সংবাদ শিরোনাম
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কসবায় দুদল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে বৃদ্ধ নিহত ও আহত-২০

পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কসবায় দুদল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে বৃদ্ধ নিহত ও আহত-২০

স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে ফয়েজ মিয়া-(৬০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছে। এ সময় উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। 
শনিবার সকালে উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের নিমবাড়ি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত ফয়েজ মিয়া নিমবাড়ি গ্রামের লাবু মিয়ার ছেলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আহতদেরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল, কসবা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন।এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, ২০১৭ সালে নিমবাড়ি গ্রামের পান্ডুর গোষ্ঠীর লোকজনের সাথে কাবিলা গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে পান্ডুর গোষ্ঠীর রহিছ মিয়া নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়। এ ঘটনায় কাবিলা গোষ্ঠীর লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় ১নং স্বাক্ষী ছিলেন পান্ডুরগোষ্ঠীর ফয়েজ মিয়া। এদিকে রহিছ মিয়া হত্যা মামলার আসামীরা (কাবিলা গোষ্ঠীর) দীর্ঘদিন কারাভোগ করে সম্প্রতি আদালত থেকে জামিন পেয়ে বাড়িতে আসেন। এরপর থেকে আসামীরা রহিছ মিয়া হত্যা মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য পান্ডুর গোষ্ঠীর লোকজনের উপর চাপ প্রয়োগ করে। এতে পান্ডুর গোষ্ঠীর লোকজন রাজী না হওয়ায় শনিবার সকালে কাবিলা গোষ্ঠীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পান্ডুর গোষ্ঠীর লোকজনের বাড়িতে হামলা করে। এ সময় টেটার আঘাতে পান্ডুর গোষ্ঠীর বৃদ্ধ ফয়েজ মিয়া ঘটনাস্থলেই নিহত হন। নিহত ফয়েজ মিয়া রহিছ মিয়া হত্যা মামলার ১নং স্বাক্ষী ছিলেন। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০জন আহত হন। গুরুতর আহবস্থায় ফায়েজ মিয়া ও রিমন নামে দুইজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন। নিহত ফয়েজ মিয়ার ছেলে ইকরাম মিয়া বলেন, গত ২০১৭ সালে কাবিলা গোষ্ঠীর লোকজন আমার চাচা রহিছ মিয়াকে হত্যা করে। এ ঘটনায় মামলা হলে তারা মামলাটি প্রত্যাহার করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমাদের গোষ্ঠীর লোকজনের উপর চাপ সৃষ্টিসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছিল। আমার বাবা ফয়েজ মিয়া ছিলেন রহিছ মিয়া হত্যা মামলার প্রধান স্বাক্ষী। ওই মামলাটি এখন ফাইনাল পর্যায়ে, রায়ের অপেক্ষায়। মামলাটি প্রত্যাহার না করায় শনিবার সকালে তারা আমাদের গোষ্ঠীর লোকজনের বাড়িতে হামলা করে। আমার বাবাকে হত্যা করছে। আমি হত্যাকারীদের বিচার দাবি করি। 
নিহত ফয়েজ মিয়ার স্ত্রী রেখা আক্তার বলেন, আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। শনিবার কাবিলা গোষ্ঠীর লোকজন আমার স্বামীকে রাস্তায় ফেলে হত্যা করেছে। আহত ফায়েজ মিয়া বলেন, সকালে আমরা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে কাবিলা গোষ্ঠীর লোকজন অতর্কিতভাবে আমাদের গোষ্ঠীর লোকজনের উপর হামলা করে। আমাকে ছুরিকাঘাত করে রাস্তার পাশে ফেলে দেয় ও ফয়েজ ভাইকে ঘটনাস্থলেই মেরে ফেলে। তিনি বলেন, রহিছ মিয়া হত্যা মামলাটি আপোষ না করায় কাবিলা গোষ্ঠীর লোকজন আমাদের উপর হামলা করেছে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আরিফুজ্জামান বলেন, আহত বেশ কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে ফায়েজ মিয়া ও রিমন মিয়ার অবস্থা আশংকাজনক। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে মূলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মঈনুল ইসলাম বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নিমবাড়ি গ্রামের বিবাদমান দুইগোষ্ঠীর লোকজন শনিবার সকালে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে ফায়েজ মিয়া মারা যান।
এ ব্যাপারে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আলমগীর ভূঞা বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। 
এ ব্যাপারে সহকারি পুলিশ সুপার (কসবা সার্কেল) নাহিদ হাসান বলেন, সংঘর্ষে ফয়েজ মিয়া নামে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পরবতর্ী সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহত ফয়েজ মিয়ার লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো থানায় মামলা দায়ের করা হয়নি।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর। 

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com