আজকের এ জাতীয় দুর্যোগে যেভাবে মানুষের বিপদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিপন্ন মানবতার পাশে দাঁড়িয়েছে দেশের চিকিৎসক সমাজ, জীবন পণ করে মানুষের জন্য লড়ে যাচ্ছেন, তাদের প্রতি বিনম্র কৃতজ্ঞতা। তারাই আজকের যুদ্ধাবস্থার হিরো। এসব চিকিৎসা বীরদের প্রতি আপনার মানসিক প্রেরণা, একটু সহযোগিতা ও শুভ কামনা হয়তো তাদের প্রাণে আশার আলো সঞ্চার করবে। ক্লিনিকের দায়িত্ব ছাড়াও মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে স্বাস্থ্যসেবার এ মহান দায়িত্বটুকু পালন করছেন দেশের চিকিৎসকরা। বিশ্বব্যাপী মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। দিন দিন মৃ্ত্যুর মিছিল দীর্ঘতর হচ্ছে ও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।মানুষের বিপন্ন ও অসহায় জীবন আজ যেন কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি। এই রোগী দের পাশে দেবদূতের মতো যারা জীবন জলাঞ্জলি দিয়ে লড়ছেন, তাদের প্রতি শুভ কামনা ও শ্রদ্ধা।
করোনাকে রুখতে বিশ্বব্যাপী যে শ্রেণিটি সবার সামনে থেকে যুদ্ধ করছে,তারা হচ্ছেন একদল লড়াকু চিকিৎসক। সে শ্রেণির মানুষগুলো সবার সামনে থেকে বন্দুকবিহীন নিরস্ত্র ঝাঁপিয়ে পড়ছে মৃত্যুর মুখে, যুদ্ধ করছে লাখো মুখে হাসি ফোটানোর জন্য, সে শ্রেণির মানুষগুলোই আজ সবচেয়ে বেশি বিপদে। দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করছে যারা, যাদের , খাওয়া, ঘুম সবই ভেস্তে গেল এ নতুন নীরব যুদ্ধে, সেই যোদ্ধাদের জীবনই আজ হুমকির মুখে। এ যুদ্ধ কঠিন যুদ্ধ। পৃথিবীতে বিরল। এ যুদ্ধ পালাবার নয়। এ যুদ্ধে জয়ী হতেই হবে। এ জয়ের পেছনে প্রধানতম কারিগর হলেন দেশের চিকিৎসক সমাজ। বাংলাদেশের ডাক্তাররা অনেক সাহসী। তাদের কাজ করতে দিন, তাদেরকে নিজের জীবনের নিরাপত্তা প্রদানের লক্ষ্যে শুধু সরকার নয়, সরকারের পাশাপাশি সামাজিক সংস্থাগুলো এবং দেশের সব বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত হবে এ দুর্যোগে এগিয়ে এসে সবার আগে দেশের চিকিৎসকদের বাঁচিয়ে রাখার কাজে হাত বাড়ানো। সবার জীবন বাঁচানোর কাজে যারা নিজের জীবনের শঙ্কাকে সাথে নিয়েই, ভয়কে জয় করে, নিজে ও নিজ পরিবারের জীবনের ঝুঁকিকে উপেক্ষা করে যারা লড়ে যাচ্ছেন এক অকুতোভয় জীবন সংগ্রামে, যারা দিন-রাত সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষার্থে বেগার খেটে যাচ্ছে, তাদের সেফটি ইক্যুইপমেন্ট, পিপিই ইত্যাদি সরবরাহের জন্য এগিয়ে আসুন।
আমি আমার ক্ষুদ্র চিন্তা থেকে বলছি- আমরা আমাদের বিবেককে জাগ্রত করি।এগিয়ে আসুন সবাই চিকিৎসকদের বাঁচাতে। দেশের সব চিকিৎসকরা বাঁচলে দেশবাসী বাঁচবে। তাদেরকে সুস্থভাবে বেঁচে থেকে জনগণের চিকিৎসা করার সুযোগ দিন। তাদের নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ ফান্ডিং করুন। মেলে দিন আপনার উদারহস্ত, আপনার বা আপনাদের সহযোগিতার হাতকে সম্প্রসারিত করুন। আপনারাই জাতির ভরসা। বিপদের দিনে পাশে থাকুন। সুযোগ থাকলে অসহায় দিনমজুরের সংসারের এ সংকটকালীন দায়িত্বটুকু নিন, যাদের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। যার পক্ষে যতটুকু সম্ভব। দেশের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে এ বিপদ মোকাবেলা করা সম্ভব।
জীবনযুদ্ধে হার না মানা আমাদের চিকিৎসকরা। একের পর এক নিজেরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তবু হার মানেননি। তবুও পথ ছাড়েনি। যদিও জাতির এ চরম ক্রান্তিলগ্নে এটাই তাদের দায়িত্ব। কিন্তু এ দায়িত্ব পালনের সাথে যেহেতু নিজের জীবনের ঝুঁকি জড়িত, রয়েছে মৃত্যুর ভয়, সেখানে তাদের এ দায়িত্বটুকু আজ যুদ্ধ জয়ের সামিল। দেশে যেন নেমে এসেছে আরেক যুদ্ধ। অস্ত্র ছাড়াই যুদ্ধ। কোনো যুদ্ধাস্ত্র ছাড়াই বাংলার বীর চিকিৎসকরা জীবন-মরণ যুদ্ধ করছে।
লেখকঃ হালিমা খানম, কবি ও সংবাদকর্মী।
Leave a Reply