স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের কাছাইট গ্রামের ভূমি দস্যু সাখাওয়াত হোসেন গংদের বিরুদ্ধে জাল দলিল করে অন্যের জায়গা জোরপূর্বক দখল করে পাকা দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ইং তারিখে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৪৪/১৪৫ ধারা মোতাবেক ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শেখ আল আমিন মিয়া বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৫৪২/২০। মামলায় বিবাদী করা হয় সাখাওয়াত মুহসিন (৫০), পিতা মৃত আব্দুল মান্নান ভুইয়া, ফাহমিদা হক (৩৫), পিতা মৃত আব্দুল মান্নান ভুইয়া , মাহমুদা বেগম (৩৫) স্বামী সাখাওয়াত মুহসিন, জেবুন্নেছা (৩২), পিতা মৃত আব্দুল মান্নান ভুইয়া ও হনুফা বেগম (৬৫) স্বামী মৃত আব্দুল মান্নান ভুইয়াকে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের কাছাইট গ্রামের কাছাইট মৌজার সেঃমেঃ ৬২৮ দাগের ৮ শতক ভিটি ভূমি মাতেবননেছা বিবি বিগত ০১/১১/১৯৪৩ ইং তারিখে ৭৭৮৪ নং সাফ কবলা দলিল মূলে মালিক দখলকার থাকা অবস্থায় নিঃসন্তান হওয়ায় ৭ ভাই ও এক বোন যথাক্রমে শেখ আব্দুল মজিদ, শেখ আব্দুল গফুর, শেখ সুরুজ মিয়া, শেখ মিয়া চাঁন, শেখ তারু মিয়া, শেখ নান্নু মিয়া, শেখ বজলুর রহমান ও বোন আমিরুননেছাকে ওয়ারিশ রেখে মারা যান। পরে এই জায়গাটি বাংলাদেশ জরিপমূলে সি.এস. ও এস.এ. ৬২৮ দাগটি বি.এস. ১২৬৬ দাগে রূপান্তরিত হয়।
এজাহার সূত্রে আরো জানা যায়, মাতেবননেছা বিবির খরিদা দলিলের সি.এস. ও এস.এ. ৬২৮ দাগ বি.এস. ১২৬৬ দাগের ভিটি ৮ শতক বাবদে তাহার নামে ১৮৯ নং বি.এস. খতিয়ানে মাতেবননেছা বিবির নাম লিপিবদ্ধ হয়। উক্ত ভিটি ভূমির ৮ শতক জায়গা কাছাইট গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে ও মাতেবননেছার বোন আমিরুননেছার ছেলে আব্দুল মান্নান ভুইয়ার ওয়ারিশগন যথাক্রমে সাখাওয়াত মুহসিন, ফাহমিদা হক, জেবুন্নেছা ও হনুফা বেগম যোগসাজশে জায়গাটি খালি পেয়ে একটি জাল দলিল বানিয়ে জোরপূর্বক জায়গাটি দখলের জন্য পাকা দোকান ঘর নির্মাণের পাঁয়তারা করেন। বিষয়টি জানতে পেরে গত ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ইং তারিখ সকাল ১০ টায় নালিশা ভূমিতে মামলার বাদী শেখ আল আমিন মিয়া ও অন্যান্য ওয়ারিশগন গিয়ে বাঁধা দিলে বিবাদীরা তাদের হুমকি দেয়। বিবাদীদের হুমকিধামকিতে বাদী ও অন্যান্য ওয়ারিশগন শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৪৪/১৪৫ ধারার কার্যক্রম গ্রহণের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৪৪/১৪৫ ধারার মামলা দায়েরের পর আদালত নালিশা ভূমিতে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশকে নির্দেশ দেন ও সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে জায়গার দখল ও মালিকানা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন। পরে সদর মডেল থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার শফিকুর রহমান নালিশা ভূমিতে উপস্থিত হয়ে সেখানে কোন নির্মাণ কাজ না করার নির্দেশ করলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত কাজ করা হবেনা মর্মে অঙ্গীকার করেন। পরে আদালত কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নালিশা ভূমিতে বিবাদীরা পাকা দোকান ঘর তিনটি নির্মাণ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী শেখ আল আমিন জানান, আমার দাদী মাতেবননেছা বিবি নিঃসন্তান হিসেবে আমার বাবা মৃত শেখ মিয়া চাঁন সহ ৭ ভাইকে ওয়ারিশ রেখে মারা যান। আমরা নালিশা ভূমির পার্শ্বর্তী এলাকা ভাদুঘরে অবস্থান করায় জায়গাটি খালি পেয়ে মামলার বিবাদী সাখাওয়াত মুহসিন গংরা ১৯৬৯ সনের ৫৭০ নাম্বারের একটি জাল সাব কবলা দলিল দেখিয়ে নিজেদের ক্রয় সূত্রে মালিক দাবী করেন। যা সম্পূর্ণ ভুয়া ও মিথ্যা। যার প্রমাণস্বরূপ চলতি ০৮/০৩/২০২১ তারিখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব- রেজিস্ট্রি অফিসে তল্লাশি করে দাতা মাতেবননেছা ও গ্রহীতা আব্দুল মান্নান ভুইয়া হিসেবে কাউকে পাওয়া যায়নি। এ প্রতারণার ঘটনায় জড়িত সকল প্রতারকদের জাল জালিয়াতি থেকে আমাদের নালিশা ভূমিটি ফেরত ও তাদের যথোপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply