কক্সবাজার প্রতিনিধি//সময়নিউজবিডি
কক্সবাজার শহরের আলির জাহালের নূরুল ইসলাম ভুট্টোর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও বিগত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত তথা নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ ওসমান গণি। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার পিতা মরহুম মফিজুর রহমান। তিনি ১৯৭২ সালে পাঞ্জায়েব মেম্বার ছিলেন। আমি এই ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান। আল্লাহর অশেষ রহমতে সততা ও নিষ্ঠার সাথে আমি জীবন নির্বাহ করছি। অসৎ পথ ও লোভ আমাকে কখনও গ্রাস করতে পারেনি। এলাকার মানুষের সুখ-দুঃখের চির সারথী হয়ে রয়েছি দীর্ঘদিন ধরে। গরীব, অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষের পাশে আমি আজীবন থাকবো। কিন্তু দুঃখের বিষয় শহরের আলির জাহাল এলাকার বহু অপকর্মের হোতা, চাঁদাবাজ ও মামলাবাজ নুরুল আলম মাষ্টারের ছেলে নূরুল ইসলাম ভুট্টু আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে। সে প্রতিনিয়ত আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, অপপ্রচারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে হয়রানী করে আসছে।তিনি আরো বলেন, মূলত: নূরুল ইসলাম ভুট্টো তার মালিকানাধীন শহরের অবস্থিত একটি জমি ২০১৩ সালে ৫০ লাখ টাকা দরদামে আমাকে বিক্রি করে। ওই সময় ২৩ জুন ওই জমির দলিল রেজিস্ট্রি হয়। জমি রেজিস্ট্রির পর সাব-রেজিস্ট্রিারের সামনে তাকে নগদ ৫০ লাখ টাকা প্রদান করি। টাকা বুঝে নেয়ার পরই সে দলিলে স্বাক্ষর করে। যার দলিল নং-২৬৪৫- ২৩/০৬/২০১৩ইং। জমি রেজিস্ট্রি সম্পাদনের পর আমি ওই জমিতে শান্তিপূর্ণভাবে দখলে রয়েছি। জমি বিক্রির পর নূরুল ইসলাম ভুট্টোর লোভ বেড়ে যায়। সে প্রতিনিয়ত আমার কাছ থেকে চাঁদা হিসেবে আরও টাকা দাবি করে। কিন্তু আমি তার চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দেয়ায় তার পিতা (মরহুম) কে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে বিগত ১৮/০২/২০১৪ইং চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- সি,আর-১৮৫/১৪। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পরবর্তী বছর গত ২৫/০৩/১৫ইং মামলাটি মিথ্যা ও সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক অবহিত করে তৎকালীন সদর থানার ওসি (তদন্ত) মাঈনুদ্দিন বিজ্ঞ আদালতে রিপোর্ট পেশ করেন। তারপরও তারা ক্লান্ত হয়নি। আবারও আমাকে বিক্রি করা জমির খতিয়ান বাতিলের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আদালতে মিচ পিটিশন মামলা দায়ের করেন। যার মিচ পিটিশন মামলা নং- ৭৬৯/২০১৪ইং। এতে তারা কোন সুবিধা করতে না পেরে জমির দলিল বাতিলের জন্য বিজ্ঞ যুগ্ন জেলা জজ আদালতে নূরুল ইসলাম ভুট্টোর পিতা নুরুল আলম মাষ্টার (মরহুম) আরেকটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলা নং-২৭৩/২০১৩ইং। এসব মামলা আমি আমার বৈধ কাগজপত্র নিয়ে দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করে সফল হই।ওসমান গণি বলেন, জমি বিক্রি পুরো টাকা দিয়েও আমি ওই নূরুল ইসলাম ভুট্টোর হয়রানীর শিকার হচ্ছি। জমি কেনার প্রায় ৬ বছর পর আমার কাছ থেকে ২৮ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে চলতি মাসের ২২ ডিসেম্বর নূরুল ইসলাম ভুট্টু সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে আমার বিরুদ্ধে সাংবাদিক ভাইদের মিথ্যাচার করা হয়। যা অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। এছাড়া নূরুল ইসলাম ভুট্টো গত ২৪ নভেম্বর আমার বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগটি মাননীয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আবিদুল ইসলাম আবিদকে তদন্তের দায়িত্বভার দেয়া হয়। এতেও তদন্তে আমি নিদোর্ষ প্রমাণিত হই। বৈঠকে নূরুল ইসলাম ভুট্টো আমার কাছ থেকে টাকা পাওয়ার কোন বৈধ কাগজপত্র বা প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এসময় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সদর মডেল থানার মাননীয় ওসি (তদন্ত) মোঃ খাইরুজ্জামান, কক্সবাজার পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাহাব উদ্দিন সিকদার, স্থানীয় প্রবাসী হাজি আবছারসহ কয়েকজন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। সর্বশেষ তার অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৫ ডিসেম্বর আবারও আমাকে তলব করেন মাননীয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আবিদুল ইসলাম আবিদ মহোদয়। এসময় তিনি উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে কাগজপত্র যাচাই বাছাই করেন। এই বৈঠকেও নূরুল ইসলাম ভুট্টো কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এ জন্য মাননীয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আবিদুল ইসলাম আবিদকে তাকে বিষাধগার করেন।তিনি আরো বলেন, আমি বাংলাদেশের আইনের উর্ধ্বে নই। যদি আমি অপরাধী হয়ে থাকি, তাহলে যে কোন শাস্তি আমি মাথা পেতে নেব। কিন্তু আমার অক্লান্ত পরিশ্রমের টাকা দিয়ে জমি কেনার পরও আজ আমি শান্তিতে বসবাস করতে পারছি না। চাঁদাবাজ নূরুল ইসলাম ভুট্টো আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আমি দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের একজন সফল মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। আগামীতে আমি দক্ষিণ মিঠাছড়িতে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করব। তাছাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কাউন্সিলে আমি সভাপতি পদে লড়াই করব। নির্বাচনী মাঠ ও আমাকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ থেকে বিতাড়িত করার উদ্দেশ্যে আমার সামাজিক সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য একটি মহল তাকে দিয়ে এই মিথ্যা নাটক রচনা করেছে। যা জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। যদি তাদের পিতা-পুত্রের দৌরাত্ম্য বন্ধ না হয় আমি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হব। এ জন্য আমি প্রশাসনসহ আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply