স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন এমপি বলেছেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিই ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে হামলা করেছে।বিএনপি-জামাত-হেফাজতই হচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি।
সোমবার (১২ এপ্রিল) দুপুর তিনটায় হেফাজতের তান্ডবের সময় আগুনে পুড়িয়ে দেয়া ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শনকালে উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় মন্ত্রী আরো বলেন, তাদের আষ্ফালন সরকারের বিরুদ্ধে না, তাদের আক্রমন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। এরা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি। মন্ত্রী বলেন, যারা ২০১৩-২০১৪ সালে বাস-ট্রাক, রাস্তা ঘাটে জ্বালাও পোড়াও করেছে একই শক্তি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন পুড়িয়েছে।রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন এমপি আরো বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা দেখেছি পাক বাহিনী, যারা বলেছিল আমরা মানুষ চাইনা, মাটি চাই। যারা জ্বালাও-পোড়াও করে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছিলো। স্টেশন, বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছিলো। এরা কোন শক্তি? এরা কারা? আমরা মনে করি সেই শক্তি, যারা এখনো সক্রিয় আছে। ২০১৩-১৪ সালে জ্বালাও-পোড়াও করেছে। বাস-ট্রাক, ট্রেনে আগুন দিয়েছে। রেলওয়ে স্টেশনে আগুন দিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে আমাদের জনগনকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এছাড়া আর কোন বিকল্প পথ নেই। তিনি বলেন, যারা এই ধ্বংসযজ্ঞের সাথে জড়িত অবশ্যই তাদেরকে আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের যাত্রাবিরতি সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, স্টেশনের সিগন্যাল ব্যবস্থা সম্পূর্ন ধ্বংস করা হয়েছে।এগুলো মেরামত করতে সময় লাগবে। তবে কতদিন সময় লাগবে তা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি মন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এগুলো মেরামত করে আবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনকে সচল করব।এ সময় মন্ত্রীর সাথে ছিলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সর্দার শাহাদাত আলী, ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ের মহা ব্যবস্থাপক সাদিকুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত- উদ দৌলা খঁান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার প্রমুখ।উল্লেখ্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কমর্ীরা গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালায়। তারা ২৬ মার্চ বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে রেলওয়ে স্টেশনের কন্ট্রোল প্যানেলসহ স্টেশনের যাবতীয় মালামাল ও আসবাবপত্র পুড়িয়ে দেয়। এর পর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের যাত্রাবিরতি বন্ধ রয়েছে।
এছাড়াও হেফাজতিরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর দুটি ম্যুরালসহ তিনটি ম্যুরাল, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরে উন্নয়ন মেলার প্যান্ডেল, একই চত্বরে থাকা শহর সমাজসেবা প্রকল্পের অফিস, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের অফিস, পৌরসভা কার্যালয়, পৌর মেয়রের বাসভবন, সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খঁা পৌর মিলনায়তন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যালয়, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব, বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ব্যক্তিগত অফিস, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, জেলা মৎস্য অফিস, সার্কিট হাউজ, জেলা পরিষদ কার্যালয় ও ডাকবাংলো, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা ভবন, সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন, মাতৃ সদন, এসিল্যান্ডের কার্যালয়, সরকারি গণগ্রন্থাগার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের বাসভবন, তার শ্বশুরের বাড়ি, জেলা শিল্পকলা একাডেমী, হিন্দু সম্প্রদায়ের ধমর্ীয় প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ কালীবাড়ি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির বাসভবন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসভবন, আশুগঞ্জ টোলপ্লাজা, সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আবু নাছেরের বাসভবন, বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাসভবন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়সহ প্রায় অর্ধশতাধিক সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply