ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডাঃ একরাম উল্লাহ বলেছেন, যেসকল বেসরকারি হাসপাতাল জনবান্ধব এবং গুণগত সেবা প্রদান করতে ব্যর্থ হবে সেসকল হাসপাতালের রেজিস্ট্রেশন বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবার দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠার জন্য হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত সকল কর্মকর্তাকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টান্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর উদ্যোগে গতকাল ২৪ আগস্ট ২০২০ তারিখ সোমবার রাত ০৮:০০ টায় জেলা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ও নাগরিকবৃন্দের অংশগ্রহণে “ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় করোনাকালীন সংকটে স্বাস্থ্যসেবা: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়” শীর্ষক ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া করোনা শনাক্তে সরকারিভাবে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের অনুমোদন হয়েছে এবং ইতোমধ্যে জেলা সদর হাসপাতাল সেন্ট্রাল অক্সিজেন স্থাপন হয়েছে। তিনি সকলের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রোগিবান্ধব ও স্বাস্থ্যবান্ধব সেবা চালুর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সনাক সভাপতি প্রকৌশলী মোঃ রফিকুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন। তিনি বলেন জনবল সংকট থাকার কারণে সবসময় স্বাস্থ্যসেবার মান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়না। তবে কোন কর্মীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ আসলে তাকে জবাবদিহিতা এবং শাস্তির আওতায় আনা হবে।
সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. আবু সাঈদ বলেছেন, আমার হাসপাতালে কোভিড-১৯ রুগীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান সম্পর্কে ধারণা প্রদান করার পাশাপাশি নাম সর্বস্ব বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সিভিল সার্জনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সনাক সহ সভাপতি আবদুন নূর এর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য প্রদান করেন ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ও কোভিড – ১৯ হাসপাতাল পরিচালনার সমন্বয়কারী ডা. মোঃ একরামুল রেজা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পি, চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আজিজুল হক, সামাজিক সংগঠন উদিচির সভাপতি জহিরুল ইসলাম, আয়কর উপদেষ্ঠা কামাল উদ্দিন, কাজি শফিকুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মাসুদ উর রহমান, চেতনায় স্বদেশ গ্রন্থাগার এর সভাপতি আমির হোসেন এবং সনাক সদস্য জয়দুল হোসেন। বক্তারা করোনাকালীন সময়ে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন, হাসপাতালের জনবলের সংকট, চিকিৎসকদের সময়ানুবর্তিতা ও দায়িত্বশীলতা, করোনা শনাক্তের রিপোর্টে দায়িত্বরতদের স্বাক্ষর না থাকা, হাসপাতালগুলোতে নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসা প্রদানে হয়রানি, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে পরীক্ষার ফি নেয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ অন্যান্য অনিয়ম, জেলা সদর হাসপাতালে কর্মচারীদের সেবার বিপরীতে অনৈতিকভাবে অর্থ আদায়, হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম এবং সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষার ক্ষেত্রে রোগিদের হয়রানি ইত্যাদি বিষয়ে মতামত প্রদান করেন।সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন সেবাগ্রহীতা, বিভিন্ন পেশাজীবি প্রতিনিধিবৃন্দ এবং সনাক ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও টিআইবি’র বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য ও কর্মীবৃন্দ। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)।
Leave a Reply