কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক মেডিকেল কলেজে সমতলের উপজাতি কোটায় ভর্তি তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির নেতৃবৃন্দ।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর তেতইগাঁও রশিদ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মণিপুরী সমাজ কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক কমলা বাবু সিংহ লিখিত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে সমতলে বসবাসরত উপজাতি/ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠিভূক্ত শিক্ষাথর্ীদের জন্য সরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির জন্য ৮টি কোটা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে সরকারি মেডিকেল কলেজে ৭৭ নম্বর কোডে প্রকাশিত তালিকায় বহিরাগত প্রার্থীর নাম অন্তভর্ূক্তি রয়েছে। বিগত কয়েক বছর যাবত এভাবে বহিরাগত প্রার্থীর নাম অন্তভর্ূক্ত থাকে। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে এ ধরণের অনিয়মের কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ প্রেরণ ওমহামান্য হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে হাইকোর্ট রুলনিশি জারি করেন। এতকিছুর পরও একই ঘটনার পুণরাবৃত্তি ঘটছে। ফলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির শিক্ষাথর্ী এবং অভিভাবকরা হতাশাগ্রস্ত। বাংলাদেশ সরকারের একটি মহৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভুলের কারণে বারবার বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। গত কয়েক বছর যাবত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ ধরনের ভুল করার কারণে অনেক উপজাতি শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে বঞ্চিত। লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটায় কুষ্টিয়া মেডিকেলে মো: নাজমুল ইসলাম, সাতক্ষিরা মেডিকেলে মো: সাকিব বাশার, মাগুরা মেডিকেলে খন্দকার কাশেবা কুমকুম ও কক্সবাজার মেডিকেলে নেপাল চাকমার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দকৃত ৮টি আসনের মধ্যে এই ৪ জনই সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বহির্ভুত। বারবার আবেদনের মাধ্যমে তালিকা হতে অ-উপজাতি প্রাথর্ীর নাম বাতিল করার জন্য অনুরোধ জানানোর পরও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। উপরন্ত ২০২২ সালেও একই ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।সংবাদ সম্মেলনে তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করে উপজাতি নেতৃবৃন্দ জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে সমতলে বসবাসরত উপযুক্ত উপজাতি শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করার জোর দাবী জানান। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মণিপুরী মুসলিম ডেভেলপমেন্ট অগার্নাইজেশন (বামডো) এর সভাপতি নুর উদ্দিন, বাংলাদেশ মণিপুরি কাং ফেডারেশনের সভাপতি ইবুংহাল সিংহ শ্যামল, বাংলাদেশ মণিপুরী মুসলিম সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মো: আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ মণিপুরি এডুকেশন ট্রাস্টের সভাপতি সাজ্জাদুল হক স্বপন, তেতইগঁাও রশিদ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহেনা বেগম, মণিপুরী সমাজ কল্যাণ সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শান্তুমনি সিংহ প্রমুখ।বাংলাদেশ মণিপুরী মুসলিম ডেভেলপমেন্ট অগার্নাইজেশন (বামডো) এর সভাপতি নুর উদ্দিন বলেন, আমরা উপজাতীয় কোটা সঠিকভাবে পাচ্ছি না। বাংলাদেশ মণিপুরি কাং ফেডারেশনের সভাপতি ইবুংহাল সিংহ শ্যামল বলেন, ভর্তি প্রক্রিয়ায় ক্রুটি থাকায় দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে একটি অসাধু চক্র এ কাজটি করছে। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই। বাংলাদেশ মণিপুরি এডুকেশন ট্রাস্টের সভাপতি সাজ্জাদুল হক স্বপন বলেন, সমতলের ক্ষুদ্র-গোষ্ঠীর ছাত্র-ছাত্রীরা ভবিষ্যতে যেন এধরণের ঘটনার শিকার না হয় তার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপজাতীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply