সংবাদ শিরোনাম
সাহিত্য একাডেমির বৈশাখী উৎসবের ৫ম দিনে নির্বাচিত গ্রন্থের প্রকাশনা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত সাহিত্য একাডেমির বৈশাখী উৎসবের চতুর্থ দিনে মুজিবনগর দিবস পালন বিজয়নগর থানা পুলিশের অভিযানে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ এক মাদক কারবারি আটক সাহিত্য একাডেমি আয়োজিত ৭ দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসবের দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত বর্ণাঢ্য আয়োজনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন সরাইলে খাস জমি দখলকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত-১ ও আহত-২২ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রীর সাথে জেলা পুলিশের ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় পবিত্র ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে জেলা পুলিশের প্রীতিভোজ অনুষ্ঠিত যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পবিত্র ঈদ উল ফিতর পালিত সরাইল উপজেলা প্রেসক্লাবের ঈদ সামগ্রী বিতরণ

ওসি মোজাম্মেলের হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা ও নির্যাতনের বিচার দাবী করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংবাদ সম্মেলন

ওসি মোজাম্মেলের হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা ও নির্যাতনের বিচার দাবী করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার//সময়নিউজবিডি  

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি অসহায় পরিবারের প্রতি চরম নির্যাতন অভিযোগে মোজাম্মেল হোসেন নামে পুলিশের এক ওসির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।
আজ শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের হল রুমে এ সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য নাঈমা আক্তার। 
সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের দারমা গ্রামের আলহাজ্ব মোঃ নাছির উদ্দিনের মেয়ে নাঈমে আক্তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার বাবা আলহাজ্ব মোঃ নাছির উদ্দিন, মাতা-হাফেজা কুহিনুর বেগম, নানা- জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফজলুর রহমান ও আমার শ্বশুর সমাজসেবক হিরণ মিয়া সহ সকলেই ওসি মোজাম্মেল হোসেনের রোষানলে পতিত। 
নাঈমা বলেন, আমার বাবা আলহাজ্ব মোঃ নাছির উদ্দিন, দীর্ঘ দুইযুগ কর্মসংস্থানের জন্য সৌদী আরবে ছিলেন। তিনি সেখানে চাকুরী ও ব্যবসা করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে এবং নিজ পৈত্রিক নিবাসে ২টি বাড়ী নির্মাণ করেন এবং একটি কাপড় ব্যবসায় অর্থ বিনিয়োগ করেন। আমার মা-খালারা তিন বোনের মধ্যে আমার মা সবার বড়। আমার মা সংসারের পাশাপাশি একটি কুঠির শিল্পী ও গৃহিণী। 

