মো.শরীফ মাহমুদ : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র কোর্ট এলাকায় বিশাল আঁকারের বহুুতল ভবন নির্মাণকরে শপিংমল ও বাণিজ্যিক মার্কেট গড়েতুলা হলেও মার্কেটে আসা ক্রেতা সাধারণের গাড়ি পার্কিং এর নামে বরাদ্বকৃত জায়গায় দোকান কোটা নির্মাণ করে অর্থ বাণিজ্য করছেন মার্কেট মালিকরা। এতে করে কোর্ট রোডের এই সড়কটির কারণে প্রতিনিয়তই যানযটের সৃষ্টি হয়। পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায়, কোর্ট রোডের এই সড়কে যানবাহনের কারণে পায়ে হেটেও হিমশিম খেতে হয় পথচারীদের । আর রিক্সা ও প্রাইভেটকার নিয়ে প্রবেশ করলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় পথচারীদের।
এদিকে, সিটি সেন্টার শপিংমলের চার মালিকের সুযোগ-সুবিধা একাই ভোগ করে শহরের কোর্ট রোড পুরাতন কাঁচারী এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পুরাতন (কার্যালয়) জজ কোর্টের সরকারি জায়গায় গাড়ি পার্কিং এর নামে লিজ নিয়ে দোকান কোটা নির্মাণ করে মোটা অংকের সিকিউরিটি (জামানত) গ্রহণ করাসহ মাসিক ভাড়া হাতিয়ে নিচ্ছেন জেলা শহরের বিশিষ্ট প্রভাবশালী ঠিকাদার হারুন উর-রশিদ হিরো নামের এই ভিআইপি পারসন।
শহরের সিটি সেন্টার মার্কেট । শুরু থেকে এই মার্কেটের মালিক চারজন। তারা হলেন, সাবেক উপমন্ত্রী মরহুম এডভোকেট হুমায়ুন কবীর, কুয়েত প্রবাসী লুৎফর রহমান মুকাই আলী, হারুন উর- রশিদ হিরো ও তার বড়ভাই ভাই আবুল ফায়েজ। চার মালিকের মালিকানার এই সিটি সেন্টার মার্কেটের অধিকাংশ দোকান বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে।
জানা যায়, পুরাতন কাঁচারীর পাড় এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের (টিনসেট) ঘরের পুরাতন কার্যালয়ের পাশে কুমিল্লা সিলেট সড়কের কিছুটা অংশও হিরো মিয়ার মিনি মার্কেটের দখলে। সড়কের জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করায় প্রতিনিয়তই যানযট হওয়াসহ বিভিন্ন যানবাহনকে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়।
শুধু তাই নয়, হারুন উর-রশিদ হিরো মিয়া পৌরসভার ড্রেইনও দখলে নিয়েছেন এ মিনি মার্কেটের ভেতর। এনিয়ে একাধিকবার পৌরসভা কর্তৃক ড্রেইন উদ্ধারের অভিযানও চালানো হয়। তবে প্রভাব খাটিয়ে পৌরসভাকে ড্রেইন নির্মাণে বাধা দেন তিনি।
অন্যদিকে হিরো মিয়ার ভাইপো দাবী করা সুজন মিয়া এই সড়কের বিভিন্নস্থান থেকে হকারের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত আদায় করছেন চাঁদা।
অপরদিকে কোর্ট রোডে অবস্থিত বহুতল ভবন ফরিদ উদ্দিন আনোয়ার (এফ.এ টাওয়ার) নির্মাণ করার শুরু থেকে ক্রেতাদের পার্কিং এর জায়গা দেখানো হলেও (আন্ডারগ্রাইন্ডে) করা পার্কি এর জায়গায় এখন দোকান কোটা নির্মাণ করে জমজমাট ভাবে অর্থ বাণিজ্য করছেন মার্কেট কতৃপক্ষ। এই মার্কেটে দোকান কোটা ক্রয়করা ক্রেতাদের সাথে একধরণের প্রতারণাও করেছেন মার্কেটের মালিক কর্তৃপক্ষ।
এফ.এ টাওয়ার মার্কেটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকান মালিক জানান, আমাদের মার্কেটে গাড়ি নিয়ে কোন ক্রেতা আসতে পারে না। একটাই কারণ এখানে পার্কিং এর জায়গা নেই। তারা বলেন, মার্কেটের মালিকপক্ষরা আগে বলেছেন, এই মার্কেটের (আন্ডারগ্রাইন্ডে) গাড়ি পার্কিং এর পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে। কিন্তু এখন দোকান কিনে দেখছি, আমার দোকানে যে কাস্টমার আসবে, তাদের গাড়ি রাখারই কোন জায়গা নেই। পার্কিং এর জায়গায়ও পরবর্তীতে গড়ে উঠেছেন দোকান কোটা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কোর্টরোড এলাকার যানযট নিরসনে অবৈধ এইসব দোকান কোটা উচ্ছেদ পূর্বক পার্কিং এর জায়গা উম্মুক্ত করার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকের জরুরী হস্তক্ষেপ দাবী করেন জেলা শহরের সচেতন মহলের ব্যক্তিবর্গরা।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply