সংবাদ শিরোনাম

কারারক্ষীর বিরুদ্ধে হাজতির স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

রাজবাড়ী জেলা কারাগারে আটক এক হাজতিকে জামিনের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁর স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় এক কারারক্ষীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে হয়েছে। সোমবার(২৯ এপ্রিল) রাজবাড়ী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলা দায়ের করেন ঘটনার শিকার ওই হাজতির স্ত্রী (২৬)।

আদালতের বিচারক নিলুফার সুলতানা মামলাটি আমলে নিয়েছেন। আগামী ১৩ মে পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য করা হয়েছে। আইনজীবী খান মো. জহুরুল হক এই বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বাদী বলেন, সম্প্রতি রাজবাড়ী জুটমিলে কর্মরত তাঁর স্বামী একটি মামলায় জেলা কারাগারে আটক ছিলেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি ওই গৃহবধূ তাঁর স্বামীকে দেখতে জেলা কারাগারে যান। এ সময় সেখানকার কারারক্ষী আনিসুর রহমান আজ্জুলের (৩৫) সঙ্গে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে কারারক্ষী আনিসুর রহমান তাঁকে ৫০ হাজার টাকা দিলে সাত দিনের মধ্যে জামিন করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। পরবর্তী সময়ে ওই কারারক্ষী তাঁকে উকিলের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে একটি মাহেন্দ্র গাড়িতে উঠিয়ে অজ্ঞাত এক বাড়িতে নিয়ে যান। ওই বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। ওই কারারক্ষী তাঁর এক সহযোগীকে দিয়ে ওই ধর্ষণের চিত্র মোবাইল ফোনে রেকর্ড করে রাখেন। পরবর্তী সময়ে ২৪ এপ্রিল রাতে জেলা কারাগারসংলগ্ন শ্মশানঘাটের ভেতরে নিয়ে সেখানে ভয়ভীতি দেখিয়ে আবারও তাঁকে ধর্ষণ করা হয়।

ওই নারী অভিযোগ করেন, ‘আমি মামলা দায়ের করার পর থেকে আমার ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি সাংবাদিক পরিচয় দিয়েও আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির শাস্তি চাই।’

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কারারক্ষী আনিসুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে ওই নারীর স্বামীর সঙ্গে জেলখানার ভেতরে ক্যানটিনে খাওয়া নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়েছিল। একপর্যায়ে আমি তাঁকে হালকাভাবে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে ছিলাম। তখন তিনি আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে ছিলেন। কয়েক দিন আগে তিনি (বাদীর স্বামী) আমাকে ফোন করে হুমকি দিয়েছেন। আগের রাগ থেকে আমাকে হয়রানি করার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

রাজবাড়ীর নারীনেত্রী শামীমা আক্তার বলেন, ‘কারা অভ্যন্তরে ও কারাগারকে কেন্দ্র করে নানাবিধ অপরাধ ও অনৈতিক লেনদেন, কার্যকলাপ নতুন নয়। আসামি ও তাঁর পরিবার অসহায় থাকে। তারই সুযোগ নিয়েছে এই কারারক্ষী। আইনের রক্ষক হয়ে ভক্ষক এই কারারক্ষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

জেল সুপার মো. আনোয়ারুল করিম বলেন, ‘আমার কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। আমি মৌখিকভাবে বিষয়টি শুনেছি। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com