স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে শহরের কুমারশীল মোড় এলাকার নিউ ল্যাব এইড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার এন্ড হাসপাতাল নামে একটি বে-সরকারি ক্লিনিক ভাংচুর করেছে রোগীর বিক্ষুব্দ আত্মীয়রা।
গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই রোগী মারা গেলে তার আত্মীয় স্বজন ক্লিনিকটিতে ব্যাপক ভাংচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও এলাকার কাউন্সিলর ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত থানায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি।
রোগীর স্বজন ও এলাকার জনপ্রতিনিধি জানান, গত সপ্তাহ খানেক আগে ঠান্ডা জ্বর ও ডায়াবেটিক নিয়ে পৌর এলাকার দক্ষিণ পৈরতলা গ্রামের জাকির হোসেনের স্ত্রী মাকসুদা আক্তার-(৫০) নিউ ল্যাব এইড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার এন্ড হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তির পর থেকেই তিনি হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ সৈয়দা মাসুমা কাউসারের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। কিছুটা সুস্থ্য হওয়ার পর রোববার সকালে তাকে ক্লিনিক থেকে রিলিজ করে দেওয়া হয়। পরে চিকিৎসক ডাঃ মাসুমা কাউসার রোগীর রক্ত শুন্যতা থাকায় তাকে এক ব্যাগ রক্ত দেয়ার কথা বলে কিèনিকে রেখে দেন। সোমবার রাতের বেলা রোগীকে রক্ত দেয়া অবস্থায় রাত সাড়ে ১০টায় তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
এদিকে মাকসুদা আক্তারের মৃত্যুর খবর পেয়ে তার স্বজনরা ক্লিনিকটিতে গিয়ে কর্মচারী ও নার্সদের উপর চড়াও হন। এ সময় বিক্ষুদ্ধরা ক্লিনিকের চিকিৎসকের কক্ষ, একটি কেবিনের দরজা ও অফিস কক্ষসহ অন্যান্য ইউনিট ব্যাপক ভাংচুর করেন।
খবর পেয়ে এলাকার কাউন্সিলর ওমর ফারুক জীবন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসকসহ নার্স ও কর্মচারীরা গা ডাকা দেন।
মৃত মাকসুদা আক্তারের কন্যা সাথী আক্তার ও তার জামাতা রহমত আলী অভিযোগ করে বলেন, চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার কারনে তার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। তারা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।
এ ব্যাপারে পৌর সভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ওমর ফারুক জীবন বলেন, গত সপ্তাহখানেক আগে আমার এলাকার বাসিন্দা মাকসুদা আক্তার ঠান্ডা জ্বর ও ডায়াবেটিক নিয়ে ওই ক্লিনিকে ভর্তি হন। ইতিমধ্যেই তিনি সুস্থ্য হয়েছিলেন। কিন্তু রােগীর রক্তশুন্যতা থাকার কারনে চিকিৎসক মাসুমা কাওসারের পরামর্শে রক্ত দেয়ার সময় তিনি মারা যান। তিনি বলেন ভুল চিকিৎসার কারনেই মাকসুদা আক্তার মারা গেছেন বলে আমি মনে করি। আমি এ ঘটনার বিচার দাবি করি।
এ ব্যাপারে নিউ ল্যাব এইড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার এন্ড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোঃ শাহেদ মিয়া বাবুল বলেন, ওই মহিলা ক্রনিক এজমার রোগী, তার ডায়বেটিজও বেশী ছিলো। তার শরীরের রক্তের হিমোগ্লুবিন ৮-এ নেমে গিয়েছিলো। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক তিনদিন ধরে রক্ত দেয়ার পরামর্শ দিলে সোমবার দুপুরে রোগীর স্বজনরা ১ ব্যাগ রক্ত ম্যানেজ করে। বিকেল সাড়ে ৫টায় রক্ত দেয়া শেষ হয়। রাত ১০টা ৫০ মিনিটে রোগী মারা গেলে রোগীর স্বজনরা ক্লিনিক ভাংচুর করে। পরে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর ফারুক জীবন ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহিম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। তিনি বলেন, রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেন নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply