সংবাদ শিরোনাম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “সেতুর” নামকরন নিয়ে বির্তকের ঝড়।। পুরানো নাম বহাল রাখার দাবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “সেতুর” নামকরন নিয়ে বির্তকের ঝড়।। পুরানো নাম বহাল রাখার দাবি

স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি 
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার প্রধান সড়ক টি.এ.রোডের মধ্যবর্কতী টাউন খালের উপর অবস্থিত প্রায় অর্ধশত বছরের পুরানো ব্রিজের নাম হঠাৎ করে পরিবর্তন করায় শহরবাসীর মধ্যে বির্তক শুরু হয়েছে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও উঠেছে সমালোচনার ঝড়।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর রোজ বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর পরিষদের এক সভায় ওই ব্রিজটির নতুন নামকরন করা হয়েছে “থানা ব্রীজ”। এর আগে গত মঙ্গলবার পৌরসভার পক্ষ থেকে ওই সেতুর দুই দিকে “থানা ব্রীজ” নামে সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয়া হয়। 
পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, আগে সেতুটি ‘ফকিরাপুল’ নামে পরিচিত থাকায় শুনতে খারাপ লাগে বলে এর নাম পরিবর্তন করে থানা ব্রীজ করা হয়েছে। 
এদিকে এই ব্রিজে বসে যাতে কেউ ভিক্ষাবৃত্তি না করতে পারে সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ওই ব্রিজে বসে ভিক্ষা করতেন এমন ২৪জনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার করে টাকা ও পৌরসভার পক্ষ থেকে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।      এদিকে ব্রিজের নতুন নামকরন নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। রাজনৈতিক কিংবা অন্য সব বিষয়কে ছাপিয়ে এই ব্রিজ নিয়ে গত দু’দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে সমালোচনার ঝড়।

অনেকে এটাকে আগের প্রচলিত নাম “ফকিরাপুল” কিংবা ‘ঘোড়াপট্টির পুল’ নামে বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন। আবার অনেকে জেলার সমাদৃত কিংবা খ্যাতিমান মানুষের নামেও নামকরণের দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রবীন সাংবাদিক, মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ও সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন  বলেন, ‘সেতুটি যেখানে আছে আগে এর কাছেই যাতায়তের জন্য ঘোড়ার গাড়ি এসে দাঁড়াতো। ঘোড়ার গাড়ি দাঁড়াতো বলে এলাকাটির নাম ঘোড়াপট্টি হিসেবে পরিচিতি পায়। পরে সেখানে সেতু নির্মিত হলে সেই সেতুটিকে ঘোড়াপট্টির পুল হিসেবেই সবাই বলতো। পরবর্তীতে এই সেতুতে ভিক্ষুকরা বসতো বলে ফকিরাপুল নাম হয়ে যায়। আমি মনে করি নাম পরিবর্তনের জন্য সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করা যেতো। সেতুটির নাম ঘোড়াপট্টির পুল দিলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে মিল থাকতো। 
এ ব্যাপারে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সভাপতি জহিরুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘এটা অনেক আগে থেকেই ফকিরাপুল হিসেবে লোকমুখে পরিচিত। তবে ফকিরদেরকে কেন্দ্র করে এর নাম হওয়ায় সেটা পরিবর্তন করে “থানা ব্রীজ” নামকরন করার বিষয়টি মানতে পারি না। কারণ ফকিররাও তো মানুষ।
এদিকে নতুন নামকরণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও সমালোচনা চলছে।
জেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি জৈষ্ঠ সাংবাদিক পীযূষ কান্তি আচার্য্য তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘ঘোড়াপট্টি ব্রীজেরই নামকরণের দাবি জানাচ্ছি, থানা ব্রীজ নয়। কারণ ঘোড়াপট্টির সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইতিহাস জড়িত।’ 
কবি মোঃ মনির হোসেন তাঁর ফেসবুকে এক কমেন্টসে লিখেছেন, ‘সেতুটির নামকরণ শহরের কোনো সমাদৃত-খ্যাতিমান মানুষের নামেও হতে পারে।’ নারী নেত্রী নন্দিতা গুহ লিখেছেন, ‘ঘোড়াপট্টির পুল নামটির সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য জড়িত, হিরন্ময় ইতিহাস আছে। এটা পরিবর্তন করা ঠিক হবে না।       
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সচিব মোঃ শামসুদ্দিন বলেন, ‘ফকিরাপুল নামটা শুনতে খারাপ দেখায় বলে বুধবার পৌর পরিষদের সভায় নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সবাই একমত পোষণ করেছেন। 
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর। 

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com