মতিউর মুন্না//সময়নিউজবিডি
মহামারি করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ এর তৃতীয় ঢেউ চলছে বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীব্যাপী। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারের দেওয়া কঠোর লকডাউনের মধ্যেও গত এক সপ্তাহে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ২ শত ১৮ জন, মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের ও সুস্থ হয়েছেন ১৩৪ জন।
গত ২১ জুলাই ২০২১ ইং থেকে গতকাল মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) পর্যন্ত এক সপ্তাহে মোট ২ হাজার ৮ শত ২৬ টি নমুনা পরীক্ষার মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ২ শত ১৮ জন।
গত এক সপ্তাহের মধ্যে ২১ জুলাই মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭ জন ও সুস্থ হয়েছেন ২ জন, ২২ জুলাই আক্রান্ত হয়েছেন ৮৩ জন, মারা গেছেন ২ জন, ২৩ জুলাই ১৪৭ জন, মারা গেছেন ২ জন, ২৪ জুলাই আক্রান্ত হয়েছেন ২৭৯ জন, মারা গেছেন ১ জন ও সুস্থ হয়েছেন ৫১ জন, ২৫ জুলাই আক্রান্ত হয়েছেন ১৫৬ জন, মারা গেছেন ১ জন ও সুস্থ হয়েছেন ৪১ জন, ২৬ জুলাই আক্রান্ত হয়েছে ১৮৪ জন, সুস্থ হয়েছেন ২২ জন এবং ২৭ জুলাই আক্রান্ত হয়েছে ৩০২ জন, মারা গেছেন ৩ জন ও সুস্থ হয়েছেন ১৮ জন।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোভিড-১৯ এর প্রভাবে জেলায় একদিনে সর্বোচ্চ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং সর্বোচ্চ ৩০২ জনের করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। যা, অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ রেকর্ডের চিত্র। এরপরেও কোভিড-১৯ এর ভয়াবহতার লাগাম কোনভাবেই আটকানো যাচ্ছে না। সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের সর্বত্র জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে এর প্রভাব থেকে সর্ব সাধারনের জীবন রক্ষায়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিন রাত একাকার করে কোভিড-১৯ এর মোকাবেলায় দেশ ও দেশের মানুষের সুরক্ষার জন্য প্রাণপন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জনসাধারণকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিজিবি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও চিকিৎসার দায়িত্বে নিয়োজিত প্রত্যেকে’ই তাদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তথাপিও কোভিড-১৯ তার শক্তিমত্তা ক্রমান্বয়ে তীব্র থেকে তীব্রতর রুপ নিয়ে যাচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ এর নমুনা পরীক্ষার জন্য মানুষের দাঁড়িয়ে থাকার এ দৃশ্যই প্রমাণ করে মানুষের অসচেতনতার। ছবি- সুমন রায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন ডাঃ একরাম উল্লাহ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মানুষ নিজ থেকে সচেতন হতে হবে। অন্যথায় মহামারি এ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব হবে। তিনি সকলকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যদি বিশেষ প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতে হয় তাহলে অবশ্যই মুখে মাস্ক পড়ে সরকারি স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। বাসায় ফিরে দ্রুত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হতে হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি বিশিষ্ট নারী নেত্রী মিসেস নায়ার কবির উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এখনও আমরা সচেতনভাবে অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হচ্ছি। যে কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলছে। তিনি এ প্রতিবেদককে আরো বলেন, জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জেলা জুড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সরকারি স্বাস্থ্য বিধি মানতে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা মানুষকে বুঝানোর চেষ্টা করছেন, এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে জরিমানা করেও সাধারন মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, আমরা নিজ থেকে সচেতন হলেই কেবল মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব। সবাইকে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, এই মহামারী ভয়াবহ পর্যায়ে চলে গেছে, সকল শ্রেণী পেশার মানুষ মিলে এই দুর্যোগ মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। আল্লাহ, দেশ ও দেশের সবাইকে রক্ষা করুন।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply