নজরুল ইসলাম দয়া//নিজস্ব সংবাদদাত, ঢাকা
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে চিকিৎসকদের পরই সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করছে পুলিশ। দিন-রাত এক করে দেওয়া পুলিশের মধ্যে করোনাতাংক বিরাজ না করলেও ইতিমধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন অনেক পুলিশ সদস্য। নিজের জীবন বাজি রেখে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে পুলিশ সদস্যরা। সারাদেশে পুলিশের ভুমিকার প্রশংসা করছেন সাধারণ মানুষ। রাস্তায় চলাচলরতমানুষকে করোনা রোধে সচেতন করার প্রচেষ্টা করছে পুলিশ সদস্যরা। মৃতদেহ দাফন থেকে শুরু করে কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তা ও পুলিশের নানামুখী সচেতনতামূলক কাজে নেটি দুনিয়া সহ সর্বত্রই এখন পুলিশের প্রশংসা চলছে।
মানবিক পুলিশের পাশাপাশি কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) নেতৃবৃন্দ। বগুড়া সহ সারাদেশে জেলা-উপজেলায় সরেজমিনে ঘরে ঘরে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী দিচ্ছেন তাঁরা।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে চলছে সাধারণ ছুটি। কিন্তু ছুটি নেই পুলিশের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে দিন-রাত কাজ করছে। শুধু আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নয়, কাজ করছে সব শ্রেনীর মানুষের জন্য। সব রকম কাজ। সাধারণ মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, সেজন্য ঘরে ঘরে খাবার সামগ্রীও পৌছে দিচ্ছে
পুলিশ সদস্যরা। করোনা দুর্যোগের মধ্যে কেউ মারা গেলে স্থানীয় লোকজন এমনকি পরিবারের লোকজনও মৃতদেহের কাছে আসছে না। জানাযা থেকে দাফন পর্যন্ত করছে পুলিশ। সম্প্রতি বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় করোনা আতঙ্কে কবর খুঁড়তেও বাধা দেয় স্থানীয়রা। পরে এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার ওসি সহ পুলিশ সদস্যরাই করে জানাযা এবং দাফন।
অন্যদিকে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের দাফনে জমি দিয়েছেন বরিশালের বানারীপাড়া থানায় কর্মরত এএসআই জাহিদুল ইসলাম জাহিদ। পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুবিদখালি ইউনিয়নের দেউলি এলাকায় ১৭ শতাংশ জমি দান করেছেন কবরস্থানের জন্য।
এছাড়া করোনার দুর্দিনে ঘরে থাকা পরিবারে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিতে ব্যতিক্রম কার্যক্রম করে চলেছেন বগুড়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলী আশরাফ ভুঞা। কর্মহীনদের বাড়িতেও খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে পুলিশ সদস্যরা। পুলিশ সুপারের আকস্মিক আগমনে অবাক হন অনেকে। হঠাৎ খাবার নিয়ে বাড়িতে
পুলিশ আসায় মন ভরে যাচ্ছে কর্মহীনদের।
এবার জেলা পুলিশের পাশাপাশি করোনা দুর্যোগে কর্ম-হারানো খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বগুড়া পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক)। ত্রাণ বিতরণের পরিধি বৃদ্ধি করা হচ্ছে বলেও গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বগুড়ার সভানেত্রী রোমানা আশরাফ। খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে
জেলা সদর সহ নন্দীগ্রাম উপজেলা, ধুনট ও শেরপুর উপজেলা এবং শাজাহানপুর থানা এলাকার খেটে খাওয়া কর্মহীনদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) মুঠোফোনে বগুড়া পুনাকের সাধারণ সম্পাদিকা মঞ্জুরী ইসলাম বলেন, জেলা পুলিশের পাশাপাশি করোনা দুর্যোগে কর্ম-হারানো খেটে খাওয়া মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানোর চেষ্টা করছি আমরা। মানুষ মানুষের জন্য। সমাজের প্রত্যেক বিত্তবানরা নিজেদের অবস্থান থেকে নিজ নিজ এলাকার কর্মহীন খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়ালে খাদ্যের অভাব হবে না বলে মন্তব্য করে পুনাকের নেত্রী মঞ্জুরী ইসলাম বলেন, আমাদের
সভানেত্রীর (রোমানা আশরাফ) প্রচেষ্টায় ত্রাণ বিতরণের পরিধি বৃদ্ধি করে এ কার্যক্রম চলমান রাখবে বগুড়া পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক)।
এদিকে, করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.বেনজীর আহমেদ জানিয়েছেন, ‘রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালসহ পুলিশের অন্যান্য হাসপাতালগুলোতে করোনা সংক্রান্ত চিকিৎসা সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। বিভাগীয় পর্যায়েও নেওয়া হয়েছে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা। করোনায় আক্রান্ত পুলিশের যেকোনও সদস্যের
সুচিকিৎসাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ‘পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের পাশে বাংলাদেশ পুলিশ রয়েছে।
সাধারণ মানুষের কল্যাণে পুলিশের সব সদস্যের ত্যাগ ও মানবিক কার্যক্রমের প্রশংসা করে ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘জনগণের কল্যাণে সেবার এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। দেশের সাধারণ জনগণ ও গুণীজনদের যে অকুণ্ঠ ভালোবাসা ও প্রশংসা পুলিশ পাচ্ছে, তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে মানুষের কল্যাণে পুলিশ কাজ করে যাবে।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply