বিশেষ প্রতিবেদক//সময়নিউজবিডি
প্রথম শ্রেণীতে পড়ুয়া রুদ্রজিৎ পাল। নেমেছে করোনা প্রতিরোধ যুদ্ধে। শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন সড়কে ঘুরে ঘুরে মাইকিং করে মানুষকে ঘরে থাকার আহবান জানায় এই শিশু। পাশাপাশি নিজের হাতে লেখা সচেতনতামূলক লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ করে ওই শিশু।
এদিকে একজন শিশুকে এমনভাবে প্রচার করতে দেখে প্রশংসায় সরব হয়েছেন পুুুরো আখাউড়াবাসী। যেভাবে শিশুটি রাস্তায় অটোরিক্সা করে মাইকে প্রচার করছেন তা দেখে উচ্ছুসিত হয়েছে মানুষ। সকলেই ক্ষুদে রুদ্রজিৎ পালের এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
আখাউড়া পৌর এলাকার রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা ‘দৈনিক কালের কন্ঠ’ পত্রিকার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি ও শিশু সংগঠক বিশ্বজিৎ পাল বাবুর সন্তান রুদ্রজিৎ পাল। মেধা বিকাশ প্রি ক্যাডেট স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে সে।
রুদ্রজিৎ প্রায় তিন ঘন্টা করা মাইকিংয়ে বলেছে, ‘শুনুন শুনুন শুনুন। একটি ঘোষণা শুনুন। আপনারা স্বাস্থ্য সচেতন থাকবেন। অকারণে ঘর থেকে বের হবেন না। ঘর থেকে বের হলে মুখে পড়ুন মাস্ক, হাতে পড়ুন গ্লাভস। দূরত্ব বজায় রাখবেন। নিয়মিত হাত ধোবেন। ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন ‘।
রুদ্রজিতের কাকা প্রসেনজিৎ পাল সান্টু ও সুরজিত পাল অর্ণব এবং ধারাভাষ্যকার হিসেবে পরিচিত খোরশেদ আলম বাবু কার্যক্রমের সময় সঙ্গে ছিলেন।
শিশু রুদ্রজিতের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার রেইনা। তিনি বলেছেন, এটি একটি ভালো উদাহরণ আখাউড়াবাসীর জন্য। স্বাস্থ্য সচেতনায় তার মাইকিং, নিজের হাতে লেখা লিফলেট বিতরণ, মাস্কও বিতরণ করছে। আশা করি এই শিশুর আহবানে সারা দিয়ে মানুষ সচেতন হবে।
আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, ‘শিশু রুদ্রজিতের এই কার্যক্রম আমাদের বিবেককে নাড়া দিবে, জাগ্রত করবে। আশা করবো ওই শিশুর কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা সরকারি নির্দেশনা মেনে চলবো। সত্যিই শিশুর উদ্যোগটি প্রশংসার দাবিদার।’
আখাউড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল কাশেম ভূঁইয়াকে লিফলেট দেয়ার সময় তিনিও এ কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। রুদ্রজিতের হাতে শুভেচ্ছা উপহার তুলেন দেন জেলা পরিষদ সদস্য মো.আতাউর রহমান নাজিম।
এছাড়া রুদ্র আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক অধ্যক্ষ মো. জয়নাল আবেদীন, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হালিম হেলাল, কৃষি অফিসার শাহানা বেগম,উপজেলা খাদ্য নিয়মন্ত্রক সজীব কাউছার, যুবলীগ নেতা আব্দুল মমিন বাবুল, মো. মনির খান, আবু কাউছার ভূঁইয়া, মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন, দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন সহ নেতৃবৃন্দের মাঝে লিফলেট বিতরণ করে প্রশংসায় ভাসে। পুলিশ পরিদর্শক আরিফুল আমীনের স্ত্রী সালেহা নাসরিন আরিফ, আখাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো.শাহাবুদ্দিন বেগ শাপলু, সাধারন সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন নয়নসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা রুদ্রকে দাঁড় করিয়ে ভিডিও করেন ও ছবি তুলেন।
মেধা বিকাশ প্রি ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম সাগরও বেশ খুশি হয়েছেন বলে জানান। তিনি বলেছেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে এটি আলোচিত ঘটনার মধ্যে একটি।’ তার পড়াশুনা আর মেধার বিষয় নিয়েও তার শিক্ষক প্রশংসা করেছেন।
রুদ্রজিতের বাবা বিশ্বজিৎ পাল বাবু জানান, টিভি দেখে সে স্বাস্থ্য সচেতনতার ডায়লাগ মুখস্থ করে প্রায়ই বাসায় বলতো। পরে মুখস্থ করা ডায়ালগ কাগজে লিখলো। সঙ্গে নিজের পরিচিতির কথা যোগ করে দিলাম। লিফলেটের পাশাপাশি মাস্ক বিতরণের আবদার করলে সেটিও দেয়া হয়।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply