সংবাদ শিরোনাম
সরাইলে এক ভূমিহীনের ঘরবাড়ী ভেঙে নিয়ে তার লীজের জমি দখল !

সরাইলে এক ভূমিহীনের ঘরবাড়ী ভেঙে নিয়ে তার লীজের জমি দখল !

শফিকুর রহমান//সরাইল প্রতিনিধি  

“ স্যার, এইখানে আমার ঘর ছিল। ঘরের পাশে আমার ডােবাতে মাছ ছিল। মুখলেছ বাহিনী আমার ঘরবাড়ি ভেঙ্গে নিয়ে গেছে এবং আমার ডােবার মাছ ধরে ২লক্ষ টাকা বিক্রি করে দিয়েছে। এখন আবার ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তুলে আমার জায়গা ভরাট করে ফেলতেছে। তারা আমার জায়গায় আমাকে আসতে দেয় না এবং আমারে হুমকি দিছে মাইরা লাইবে। স্যার, আপনারা কইন, আমি কই গেলে বিচার পামু -” এসব কথা বলে হাউমাউ করে কেঁদে উঠে ভুমিহীন আসাদুল্লাহ। ভূমিহীন আসাদুল্লাহর এই করুণ আর্তনাদ গণমাধ্যম কর্মীদের কপাল সিক্ত করে। 

আসাদুল্লাহর বাড়ী সরাইল উপজেলার অরুয়াইল গ্রামে। তার বাবার নাম আলী আকবর। সে একজন প্রকৃত ভূমিহীন। ২০০৮ সালে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা নাহিদা হাবিবা শােলাকান্দি মোজার ৬৪৯ ও ৮৩৪ নং দাগ থেকে আসাদুল্লাহকে ৫২ শতক জায়গা ৯৯ বছরের জন্য বন্দােবস্ত বুঝিয়ে দেয়। ভূমিহীন আসাদুল্লাহ  তার লীজকৃত জমিতে বসতঘর নির্মাণ করে এবং তার ডােবাতে মাছ চাষ করে ভােগ দখল করে আসছিল। এর মধ্যে এলাকার প্রভাবশালী মােখলেছ মিয়ার নেতৃত্বে ভূমিদস্যু একটি অসাধুু চক্র মিলে নিরীহ আসাদুল্লাহর ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়ে যায় এবং সেলু মেশিন সেচে তার ডােবায় থাকা দুই লক্ষাধিক টাকার মাছ মেরে বাজারে প্রকাশ্যে ডাকের মাধ্যমে বিক্রি করে দেয়। লুটের রাজ্যে চরম অসহায় ভূমিহীন আসাদুল্লাহ তার ভূমি ও মাছের ক্ষতিপূরণ ফিরে পেতে ন্যায় বিচারের আশায় মানুষের দ্বারে দ্বারে বার বার  ঘুরেও  কােন প্রতিকার পাচ্ছে না। লুটেরা দলের সদস্য তাজুল ইসলামের ছেলে আক্কাছ মিয়া, হাজী মাঞ্জু মিয়ার ছেলে আ: জব্বার, সমসু মিয়ার ছেলে এনামুল হক, এন্তাজ মিয়ার ছেলে আলী মিয়া ভূমিহীন আসাদুল্লাহকে ভিটেছাড়া করেই ক্ষান্ত হয়নি উপরন্ত  ড্রেজার মেশিন দিয়ে অরুয়াইল ব্রীজের নিচ থেকে বালু উত্তােলন করে অসহায় আসাদুল্লাহর পুরাে জায়গাটি দখল নিতে ভরাট করে ফলেছে। অথচ জায়গাটিতে হাইকার্টের স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। হাইকাের্টের নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে মুখেলছ বাহিনী এলাকায় একের পর এক রামরাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, উপজেলা প্রশাসনও ভূমিহীন আসাদুল্লাহর সাথে যেন বৈরী আচরণ করে যাচ্ছে।  জেলা প্রশাসক  যেখানে আসাদুল্লাহকে ভূমিহীন হিসেবে দুটি দাগে মােট ৫২ শতাংশ জায়গা লীজ দিয়েছে, সেখানে সরাইল উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত সহকারী কমিশনার (ভূমি) এএসএম মােসা  মহামান্য হাইকাের্টের  নিষেধাজ্ঞার পরও গত ১৫/১১/১৮ ইং তারিখ কােন কারন উল্লেখ ছাড়াই  এক পরিপত্রের মাধ্যমে শুধু মাত্র ৮৩৪ দাগের নাল ভূমিটি বাতিল করে দিয়েছে যা রহস্যজনক। এ বিষয়ে সরাইল থানার ওসির কাছে লিখিত অভিযােগ করেও কােন প্রতিকার পায়নি অসহায় আসাদুল্লাহ।
তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এএস এম মােসা দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ভূমিহীন আসাদুল্লাহ এখন তার লীজকৃত জায়গা জমি, বসত ঘর, মাছের ক্ষতিপূরণ সহ পুরাে ভূমি ফিরে পেতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জাের দাবী জানিয়েছে। 


ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com