সংবাদ শিরোনাম
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর কাছে এমপি’র নালিশ।। আশুগঞ্জে আ’লীগের এমপি’র হাত থেকে মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনার ক্রেস্ট নিলেন জামায়াতের আমীর

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর কাছে এমপি’র নালিশ।। আশুগঞ্জে আ’লীগের এমপি’র হাত থেকে মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনার ক্রেস্ট নিলেন জামায়াতের আমীর

স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি 
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের ৭৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গত শনিবার বিকেলে গণসংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, সংরক্ষিত নারী আসনের (আসন নং-৩১২) সংসদ সদস্য ও সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলী আজাদ।

ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুদ্দিন চৌধুরীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা পেয়েছেন শরীফপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মোঃ তাজুল ইসলাম। তিনি জ্বালাও, পোড়াও মামলায় আসামী হয়ে একাধিকবার জেলও খেটেছেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলী আজাদ এমপির হাত থেকে তাজুল ইসলাম সংবর্ধনার ক্রেস্ট ও ফুলের তোড়া গ্রহন করেছেন। এনিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা।
এ ঘটনায় বিব্রত সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগমও। তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। আজ রোববার বিকেলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। তিনি মন্ত্রীকে বলেছেন এর দায়ভার আয়োজকদেরকে নিতে হবে। আমি জানতাম না অন্যদের সাথে এ ধরণের কাউকে সংবর্ধনা দেয়া হবে। মন্ত্রী মহোদয়কে বলেছি এমন হয়ে থাকলে যেন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকেই তাঁর নাম বাদ দিয়ে দেয়া হয়। নইলে আমাদেরকে নানাভাবে বিব্রত হতে হবে।
এদিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, শরীফপুর ইউনিয়ন কমান্ডের পক্ষে কমান্ডার ফয়েজ আহমেদ ফুল মিয়া ও ডেপুটি কমান্ডার এ.কে.এম সাদির এক প্রতিবাদপত্রে অনুষ্ঠান নিয়ে যারা বিতর্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। তবে জামায়াত নেতার সংবর্ধনা নেয়া বিষয়ে প্রতিবাদ পত্রে কিছু উল্লেখ করা হয় নি। অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য তারা শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান ওই প্রতিবাদপত্রে।          
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শনিবার বিকেলে শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ইউনিয়ন পরিষদ সম্মেলন কক্ষে ওই ইউনিয়নের ৭৪ জন মুক্তিযোদ্ধাকে গণসংবর্ধনা দেয়া হয়। এর মধ্যে প্রয়াত ৪৩ জন ও  জীবিত ৩১ জন রয়েছেন। প্রয়াতদের পক্ষে তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে সংবর্ধনার ক্রেস্ট ও ফুল তুলে দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলী আজাদ। 
শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তরুণ শিল্পপতি মোঃ বিল্লাল ভূইঁয়া। এতে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ফয়েজ আহমদ ফুল মিয়া, এ.কে.এম ছাদির, মোঃ ছানাউল্লাহ, তাজুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান হাফ মিয়া, ইউপি সদস্য মোঃ ইকবাল হোসেন, ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোজ্জামেল হক তপন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক নাছির উদ্দিন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মানিক রায় ভৌমিক, আশুগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সদস্য মোঃ সাজিদুল ইসলাম সাচ্চু প্রমুখ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সংবর্ধিত তাজুল ইসলাম পেশায় হোমিও চিকিৎসক। একই সাথে তিনি শরীফপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর।  গত কয়েক বছর আগে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছেড়ার অভিযোগে হওয়া মামলায় তিনি জেলও খাটেন। এছাড়া নাশকতা করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। যে কারণে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শরীফপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ফয়েজ আহমেদ ফুল মিয়া বলেন, তাজুল ইসলাম জামায়াতপন্থী। তাকে ওই অনুষ্ঠানে দাওয়াত দেয়া হয় নি। তিনি কিভাবে অনুষ্ঠানে এলেন জানি না। তবে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকায় তার নাম রয়েছে। পরক্ষনেই তিনি ফোন করে বলেন, ‘দাওয়াতের ভার ডেপুটি কমান্ডারকে দেয়া হয়। মূলত তার কাছ থেকে দাওয়াত পেয়েই তিনি অনুষ্ঠানে এসেছেন।

এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ সাইফুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ইউনিয়নের যে তালিকা তাতে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাজুল ইসলামের নাম রয়েছে। তিনি উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও যোগ দেন। তবে এখন রাজনীতিতে তিনি সক্রিয় নন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের মাধ্যমে তাকে দাওয়াত দেয়া হয়। এখন আমার বিরুদ্ধে থাকা কিছু লোকজন এ নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এ  ব্যাপারে  সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলী আজাদ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীকে তিনি 
জানিয়েছেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীকে বলেছেন এর দায়ভার আয়োজকদেরকে নিতে হবে। তিনি জানতেন না অন্যদের সাথে এ ধরণের কাউকে সংবর্ধনা দেয়া হবে। তিনি মন্ত্রীকে বলেছেন, এমন হয়ে থাকলে যেন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকেই তঁার নাম বাদ দিয়ে দেয়া হয়। নইলে তাদেরকে নানাভাবে বিব্রত হতে হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের দায়িত্বে থাকা আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরবিন্দ বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর। 

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com