স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মেধাবী ও অসুস্থ শিক্ষার্থী তিশা আক্তার-(১৩) এর চিকিৎসা সহযোগিতায় পাশে দাঁড়ালেন জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন।
সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খাঁন তাঁর কার্যালয়ে চিকিৎসার জন্য তিশা আক্তারের মা আরজু আক্তারের হাতে ২০ হাজার টাকা এবং একটি হুইল চেয়ার তুলে দেন।
তিশা আক্তার কসবা উপজেলার শিকারপুর তালপট্টি গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী।
হাবিবুর রহমান তার পরিবার-পরিজন নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মৌড়াইল কলেজপাড়ায় বসবাস করেন। হাবিবুর রহমানের চার মেয়ে দুই ছেলের মধ্যে তিশা পঞ্চম। হাবিবুর রহমান তার ভাইদের সাথে কসবা উপজেলায় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন।
মেধাবী শিক্ষার্থী তিশার মেরুদন্ডের হাড় ক্ষয় হয়ে হাড়ের ভেতরে টিউমার ধরা পড়ে। এরপর থেকেই সে শয্যাশায়ী জীবন কাটাচ্ছে। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ১০/১২ লাখ টাকা। কিন্তু টাকার অভাবে তিশার চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে।
তিশার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিশা খুব শান্ত স্বভাবের মেয়ে। পড়াশোনায় খুব মেধাবী। ২০১৯ সালের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৫৭৫। এই পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিও পায় সে।
তিশার মা আরজু আক্তার জানান, গত অক্টোবর মাসে তিশার ব্যথা শুরু হয়। গত ১০ অক্টোবর পরিবারের লোকজন তাকে জেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে তার অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় ১৩ অক্টোবর তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
পরে পরিবারের লোকজন তিশাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে শহীদ সোহরোওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকের পরামর্শে গত ২৭ অক্টোবর ঢাকার পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তিশার এমআরই পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষায় তিশার মেরুদন্ডের ছয় শতাংশ হাড় ক্ষয় হয়ে গেছে এবং সেখানে একটি টিউমার ধরা পড়ে।
পরে শহীদ সোহরোওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তিশাকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স এন্ড হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিশার মেরুদন্ডে হাড় প্রতিস্থাপন ও টিউমার অপারেশন করানো সম্ভব। কিন্তু এর জন্য তিন মাস সময় লাগবে এবং চিকিৎসায় প্রায় ১০/১২ লাখ টাকা খরচ হবে। এখন টাকার অভাবে তিশার চিকিৎসা বন্ধ হয়ে আছে।
আরজু আক্তার বলেন, এখন পর্যন্ত মেয়ের চিকিৎসায় লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। সেটিও ঋণ করে যোগাড় করা। সংসারে অভাব অনটন। সন্তানদের পড়াশোনার খরচ। টাকা না থাকায় মেয়ের চিকিৎসাও বন্ধ হয়ে আছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন বলেন, ‘আপাতত চিকিৎসা শুরুর জন্য একটা অর্থ দিয়েছি। সামনে আরো তহবিল গঠন করে তার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব। সবাই এগিয়ে আসলে তার চিকিৎসার খরচ যোগাড় করা সম্ভব।
তিশাকে সহযোগিতার জন্য একটি ব্যাংক হিসাব নম্বর খোলা হয়েছে। ব্যাংক হিসাব নম্বরটি হলো ২১২১৫৭০০০৯৩১৬, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখা।
কেউ চাইলে বিকাশের মাধ্যমে তিশাকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারেন। তিশার মা আরজু আক্তারের ব্যক্তিগত বিকাশ নম্বরটি হলো ০১৭৮০৪২০৯৩৫।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর।
Leave a Reply