নাঈমা আক্তার বলেন, আমার নানা বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান অতি সহজ সরল ও অতিথি পরায়ণ মানুষ। তিনি মানুষদের আপ্যায়ন করতে খুব পছন্দ করেন। আর এই অতিথি পরায়ণতার কারণেই আমাদের মাঝে নেমে আসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। আমার নানার সূত্র ধরে মানুষরূপী অমানুষ ওসি মোজাম্মেল হোসেন আমাদের পরিবারের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের জেরধরেই মোজাম্মেল হোসেন আমার পিতা নাছির উদ্দিনের সাথেও পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়। পরে মোজাম্মেল হোসেন আমার মেঝ খালাকে বিবাহ করতে প্রস্তাব দেন। এতে আমার নানা সহজেই দারোগা মোজাম্মেল হোসেনের সাথে বিবাহ দিতে রাজি হলেও আমার মেঝখালা আপত্তি করেন। তারপর নারীলোভী মোজাম্মেল হোসেন বিবাহ করছি/করবো করে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন।
মোজাম্মেল হোসেনের সাথে আমার পিতার বন্ধুত্বের ঘনিষ্ঠতার সুযোগে আমার পিতার সহায় সম্পত্তি, অস্তিত্ব আয়ত্ব করে নেয় সে। মোজাম্মেল হোসেন অবৈধভাবে উপার্জিত কালো টাকা সাদা করতে আমার পিতার শাড়ী ফ্যাশন নামে দোকানে অর্থ বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয়। মূলত অবৈধ ঘুষের টাকা বৈধ করতেই আমার পিতাকে বেছে নেই। আমার সহজ সরল পিতা মোজাম্মেল হোসেনের কুঠকৌশল বুঝতে পারেননি। সে জন্য তিনি ওসি মোজাম্মেলের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সু্বাধে এতে রাজি হন।
সংবাদ সম্মেলনে নাঈমা আক্তার আরো বলেন, ওসি মোজাম্মেল হোসেনের সাথে আমার বাবার ঘনিষ্ঠতার কারণে বন্ধুর চাহিদা অনুযায়ী প্রথমে বিলকিস নামে একটি কাজের মেয়ে ওসির চট্টগ্রামের বাসার জন্য পাঠান। কিছুদিন পর মেয়েটি হারিয়ে যায়। পরে জাহানারা নামে আরেকটি মেয়েকে একই বাসায় পাঠান। কিছুদিন পর সেই মেয়েটি চট্টগ্রাম থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফেরৎ আসে। জাহানারা নামের মেয়েটির লোভে নারীলোভী ওসি মোজাম্মেল হোসেন জাহানারার বাড়ীতে আসেন এবং গভীর রাত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। এরপর থেকে প্রায়ই জাহানারার বাড়িতে গোপনে আসা যাওয়া করেন মোজাম্মেল। এক পর্যায়ে বিষয়টি আমার পিতা জানতে পারেন। এ বিষয়টি জানার পর আমার পিতা বড় ভগ্নিপতি হিসেবে আমার মেঝখালার সাথে ওসি মোজাম্মেল হোসেনের বিবাহ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ও কাজের মেয়ের সাথে ফস্টি নস্টিতে বাঁধা দেন। এতে মোজাম্মেল হোসেন আমার বাবার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২০১৫ সনের ১৯ অক্টোবর তারিখে ওসি মোজাম্মেল হোসেন আমার বাবাকে ক্রসফায়ার দিচ্ছেন বলে মুঠোফোনে আমাদেরকে জানান। এ কথা শুনে আমার নানা বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান ও আমার শ্বশুর ও আমার মা কান্নাকাটি করতে করতে মোজাম্মেলের শ্বশুরবাড়িতে যান। সেখানে তারা যাওয়ার আগেই ওসি মোজাম্মেল হোসেন আমার বাবার কাছ থেকে একাধিক ব্যাংকের চেক পাতা ও ১৮ টি ননজুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। পরে আমার মা, নানা ও শ্বশুর সেখানে যাওয়ার পরই তাদেরকেও খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন মোজাম্মেল। পরে সে আমার বাবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বাড়িটি ও আমার শ্বশুরের বয়লার মিলটি লিখে দিতে চাপ প্রয়োগ করেন। এর কারন জানতে চাইলে মোজাম্মেল হোসেন আমার মা, বাবা, নানা ও শ্বশুরকে জানান, কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি থাকাকালে মোজাম্মেল হোসেন রাইস মিলের ব্যবসার জন্য ৭০ লাখ টাকা ব্যাংক চেকের মাধ্যমে দিয়েছেন। যদিও একটি রাইস মিল করতে ২০/২৫ লাখ টাকা হলেই করা যায়। নাঈমা জানান, প্রকৃত সত্য হলো ওসি মোজাম্মেল ঘুষের অবৈধ টাকা বন্ধু হিসেবে আমার বাবার ব্যাংক একাউন্টের দেখিয়ে সাথে সাথেই গাড়ি পাঠিয়ে নিয়ে যেতেন। অনেক সময় এমনও হয়েছে ওসি মোজাম্মেল হোসেনের অবৈধ টাকা লেনদেনের জন্য ব্যাংকের ম্যানেজারকে অফিস সময়ের বাইরেও ব্যাংক খুলে রাখতে বাধ্য করা হয়েছে। এভাবেই ওসি মোজাম্মেল হোসেন বন্ধু বান্ধব আত্মীয়স্বজন সহ পরিবারের বিভিন্ন সদস্যদের নামে বেনামে অর্থের পাহাড় গড়েছেন।
নাঈমা আক্তার জানান, ওসি মোজাম্মেল হোসেন অবৈধভাবে উপার্জিত টাকা দিয়ে রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকা পিংক সিটিতে একাধিক বাড়ি, ঢাকা-চট্রগ্রামে নামে বেনামে বাড়ি-গাড়ি ও ফ্ল্যাট রয়েছে। 
কে এই ওসি মোজাম্মেল হোসেন? মোঃ মোজাম্মেল হোসেন (বিপি-৬৭৮৯০৫৮২৯৭৭৬), পিতা- মৃত শহিদ আহম্মেদ সরকার, সাং ১৪৩/বি, রোড-১৭/১, সিডিএ, আগ্রাবাদ, থানা- ডবলমুরিং, চট্টগ্রাম। পুলিশের চাকুরীর সুবাদে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর থানা, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানাসহ বিভিণ্ন থানায় কর্মরত থাকাকালে নানাবিধ অপকর্ম করেছেন। ওসি মোজাম্মেল হোসেনের অনৈতিক কর্মকান্ডে তাকে বিভাগীয় মামলার সম্মূখীন হতে অনেকবার নিরস্থ পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে নিরস্থ পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে মৌলভীবাজার সিআইডিতে কর্মরত আছেন। ওসি মোজাম্মেল হোসেন-এর কর্মকান্ড জানতে সিআর মামলা নং-১২৫/২০১৩ (ক্রসফায়ারে নিহত ইব্র্রাহিম বনাম ১নং আসামী ওসি মোজাম্মেল মামলা) মামলাটি দেখুন।

লিখিত বক্তব্যে নাঈমা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, ক্ষমতা মানুষকে কলুষিত করে, বেশী ক্ষমতা মানুষকে বেশী কলুষিত করে। নারী এবং অর্থের মোহে ওসি আমার পিতাসহ পরিবারের সকলের বিরুদ্ধে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে ১৮টি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে সেই স্ট্যাম্পের মাধ্যমে আমাদের জেলা শহরের বাড়িটি বন্ধক রেখে টাকা নিয়েছেন এবং আমার বাবা মা, নানা ও শ্বশুর সহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীনভাবে প্রতারণার বিষয় উল্লেখ করে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা করেছেন।

মামলা গুলো হলো- চট্টগ্রামের ডাবলমুরিং থানার (মামলা নং-৩০, তারিখ : ২৫/১০/২০১৫), ঢাকার পল্টন থানার (মামলা নং-০৭, তারিখ : ০২/১২/২০১৫), কুমিল্লার কোতয়ালী থানা (মামলা নং-৯৫, তারিখ : ২২/১১/২০১৫) এবং কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানার (মামলা নং-২৪, তারিখ : ২২/১১/২০১৫) করেন। মামলাগুলো হয় ওসি মোজাম্মেল হোসেনর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়। এক্ষেত্রে তাঁর আপন ভাই, ভগ্নিপতি, অপকর্মের দোসর বন্ধুদের দ্বারা এবং সব মামলার নেপথ্যে ওসি মোজাম্মেল এবং সব মামলার ধরণও একই রকম এবং স্ট্যাম্পসমূহ ব্যবহার হয়েছে-একই সিরিয়ালের)। সব মামলাগুলো সাজানো মিথ্যা, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যে প্রনোদিত। অপরদিকে, ক্রসফায়ারের ভয়ে আমার পিতাকে একটি মামলায়ও হাজির হতে দেয়নি। তার অত্যাচারে আমার পিতা-মাতা ফেরারী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে নাঈমা বলেন, ওসি মোজাম্মেল হোসেনের এসব মিথ্যা ভিত্তিহীন ও হয়রানীমূলক মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে সমাজের দর্পণ সাংবাদিক ভাইদের লিখনির মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজিপি মহোদয়ের সদয় সুদৃষ্টি কামনা করছি। পাশাপাশি ওসি মোজাম্মেল হোসেনের মিথ্যা মামলা ও ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার হুমকি সহ তার দ্বারা আমাদের সুখী ও শান্তিপূর্ণ জীবনযাপনে অশান্তি সৃষ্টি করার দায়ে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি এবং আমাদের পরিবারকে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সকল গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য ঘটনা উদঘাটনের দাবী জানাচ্ছি।
ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন অব রিলিজিন হারমনি ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার পক্ষে মোজাহিদুল ইসলাম, নাঈমা আক্তারের স্বামী, তার ছোট বোন ছাঈমা আক্তার ও ছাঈমার স্বামী। 
ইনাম/সময়নিউজবিডি টুয়েন্টিফোর। 

সংবাদটি পছন্দ হলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Somoynewsbd24.Com