পর কারের পিছনের সিটে বসা ইশারত মন্ডল, নাদিমকে তার কাছে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন দিয়ে দিতে বলে। নামিদ প্রথমে তাদের কথামত টাকা ও মোবাইল ফোন দিতে অস্বীকৃতি জানালে গাড়িটি থামিয়ে ড্রাইভার সুজন পিছনের সিটে ঝুকে নাদিমের চুল টেনে ধরে এবং আতাহার আলী, ইশারত মন্ডল ও স্বপন মিলে নাদিমকে কিল ঘুষি মারতে থাকে। একপর্যায়ে নাদিমের পকেটে থাকা ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা ও ০২টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। নাদিম তাদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে তাকে নামিয়ে দেওয়ার কাকুতি-মিনতির একপর্যায়ে তাকে গাড়ী থেকে ধাক্কা দিয়ে বাড়িউড়া ফেলে দিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সিলেট এর দিকে যেতে থাকে। নাদিম আহত অবস্থায় একটি সিএনজি ড্রাইভারকে থামিয়ে ঘটনাটি বলে। এসময় সিএনজি ড্রাইভারের মোবাইল ফোন থেকে ফোন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ কন্ট্রোল রুমকে জানান।
পরে ঘটনাটি শুনে পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুর রহমান এর সার্বিক দিক নির্দেশনার আলোকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতী প্রাপ্ত) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন, পিপিএম সেবা এর তদারকিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা, সরাইল থানা, আশুগঞ্জ থানা, বিজয়নগর থানার সমন্বয়ে একাধিক চেকপোস্ট বসিয়ে প্রাইভেটকারটি আটকের চেষ্টাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার স্পেশাল-৪ এর ডিউটিরত এসআই/ সুমন চন্দ্র চক্রবর্তী সঙ্গীয় ফোর্সসহ সুহিলপুর বাজারে বেরিকেড দিয়ে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত কার ও ছিনতাইকরী চক্রের সদস্যদের আটকের চেষ্টা করলে কারটি মিশুক মনি নামক পেট্রোল পাম্পে কারটি ঢুকিয়ে পলায়নের চেষ্টাকালে ছিনতাইকারী ইশারত মন্ডল, মোঃ আতাহার আলী ও ড্রাইভার সুজনকে ধৃত করে। উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে ড্রাইভার সুজনের পকেট হতে ছিনতাইকৃত নগদ ১০,০০০/- (দশ হাজার) টাকা, ইশারত মন্ডল এর কাছ থেকে একটি লুন্ঠিত ঙচচঙ মোবাইল ফোন এবং ছিনাতাইকারী চক্রের অপর সদস্য আতাহার আলীর কাছ থেকে একটি ঝঅগঝঅঘএ উটঙঝ বাটন মোবাইল উদ্ধার করা হয়। এ সময় অপর ছিনতাইকারী স্বপন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহসড়ক, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কসহ গাজীপুর, টঙ্গী, ময়মনসিংহ, চন্দ্রা, নবীনগর এলাকায় তারা দীর্ঘদিন যাবৎ যাত্রী বেশে লোকজনের সর্বস্ব লুন্ঠন করে আসছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে গাজীপুর, টাঙ্গাইল, শেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে মর্মে জানা যায়। এ বিষয়ে সরাইল থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply