সংবাদ শিরোনাম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্রতিবাদ সভায় ছাত্রলীগের বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ বিজয়নগরে সালিশে প্রকাশ্যে নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল।। দুই ইউপি সদস্য আটক সাবেক রাষ্ট্রপতি হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ এর ৫ম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত কোটা আন্দোলনকারীদের বক্তব্য আদালত বিবেচনায় নেবেন; আইনমন্ত্রী আনিসুল হক চিরকুট লিখে সৌদি আরব প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা শতভাগ নাগরিককে শিক্ষার আওতায় এনে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাউবি বদ্ধপরিকর – বাউবির উপাচার্য বাউবিতে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সংবর্ধনা পাটগ্রামে রাসেলস ভাইপার সাপ সন্দেহে মেরে ফেলা হলো দুইটি সাপকে সাইলোর মতো খাদ্যভান্ডার ছিলো বলে আমরা করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো সমস্যা গুলো অতিক্রম করতে পেরেছি; খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে শেরপুরে বাড়ছে নদ-নদীর পানি

বিজয়নগরে বিল নিয়ে বিরোধ- সর্বস্ব হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে ৩২টি পরিবার; ইউএনও কে জানালেও ব্যবস্থা নেয়নি

বিজয়নগরে বিল নিয়ে বিরোধ- সর্বস্ব হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে ৩২টি পরিবার; ইউএনও কে জানালেও ব্যবস্থা নেয়নি

স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি

বিল নিয়ে দু’পক্ষের বিরোধে আগুনে পুুড়ে সর্বস্ব হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে ও অন্যের বাড়িতে বসবাস করছে ৩২টি পরিবার। ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের কামালপুর ও হাজীপুর গ্রামে।
সংঘর্ষের ঘটনায় আগুনে পুড়ে বসতঘরের সবকিছু ছাই হওয়ার পর অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নেয়া জোসনা নামে এক নারী জানান, আগুনে ছাই হয়েছে তার দুটি ঘরসহ সমস্ত মালামাল। স্কুল পড়ুয়া দু’মেয়ের বই-স্কুলে যাওয়ার পোষাকসহ সবই পুড়ে ছাই। অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। শুধু জোসনা নয়, এমন অবস্থা আরো ৩১টি পরিবারের। টিনের ঘর, আধা পাকা দালান ঘর সবই শেষ আগুনে। পুড়ে ছাই বাড়ির কাঠগাছ, ফলজ গাছও। পেট্রোলের আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয় এসব ঘরবাড়ি। এ ঘটনায় থানায় মামলাও নেয়নি পুলিশ। 
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত জেসমিন আক্তার নামে আরেক নারী বলেন, বিলের ঝগড়ায় সব শেষ। আমরা অসহায় অবস্থায় আছি। জোসনার স্বামী আরিজ মিয়া মারা যাওয়ার পর টানাপোড়েনে জীবন-জীবিকা করছিলেন। দুটি ঘরই পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। আগুনে ঘর পুড়েছে ৩১টি পরিবারের শতাধিক ঘর। এ ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদনেও সাড়া দেয়নি। এখন তারা খোলা আকাশের নিচেই রয়েছেন।
এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত ৩২ টি পরিবারের দুর্দশার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগারকে লিখিতভাবে জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভুক্তভোগীরা। 
গত ৩ নভেম্বর বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের বিল হুগলী নিয়ে বিরোধে জড়ায় দু’পক্ষ। ওই সময় পেট্রোল ঢেলে বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেন বিলের ইজারাদাররা। এর আগেরদিন ২ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ওপরও হামলা হয়।এসময় ১১০ রাউন্ড রাবার বুলেট, ৫ রাউন্ড টিয়ার সেল ও ১ রাউন্ড পিস্তলের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন পুলিশ। 

সরজমিন ঘুরে জানা গেছে, বিল নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। সীমানা নির্ধারন না করে ইজারা দেয় প্রশাসন। গত বছর বড় উঠান মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি ২৪ একর ৮৮ পয়েন্ট আয়তনে ১ লাখ ৫১ হাজার টাকায় ইজারা পান। অভিযোগ রয়েছে, ইজারা নিয়ে সমিতি ৭ লাখ টাকায় বিক্রি করে বুল্লা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ফুল মিয়া ও বর্তমান ইউপি সদস্য কাউসার আহম্মেদের কাছে। তারা কৃষকদের ব্যক্তিগত জমি থেকে মাছ আহরণ করলে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়।

এ ব্যাপারে হাজীপুর গ্রামের বদরুল আলম জানান, হুগলী বিলে বুল্লার কাউসার মেম্বারের নেতৃত্বে বাধ দিয়ে মাছ ধরা হয়। গত দেড়মাস আগে আদালত থেকে তাদেরকে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। রায়কে অমান্য করে বাধ দেয়। ২ নভেম্বর অস্ত্র নিয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা এবং পুলিশের ওপর হামলা করে। পরদিন মাছ ধরার সময় হাজীপুর, হাতুরাপাড়, পাইকপাড়া বাগদিয়া ও বুল্লার মানুষের সাথে ঝগড়া হয়।

এ ব্যাপারে হরষপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম জানান, বুল্লা, বড় উঠান, বড়ছাল, নয়াহাটি ও মাইঝপাড়ার লোকজন নিরীহ মানুষের ঘরবাড়ি পেট্রোল দিয়ে আগুন দেয়। নেতৃত্ব ছিলেন বুল্লার ফুল ইসলাম, বর্তমান ইউপি সদস্য কাউসার আহমেদ, আশু মিয়া, হীরা লাল, নারায়ন দাশ ও আজিজুল। কামালপুর গ্রামের ফুল মিয়ার ৫টি ঘরই পুড়ে গেছে আগুনে। ফুল মিয়া জানান, আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল ইসলাম বলেন, তারা যে অভিযোগ দিয়েছিলো তাতে অতিরিক্ত লেখা হয়েছে। সেজন্যে মামলা হয়নি। একটু প্রেসারে থাকুক, সব ঠিক হয়ে যাবে। প্রেসারে থাকলে ভবিষৎতের জন্যে ভালো হবে। 
এ বিষয়ে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান বলেন, শিক্ষার্থীদের বই পুড়ে গেছে এবং সামনে তাদের পরীক্ষার কথা শুনে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) পাঠানো হয়। তারা কয়েকজন শিক্ষার্থীদের বই দিয়ে এসেছে। বিল নিয়ে দুটি মামলা চলমান রয়েছে। স্থানীয়রা বসে বিসয়টি সমাধান করবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।

ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর। 

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com