বিশেষ প্রতিবেদক//সময়নিউজবিডি 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী উপজেলা বিজয়নগর সীমান্তে মাদক সম্রাট শফিকুল ইসলাম প্রকাশ্য শফিক ওরফে ইয়াবা শফিক ও ইয়াবা নয়ন মিয়ার মাদক চোরাচালান যেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে চলছে। তাদের লাগাম টেনে ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রক্ষাকারী বাহিনীর যেন দেখেও না দেখার বান করে আছে বলেও অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাদের মাদক চোরাচালান বন্ধে সীমান্তে র্যাবের অভিযান পরিচালনা চান এলাকাবাসী।    
সরজমিন ঘুরে দীর্ঘ অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী উপজেলা বিজয়নগর। এ উপজেলার পূর্বপাশ জুড়ে রয়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা সীমান্তের কাঁটাতার। উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের সেজামুড়া গ্রামটি একদম সীমান্ত ঘেষা হওয়ায় সেখান দিয়েই বিজয়নগর উপজেলার ৮০% মাদক ব্যবসায়ী সীমান্তের ওপার থেকে মাদকদ্রব্য এপাড়ে নিয়ে আসেন। 
সেজামুড়া গ্রামের হেবজু মিয়ার ছেলে নয়ন সীমান্তের ওপার থেকে বাংলাদেশে খুব সহজেই মাদকদ্রব্য আসতে পাড়েন। একাজে তার লাইনম্যান হিসেবে কাজ করে ৪০/৫০ জন লেবার। তাদের কাজ হচ্ছে সীমান্তের ওপার থেকে ভারতের মাদক ব্যবসায়ীরা এপাড়ে তাদের সিন্ডিকেটের লোকের কাছে ঢিল, প্লাস্টিকের পাইক দিয়ে পৌঁছে দিলে সেখান থেকে নয়নের লেবাররা মাদকদ্রব্যগুলো সীমান্তের কাঁটাতার এর নিচ থেকে হাতে নিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা। সেখান নয়ন ও তার লেবাররা রাতে ও দিনের বিভিন্ন সময় একই উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের টানঘেরাগাওঁ এলাকার ইদন মিয়ার ছেলে মাদক সম্রাট শফিক এর বাড়িতে পৌঁছে দেন। সেখান থেকে নৌকাযোগে, সড়কপথে জেলার বিভিন্ন উপজেলাসহ আশপাশের জেলায় মাদক চোরাচালান করেন শফিক ও নয়নের মাদকের লাইনম্যান ও লেবাররা। 
এদিকে মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাদক অভিযান থেকে খানিকটা দূরে চলে যাওয়ায় এর সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীরা অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেকটা নিরাপদেই তাদের মাদকের বড় বড় চালান পৌঁছে দিচ্ছেন গন্তব্যে। এতে করে মাদক চোরাচালান ও মাদকাসক্তের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলছে। 
সেজামুড়া গ্রামের একাধিক বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পুলিশ ও বিজিবিকে ম্যানেজ করে মাদকে নিরাপদভাবেই মাদকের চোরাচালান করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেজামুড়া গ্রামের এক স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানান, সরকার যেখানে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক অভিযানে ক্রসফায়ারের ঘটনাও ঘটছে সেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর সীমান্তে পুলিশ ও বিজিবির চোখ ফাঁকি নাকি তাদেরকে ম্যানেজ করেই হচ্ছে মাদক চোরাচালান এমন প্রশ্নও এখন জনমনে। 
সীমান্তের এই শীর্ষ মাদক সম্রাটরা হলেন জেলার বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের টানঘেড়াগাঁও এলাকার মৃত ইদন মিয়া (ইদাত উল্লাহর) ছেলে মাদক সম্রাট শফিকুল ইসলাম প্রকাশ্য শফিক। অপরদিকে একই উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের সেজামুড়া গ্রামের মোঃ হেবজু মিয়ার ছেলে মোঃ নয়ন মিয়া। দুজনের নামেই মাদক চোরাচালানের ঘটনায় বিভিন্ন সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন থানা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মাদক সম্রাট শফিকুল ইসলাম প্রকাশ্য শফিকের মাদকের চালান আটক হয়। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানা পুলিশের অভিযানে মাদক উদ্ধারসহ আটক এর ঘটনায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে শফিকের নামে। যার মধ্যে বিজয়নগর থানার মামলা নং-৩৯, তারিখ ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ইং, ধারা-১৯(১)এর ৯(খ)১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিজয়নগর থানার মামলা নং-৩৭/২৭৭,তারিখ ১৪ জুন ২০২০ ইং, ধারা-৩৬(১) এর ৯(খ)/৩৮/৪১ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ ইং।    
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।