সংবাদ শিরোনাম
উখিয়ায় স্ত্রী ও ২ সন্তানের স্বীকৃতি পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে ব্যর্থ-নির্যাতিত কিশোরী আয়েশা উখিয়া

উখিয়ায় স্ত্রী ও ২ সন্তানের স্বীকৃতি পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে ব্যর্থ-নির্যাতিত কিশোরী আয়েশা উখিয়া

নুরুল বশর মানিক   , কক্সবাজার প্রতিনিধি:  

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় প্রায় ৫ বছর পূর্বে জোর পূর্বক অপহরণ করে বিয়ের আশ্বাসে পালাক্রমে ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া দুই শিশু সন্তানসহ নিজের স্ত্রী ও সন্তানদ্বয়ের স্বীকৃতি পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে ব্যর্থ ও আরও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন অপহৃত, ধর্ষিত, বঞ্চিত ও নিরীহ কিশোরী আয়েশা বেগম (১৭)। লোমহর্ষক ও জঘন্যতম এই ঘটনায় জড়িত অপরাধীরা উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের রূমখাঁ বড়বিল গ্রামের মৃত সুলতান আহমদের পূত্র নূরুল হক (৩০) এবং তার সহযোগী ৩ ভাই: খাইরুল হক (২৮), রশিদ আহমদ (৩৪) ও নজির আহমদ (৪০) দিব্যি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অন্য দিকে নির্মম ও নিষ্টুর এই ঘটনার ভিকটিম নিরীহ কিশোরী আয়েশা বেগম একই উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের পশ্চিম পাইন্যাশিয়া (দক্ষিণ সোনাইছড়ি) গ্রামের দিন মজুর ফকির আহমদের কন্যা। ভিকটিম কিশোরী আয়েশার মাতা ভেলুয়া খাতুন জানান, তিনি নির্যাতনকারী অপরাধীদের বিচারের দাবীতে ও নির্যাতিত কন্যার স্ত্রী-সন্তানের সন্তানের স্বীকৃতি পেতে বহুবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য লোকজন ও প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও তা কেউ গ্রাহ্য করেনি বরং উল্টো ঘটনায় জড়িতরা তার কন্যা ও তাকে মারধর সহ নানা ভাবে নির্যাতন করেছে। অপহৃত, ধষিত ও নির্যাতিত কিশোরী আয়েশা বেগম জানান, অপরাধীরা ২০১৫ সালে তাকে মাত্র ১২ বছর বয়সে জোর পূর্বক অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে জোর-জবরদস্তিতে ও বিয়ের আশ্বাসে অন্যান্য ৩ ভাইয়ের সহযোগীতায় নূরুল হক ধর্ষণ সহ পালাক্রমে এক এক স্থানে স্বামী-স্ত্রীর ন্যায় দৈহিক মেলামেশা করতে থাকার ফলে সাইমা (বর্তমান বয়স ৪ বছর) ও হৃদয় (বর্তমান বয়স ১০ মাস) নামের ২ সন্তানের জন্ম হলেও তাকে প্রচলিত নিয়মে বিয়ে করেনি, দেয়নি কোন কাবিননামা এমনকি ইসলামী শরীয়ত মতে কোন মৌলবী দিয়ে বিয়ের আকদ্ পর্যন্ত পড়ায়নি! দেয়নি স্ত্রী বা সন্তানের স্বীকৃতি। এসবের দাবী-দাওয়া করলেই তার উপর নেমে আসে নির্মম নির্যাতন। তাদের বিরুদ্ধে একাধিকবার তিনি উখিয়া থানায় অভিযোগ করলেও থানার পুলিশ তা গ্রাহ্য না করে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়, আর আদালতে মামলা করার মত ন্যূনতম খরচ ও পরিস্থিতি তাদের না থাকায় আদালত যাওয়া হয়নি। তবে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবুল মনসুর জানান, এ ধরণের কোন ঘটনার অথবা অভিযোগের বিষয়ে তার জানা নাই। অভিযোগ পেলে অবশ্যই জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ সহ নির্যাতিত ভিকটিমকে প্রয়োজনীয় আইনী সহযোগীতা দেওয়া হবে। বাংলাদেশ সূপ্রীমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও আইনী সেবা সংস্থা ‘ফাইন্ড মাই এডভোকেট’র প্রধান এড. এইচ. এম. তানভির,  এড. দুলাল মল্লিক, কক্সবাজারের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যূনালের রাষ্ট্রপক্ষের পিপি এড. তাপস রক্ষিত, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সেক্রেটারী এড. সিরাজুল ইসলাম, এড. জাবেদুল আনোয়ার রুবেল, এড. বাপ্পী শর্মা, এড. মহি উদ্দিন খান সহ অনেক আইনজ্ঞের সাথে আলাপে আইনী মতামতে তাঁরা জানান, নির্যাতিত কিশোরী আয়েশা বেগমের উপর ঘটিত ঘটনাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপহরণ পূর্বক ধর্ষণের ও একই অপরাধ বারবার সংগঠনের পর্যায়ে বিধায় জড়িতরা দৃষ্টান্ত মূলক কঠোর শাস্তি পাবে আর নির্যাতিত ভিকটিমকে যথাযথ আইনী সহায়তা দেওয়া উচিত। ঘটনায় জড়িতদের বক্তব্য নিতে তাদের সরাসরি ও ফোনালাপে যোগাযোগের আপ্রাণ চেষ্টায়ও সম্ভব হয় নাই। নির্যাতিত কিশোরী ভিকটিম আয়েশা বেগম ও তার অতি দরিদ্র পরিবারের লোকজন ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবী সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন॥

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com