সংবাদ শিরোনাম
নবীনগরে পুকুর থেকে অজ্ঞাত শিশুর মরদেহ উদ্ধার কমলগঞ্জে ‘পার্টনার ফিল্ড স্কুল কংগ্রেস’ নানা কর্মসূচিতে কমলগঞ্জে গুড নেইবারস এর পরিচ্ছন্নতা অভিযান ঢাকাস্থ চম্পকনগর ইউনিয়ন সমিতি গঠনের লক্ষ্যে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত কমলগঞ্জে ৬ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের দুই ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিটিজেএ সভাপতিরসহ পরপর তিন টিভি সাংবাদিকের মোটরসাইকেল চুরি কমলগঞ্জে স্কাউটের ব কাব কার্নিভাল ২০২৫ কমলগঞ্জে অভিভাবক -ছাত্র -শিক্ষক সমন্বয় সভা লালমনিরহাটে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে বাবা-ছেলে আটক বিজয়নগরে পুকুর দখলকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ।। আহত- ৭।। একজনে হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন
ডাক্তারের কক্ষে তালা; হাসপাতালে রোগীর ভীড়

ডাক্তারের কক্ষে তালা; হাসপাতালে রোগীর ভীড়



শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত, লালমনিরহাট প্রতিনিধি

আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে লালমনিরহাটে বেড়েছে ভাইরাসজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব। ঘরে ঘরে আক্রান্ত হচ্ছে সবাই। তবে এর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যাই বেশি। হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহি. বিভাগে বেশ কিছু শিশু রোগী দেখা গেলেও তারা চিকিৎসা পাচ্ছে না ডাক্তারের অভাবে।
জানা গেছে, গত কয়েক দিনের ভ্যাপ্সা গরম হওয়ায় অনেকেই জ্বর, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। এ বৈরী আবহাওয়া প্রাণী দেহে অসহনীয় হয়ে পড়ায় নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ভাইরাস জ্বর ও ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হলে ওষুধ সেবন করেও তিন দিনের আগে আরোগ্য লাভ হচ্ছে না। আক্রান্তদের ন্যূনতম ৩-৫ দিন ভুগতে হচ্ছে। কোনো কোনো পরিবারে সব সদস্য এক সঙ্গে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় সেবা করার লোকও পাচ্ছেন না তারা। 
হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জানা যায়, গত ৩ দিনে ভাইরাস ও আবহাওয়াজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ ৩৭ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। বহি. বিভাগ ও জরুরী বিভাগেও ২ শতাধিক শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। 
গতকাল শনিবার ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, বহি. বিভাগের চিকিৎসার জন্য অনেকেই শিশু নিয়ে অপেক্ষা করলেও শিশু কনসালটেন্ট ডা. মোস্তফা জামানের কক্ষে তালা ঝুলছে। 
বহি. বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের সাথে কথা হলে তারা অভিযোগ করেন, শিশুকে নিয়ে বহি. বিভাগে ডাক্তারের সেবা নিতে এসে দেখি ডাক্তারের কক্ষে তালা লাগানো। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহি. বিভাগে বেশ কিছু শিশু রোগী দেখা গেলেও তারা চিকিৎসা পাচ্ছে না ডাক্তারের অভাবে। তবে শিশু কনসালটেন্ট ডা. মোস্তফা জামানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ছুটিতে আছি। আগামীকাল আসেন কথা হবে।  সড়ে জমিনে দেখা গেছে, ঘরে ঘরে এ ভাইরাস জ্বরে আক্রান্তরা প্রায় সবাই স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক সেবনও বেড়েছে। যারা ৭-১০ দিনের আক্রান্ত তারা ছুটছেন জেলার হাসপাতাল বা ক্লিনিকে। তবে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকদের মতে এটি আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত ভাইরাস জ্বর। আতঙ্কিত না হয়ে আক্রান্তদের আলাদা বিছানায় রেখে সেবা করতে হবে। এ ভাইরাসটি তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া এবং হঠাৎ তা নেমে যাওয়ার কারণেও হয়ে থাকে। যা হাঁচি, কাশি বা লালার মাধ্যমে অন্যদেহে ছড়িয়ে পড়ে। তাই মাক্স ব্যবহারের পরামর্শ চিকিৎসকদের। ওষুধ সেবন না করেও ৩/৪ দিন পরেই শরীরের তাপমাত্রা কমে গিয়ে স্বাভাবিক হবে। আক্রান্তের ৩/৪ দিন আগে এন্টিবায়োটিক সেবন না করাই উত্তম বলেও মন্তব্য করেন তারা।
হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু বিভাগে চিকিৎসাধীন আরমান হক লামের পিতা মোকছেদুল হক বলেন তার ছেলে পাতলা পায়খানা রোগে আক্রান্ত। সকালে একজন ডাক্তার দেখে গেলেও শিশু কনসালটেন্ট এর দেখা মেলেনি। 
উপজেলার সিঙ্গিমারী এলাকার আসাদুল ইসলাম জানান টানা তিন দিন ধরে তিনিসহ তার পরিবারে তিনজন জ্বরে ভুগছেন। মাথাসহ পুরো শরীর ব্যথা করে এবং শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। সঙ্গে থাকে সর্দি ও কাশি। শুধু তার পরিবারই নয়। তাদের পাড়ার অনেক বাসায় জ্বরের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। 
হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক আল-মামুন ও বহি. বিভাগের চিকিৎসক ফারহানা সিদ্দিক জানান সারাদিন যত রোগী দেখেছেন তার ৬০ ভাগই ভাইরাস জ্বর ও পাতলা পায়খানায় আক্রান্ত। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। পারিবারিকভাবে সচেতন হলে এ রোগ থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। 
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. কাসেম আলী জানান তাপমাত্র বেড়ে যাওয়ায় এবং হঠাৎ বৃষ্টির কারণে জেলায় ভাইরাসজনিত ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি ছোঁয়াছে রোগ। রোগীকে সেবাদানকারী ব্যক্তিকে অবশ্যই মাক্স ব্যবহার করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। অন্যথায় ছড়িয়ে পড়বে। আক্রান্তের ৩/৪ দিন এন্টিবায়োটিক সেবন না করে পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। তবে আক্রান্তের ৫ দিন অতিবাহিত হলে নিকটস্থ কমিউনিটি ক্লিনিক বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

ইনাম /সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com