স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে অভিনব কায়দায় ডকইয়ার্ড ব্যবসায়ী সজীব হত্যার প্রকৃত রহস্য উন্মোচন ও অন্যতম মূলহোতা দুর্ধর্ষ ডাকাত আলী হোসেন ওরফে আলী ডাকাতকে নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৪, সিপিসি-২, ভৈরব ক্যাম্প।
রবিবার (২২ মে) রাত সাড়ে ৩ টায় নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আলী হোসেন ডাকাতকে গ্রেফতার করেন।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, গত ১৩ মে ২০২৩ খ্রি. তারিখ রাত সাড়ে ০৮ টায় পুলিশ খবর পায় ভৈরব- কিশোরগঞ্জ সড়কে কালিকাপ্রসাদ এলাকার শিল্পনগরী সংলগ্ন সড়কে একটি লাশ পড়ে আছে। লাশের সঙ্গে একটি মোটরসাইকেলও রাস্তায় পড়ে আছে। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। ভিকটিমের স্ত্রী হাসপাতালের মর্গে গিয়ে মরদেহ সনাক্ত করে। উক্ত হত্যাকান্ডটি এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে গত ১৫ মে ২০২৩ খ্রি. তারিখ নিহতের স্ত্রী হামিদা বেগম স্বর্ণা (২৭), স্বামী- (ভিকটিম) মৃত আশিকুর রহমান সজীব, সাং-কমলপুর (নিউটাউন পল্লী মঙ্গল অফিস, ৩য় তলার ভাড়াটিয়া), থানাঃ ভৈরব, জেলাঃ কিশোরগঞ্জ, স্থায়ী সাং-ঘাগুটিয়া, সাপমারা, থানাঃ রায়পুর, জেলাঃ নরসিংদী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে ভৈরব থানার মামলা নং-২৮, তারিখঃ ১৫/০৫/২০২৩ খ্রি. ধারা-৩৯৪/৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ এ একটি দস্যুতাসহ হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে এ ঘটনার সংবাদ প্রাপ্তির পর থেকে র্যাব-১৪, সিপিসি-২, ভৈরব র্যাব ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল উক্ত ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে ২২/০৫/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ০৩.৩০ ঘটিকার সময় নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানার দাউদপুর এলাকা হতে উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অন্যতম মূলহোতা দুর্ধর্ষ ডাকাত আলী হোসেন ওরফে আলী ডাকাতকে (৪৫), পিতা- মৃত বশির উদ্দিন, সাং-কালিকাপ্রসাদ (আদর্শ পাড়া) থানা- ভৈরব, জেলা- কিশোরগঞ্জকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী দুর্ধর্ষ ডাকাত আলী হোসেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, ঘটনার দিন গত ১৩ মে ২০২৩ খ্রি. তারিখ দুপুর অনুমান ১৪.০০ টার দিকে আসামী সোহাগ তাকে মোবাইলে কল দিয়ে সন্ধ্যার সময় কালিকাপ্রসাদ এলাকায় থাকতে বলে। তারপর, ঘটনার দিন উক্ত স্থানে সে সন্ধ্যা ১৯.০০ ঘটিকার সময় আসলে অপর ০৩ সহযোগী ১। সোহাগ (৩২), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-শম্ভপুর, থানা-ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, ২। ফজলু (৫০), পিতা-অজ্ঞাত, সাং- আলুকান্দা, থানা-ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, ৩। বুদ্দি (৩০), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-মানিকদি, থানা-ভৈরব, কিশোরগঞ্জ এর সাথে একত্রিত হয়। পরবর্তীতে, ফজলু পাশের একটা প্রজেক্ট থেকে মাছ ধরার (বট সূতার) জাল নিয়ে আসে। তারপর, তারা জালের এক মাথা গাছের খুঁটিতে ও অন্য মাথা বিদ্যুতের পিলারের সাথে ঢিল করে বাঁধে। এই সময়, একটি মোটরসাইকেল দ্রুত গতিতে আসা শুরু করলে তারা জালের দড়িটাকে বাইকারের বুক পর্যন্ত উঠিয়ে শক্ত করে টানটান করে ধরে। এতে করে মোটরসাইকেল আরোহী বাইক থেকে ছিটকে দুরে পড়ে যায়। তারপর, তারা উক্ত ভিকটিমের নিকট থেকে টাকা পয়সা ছিনতাই করে পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য যে, উক্ত আসামী আলী হোসেনের বিরুদ্ধে ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিভিন্ন সময়ে ভৈরব থানায় ০৬ টি মামলা রয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য র্যাব ঐকান্তিকভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে।
র্যাব-১৪, সিপিসি-২, ভৈরব ক্যাম্পের স্কোয়াড কমান্ডার মোহাম্মদ আক্কাস আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীকে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply