স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
সৌদি আরবে চাকুরী করতে গিয়ে গৃহ কর্তার নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের কিশোরী উম্মে কুলসুম (১৪)। ওই ঘটনায় রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক মুকবুল হোসাইন ও তার সহযোগী তারকে আটক করছে র্যাব- ৩। বৃহস্পতিবার দুপুর অনুমান ১.৩০ ঘটিকার সময় রাজধানীর ফকিরাপুলে অবস্থিত মেসার্স এম.এইচ. ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে ওই রিক্রুটিং এজেন্সির কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে মালিক মুকবুলকে আটক করে র্যাব। এ সময় আরো ১০জন ভিকটিম ও দালারের সন্ধান পায় র্যাব। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার গোর্কণ ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে উম্মে কুলসুমকে স্থানীয় দালাল আব্দুর রাজ্জাকের মাধ্যমে ত্রিশ হাজার টাকার বিনিময়ে আজ থেকে ১৭মাস আগের ঢাকার ফকিরাপুলে অবস্থিত এম.এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে সৌদি আরবে পাঠানো হয়। সেখানে গৃহ কর্তার নির্যাতনের কারণে পরিবার কুলসুমকে দেশে ফিরেয়ে আনার চেষ্টা করলে ও রিক্রটিং এজেন্সি ও দালালের পক্ষ থেকে কোন রূপ সারা পায়নি কুলসুমের পরিবার। জানা গেছে চাকুরীর আশ্বাসে কুলসুমকে সৌদি আরবে পাঠানো হলে, সেখানে নিয়ে এক বাড়িতে গৃহ কমর্ীর কাজ দেওয়া হয় কুলসুমকে। পরে সৌদি আরবের গৃহ কর্তা ও তার ছেলে মিলে কুলসুমের দুই হাটু, কোমর, ও পা ভেঙ্গে দেয়। এর কিছু দিন পর একটি চোখ ও নষ্ট করে তারা রাস্তায় ফেলে দেয় কুলসুমকে। সেখান থেকে অন্য লোকের মাধ্যমে কুলসুমকে নেওয়া হয় হাসপাতালে। কুলসুম মোবাইল ফোনে পরিবারকে আগেই নির্যাতনের কথা জানিয়েছিল। জানুয়ারী মাসে হাসপাতালে ভর্তি থাকাবস্থায় এক নার্সের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সর্বশেষ তার পরিবারের লোকজনের কাছে ফোন করে কুলসুম। প্রায় সাড়ে তিন মিনিটের এক ভিডিও কলে দেখা যায় হাসপাতাল থেকে পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলছে কুলসুম। গৃহ কর্তা থাকে নির্যাতন করে পা ভেঙ্গে ও চোখ নষ্ট করে দিয়েছে বলে কুলসুম জানায় তার পরিবারের লোকজনকে। সে আর হাটা চলাফেরা করতে পারছে না। ওই ভিডিও কলে সে তার পরিবারের লোকজনকে কোমর থেকে পায়ের নিচের অংশের আঘাতের চিহ্ন ও দেখায়। ৯ই আগষ্ট সৌদি আরবের রিয়াজের একটি হাসপাতালে মারা যায় কিশোরী কুলসুম (১৪)। ১১ সেপ্টেম্বর কুলসুমের মরদেহ আনা হয় দেশে। ওই ঘটনায় কুলসুমের বাবা শহিদুল ইসলামের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে রিক্রুটিং এজেন্সিতে অভিযান চালায় র্যাব। র্যাব- ৩ এর এডিশনাল এস.পি বিনা রানী দাস মোবাইল ফোনে এ প্রতিনিধিকে মেসার্স এম.এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক মুকবুলকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে, তিনি বলেন ইতিমধ্যে র্যাব আর ও ১০ জন ভিকটিম ও একাদিক দালালের সন্ধান পেয়েছেন। তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন ঢাকা যাত্রাবাড়ি এলাকার এক মেয়েকে ও তারা ফুসলিয়ে সৌদি আরব পাঠায়। ওই মেয়ে সেখানে গিয়ে নির্যাতনের স্বীকার হয়ে পুলিশকে জানালে গৃহ কর্তা তাকে গাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দিলে তার পা ভেঙ্গে যায়। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত কুলসুমের মা বাবা র্যাব কার্যালয়ে উপস্থিত ছিল। তাই তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply