স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে ৮ম শ্রেণীর এক ছাত্রীর রহস্যজনক আত্মহত্যার ঘটনায় আদালত মামলা দায়ের করেছেন নিহতের পরিবার। পাশের বাড়ির বখাটে ছেলের নিয়মিত ইভটিজিং, ভয়ভীতি ও হুমকিতে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। এ ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীর পিতা নজরুল ইসলাম তালুকদার গত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ইং তারিখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল আদালতে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং- সিআর ৭৬৩/২২। পরে আদালত মামলার তদন্তের জন্য বিজয়নগর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি আগামী ০৩/১১/২০২২ ইং তারিখে আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন।
এদিকে, গত ৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের আলীনগর গ্রামে শিক্ষার্থীর বসত বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত স্কুল ছাত্রী নুসরাত জাহান ঊর্মি (১৩) বুধন্তী ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি আলীনগর গ্রামের নজরুল ইসলাম তালুকদারের বড় মেয়ে। সে স্থানীয় আম্বিয়া মিজান নিম্ম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিহত নুসরাত জাহান ঊর্মির পিতা শ্রমিকলীগ নেতা মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে এনে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় আলীনগর গ্রামের শামসু মিয়ার ছেলে আরমান ইসলাম (২২), শহিদ মিয়ার ছেলে শামসু মিয়া (৫০), শামসু মিয়ার স্ত্রী রেহেনা বেগম (৪৮), শামসু মিয়ার ছেলে সিফুল ইসলাম (২৬) ও সাইফুল ইসলাম (২৪) কে এজাহারভূক্ত আসামী করা হয়েছে।
নিহত নুসরাত জাহান ঊর্মির সহপাঠী ইসরাত জাহান ঋতু বলেন, ঊর্মি আমাদের সহপাঠী ছিল। সে মেধাবী, নম্র, ভদ্র ও শান্তশিষ্ট সবার প্রিয় একজন মানুষ ছিলো। তার আত্মহত্যা আমরা মেনে নিতে পারছি না। আমরা সবাই এই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিচার দাবী করছি।
বুধন্তী ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি ও নিহত শিক্ষার্থীর পিতা নজরুল ইসলাম তালুকদার জানান, আমার মেয়ে একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলো। আমরা খুব আদর করে তাকে লালন পালন করেছি। তার আত্মহত্যার কিছুদিন পূর্বে পাশের বাড়ির শামসু মিয়ার ছেলে আরমান স্কুলে আসা যাওয়া সময় বিরক্ত করতো। এই বিষয়ে তার পরিবারের কাছে বিচার দিলেও কোন প্রতীকার পায়নি। তার পরেও আমার পরিবারের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে সময় সুযোগ বুঝে ফোন দিয়েও বিরক্ত করতো। এ বিষয়ে তার পরিবারকে অবহিত করলেও কোন সমাধান হয়নি। এই সব ইভটিজিং ও ভয়ভীতির কারনে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে বলে আমি মনে করি। তাই আমি ন্যায় বিচার চেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছি। উক্ত মামলার সঠিক তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করছি।
এ বিষয়ে আম্বিয়া মিজান নিম্ম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মস্তু মিয়া বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলো নুসরাত জাহান ঊর্মি। তার অকাল অপমৃত্যু পরে পরিবারের পক্ষ থেকে জানতে পারছি পাশ্ববর্তী বাড়ির কোন বখাটে তাকে বিরক্ত করতো। আরো জানতে পেরেছি ঊর্মির পিতা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দাবী করব সঠিক তদন্তপূর্বক প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হউক।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজু আহমেদ বলেন, কোর্ট থেকে মামলাটি আমাদের কাছে আসছে। আমরা তদন্ত করছি।তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।