সংবাদ শিরোনাম
প্রতারণা মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ট্রাক মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মিজান কারাগারে

প্রতারণা মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ট্রাক মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মিজান কারাগারে

স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পূর্ব মেড্ডা এলাকায় এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ভূমি বিক্রি করার নামে প্রতারণার মাধ্যমে ৩২ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমানকে (৪০) কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
আটক মিজানুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক-লীগের সাধারণ সম্পাদক।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় মিজানুর রহমানকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার বাদি নুরুল ইসলাম।
গত মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে জামিন নিতে গেলে তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন বিচারক।
গত ০৯ জুলাই ভুক্তভোগী আনন্দ বাজার মেসার্স  নুরুল ইসলাম এন্ড ব্রাদ্রার্স ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শহরের উত্তর পৈরতলা এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, পূর্ব মেড্ডা এলাকার মৃত হায়দর আলীর ছেলে জামাল মিয়া (৫৫), একই এলাকার আবু শামার ছেলে মো: লিটন (৩৮)।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, শহরের উত্তর পৈরতলার মৃত হাজী আবন আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম পূর্ব মেড্ডা এলাকার মিজানুর রহমানের দূর সম্পর্কের আত্মীয়। এরই সূত্র ধরে ২০১৪ সালে মিজানুর রহমানের কাছ থেকে পূর্ব মেড্ডা এলাকার ৪.৩৩ শতক একটি নাল ভূমি ২৬ লাখ টাকায় ক্রয় করতে সম্মত হয় নুরুল ইসলাম। পরে ওই বছরের ২৩ নভেম্বর মিজানুর ৪ লাখ টাকা নিয়ে নুরুল ইসলামকে ওই ভূমিটির বায়নাপত্র দলিল করে দেয় এবং সেখানে বাড়িঘর নির্মাণ করতে বলে। সেই আশ্বাসের আলোকে নুরুল ইসলাম ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ ৫২ হাজার ২শ টাকা লোন নিয়ে সেখানে বাড়ি ঘর নির্মানের কাজ শুরু করে। সেখানে তিনি ৭টি বেডরুম, ৪টি বাথরুম ও ২টি কিচেনসহ বাড়িঘর নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে নুরুল ইসলাম বিভিন্ন সময় স্বাক্ষীদের উপস্থিতিতে চেকের মাধ্যমে ও নগদে মিজানুর রহমানকে ১৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রদান করে। পরে মিজানুর ২০১৮ সালের ২০ আগস্ট নুরুল ইসলামকে বায়নাকৃত ভূমিটিরি ভূয়া নামজারি খতিয়ান কাগজ প্রদান করে। নামজারি খতিয়ান কাগজটি রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে গেলে সেটি সঠিক নয় বলে জানতে পারেন। পরবর্তীতে তিনি বিষয়টি মিজানুর রহমানকে জানালে সে যাবতীয় কাগজপত্র সঠিকভাবে রেডি করে নুরুল ইসলামের নামে সাফ কাবলা দলিল করে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে আরো ৩ লক্ষ টাকা নেয়। কিন্তু মিজানুর রহমান কাগজপত্র ঠিক করে দেয়ার কথা বলে ঘুরাতে থাকে। বরং আরো টাকা দেয়ার জন্য নুরুল ইসলামের উপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। তবে জায়গার কাগজপত্র সঠিক করে না দিলে নুরুল ইসলাম আর কোন টাকা দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারী নুরুল ইসলাম মিজানুর রহমানকে ৪.৩৩ শতক ভূমির সাফ কবলা দলিল করে দিতে বলে অন্যথায় তার ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং বাড়িঘর নির্মাণের জন্য ব্যাংক থেকে লোন নেয়া ১৫ লাখ ৫২ হাজার ২শ টাকা ফেরত দিতে বলেন। এরই জের ধরে মামলার আসামী মিজানুর রহমান, জামাল মিয়া ও মো: লিটন প্রতারণা ও প্রবঞ্চনা করে সমগ্র টাকা আত্মসাৎ করে ভূমিটি নিয়ে লেনদেনের কথা অস্বীকার করে। এবং ওই ভূমিতে নির্মিত বাড়ি থেকে নুরুল ইসলামকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে মিজানুর রহমান তার নামে সাইন বোর্ড লাগিয়ে সেখানে তালা লাগিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বলেন, মিজানুর পূর্ব মেড্ডা এলাকার ৪.৩৩ শতক জায়গাটির বায়নাপত্র করে দেয়ার পর আমি সেখানে ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ ৫২ হাজার ২শ টাকা লোন নিয়ে বাড়ি ঘর নির্মাণ করি। এবং পর্যায়ক্রমে জায়গার ২৬ লাখ টাকা মূল্যের মধ্যে ১৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রদান করি। কিন্তু সে আমাকে এখনো সাফ কবলা দলিল করে দিচ্ছেনা। সে আমাকে কাগজপত্র করে দেয়ার কথা বলে বছরের পর বছর ঘুরাচ্ছে এবং হয়রাণি করছে। সে সাথে আমাকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে সেখানে নিজের নামে সাইনবোর্ড লাগিয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
এ বিষয়ে কোর্ট ইন্সপেক্টর জানান, মিজানুর রহমান ওই মামলায় পরোয়ানাভূক্ত আসামী হওয়ায় আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com