বিশেষ প্রতিবেদক//সময়নিউজবিডি
ডিজিটাল দুনিয়ায় সকলের হাতে হাতে এখন স্মার্টফোন। যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিশোর কিশোরী ও যুবক যুবতীদের পছন্দের শীর্ষে। যা শখের বসেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে, ইমো সহ বিভিন্ন সফটওয়্যার এর ব্যবহার করে একে অপরের সাথে সহজে যোগাযোগ করতে পারে। এই স্মার্ট কেনার টাকা জোগাড় করতে বাবা মাকে ফাঁকি দিয়ে এলাকার বন্ধুদের সাথে পাওয়ারট্রলির শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যান মোঃ সুমন মিয়া নামে এক যুবক। পাঁচশত টাকা দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে ইতিমধ্যে সে চারদিন কাজও করেছে। সোমবার ২০ এপ্রিল ২০২০ ইং পঞ্চম দিনে কাজে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় বাবা জামাল উদ্দিন ভুইয়ার। বাবার কথা একটাই আমি যতোদিন বেঁচে আছি বাজান তুমি কাজ করতে হবে না। বাবার এমন কথায় ছেলে নিচু স্বরে বললো আব্বা হেরার (বন্ধুদের) সাথে কয়েকটাদিন কাজ করে টাকা জমিয়ে একটা নতুন মোবাইল ফোন কিনবো। ছেলের এ কথা শুনে বাবাও সোহাগের (আদর) স্বরে বাজান তুমি কাজ করে মোবাইল কিনতে হবেনা। আমি তোমার বড় ভাইকে বলবো (ইরাক প্রবাসী) তোমার জন্য মোবাইল পাঠাতে না হয় টাকা পাঠাতে, আর না হয় যতো টাকা লাগে আমি তোমাকে কিনে দেবো। তাও বাজান তুমি কাজে যাইওনা। একথা বলে সুমনের বাবা চলে যায় এলাকার বাজারে মাছ কিনতে। যাওয়ার সময়ও তাকে বলে যায় কাজে না যেতে। কিন্তু বাবা মা না করলেই কি? তার বিদায়ের ঘন্টা বেঁজে গেছে। আর সেই বিদায়ের জন্যেই বাবা মাকে ফাঁকি দিয়ে কাজে চলে যান। সে কি জানতো এটাই তার শেষ বিদায়। ২০ এপ্রিল ২০২০ ইং সকাল ১১ টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের ঘেরাগাঁও নামক এলাকায় নিজে বসে থাকা পাওয়ারট্রলির নিচে পড়ে এর চাকায় পিষ্ট হয়ে শখের স্মার্ট ফোন না কিনেই ওপারে চলে যেতে হলো সুমনকে। এদিকে সুমনের মৃত্যুতে তার শয্যাশায়ী গর্ভধারিণী মা যেন শোকে বিহ্বলিত হয়ে নির্বাক হয়ে আছেন। পাশেই হাউমাউ করে পুত্র শোকে বিলাপ করছে সুমনের বাবা। বারবার শুধুই একই কথা বলছেন আমার বাজানরে আমি বলছি মোবাইল কিনে দিবো, কিন্তু বাজান আমার কথা শুনলোনা। আমারে একলা তুইয়া কেমনে চইলা গেছে। সুমন উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামের জামাল উদ্দিন ভুইয়ার দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয়। তার বড় ভাই ইরাক প্রবাসী। ছোট বোন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব না হলে সেও সৌদিআরব চলে যাওয়ার কথা ছিলো।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply